বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

শীতের দাপট

শীত রাজা দলছে বন প্রচন্ড দাপটে।
হিমেল হাওয়া যায় যে চুমি পাতার ললাটে।
মায়াবী আবীরে সাজলো গাছ রঙ্গিন মুকুটে।
বিষন্নতায় আছড়ে পড়ে দৃষ্টির কপাটে ।
স্ফটিকের বাসর সাজে মানসপটে।

ভালোবেসে যাবো অনন্তকাল………….

ভালোবেসে যাবো অনন্তকাল…………..

শত ব্যস্ততায় কাজে ফাঁকে যদি মনে পড়ে আমার কথা
নিরবে ঝড়ে পড়ে চোখের জল,
যদি প্রচন্ড কষ্টে ব্যথা জাগে বুকের ভিতর
তবে চোখ বন্ধ করে একবার তোমার বুকের বাঁ পাশে স্পর্শ করো,
আমাকে পাবে সেই হৃদস্পন্দনের মাঝে
যেখানে আমার আজন্ম বসবাস,
তোমাকে লিখতে গেলেই থেমে যায় আমার কলম
বিষন্নতায় ডুবে যাই আমি
তোমার স্মৃতি ভেসে আসে কল্পলোকে,
কখনো তোমায় দেখি কোন সাহিত্য আড্ডায় কবিতার স্মৃতি চারন,
কখনো বা দেখি তোমার নির্ঘুম রাত্রি জেগে কবিতা লিখন,
আমি কান পেতে শুনি তোমার কবিতা আবৃত্তি,
আমি থমকে যাই যখন চোখ বন্ধ করে শুনি শুকনো পাতায় তোমার একাকী পথে হেটে চলা,
আমি স্থির চোখে তাকিয়ে দেখি তোমায়
ঐ দুচোখে তাকিয়ে তোমার হৃদয় পড়েছিলাম সেদিন প্রথম দেখাতেই,
বাহিরটা যেমন পড়েছিলাম তেমন ভেতরটাও
তোমাকে আমি অন্য সবার থেকে বেশি চিনি হয়তো তোমাকে তোমার চেয়েও বেশি,
তোমার সুখ দু:খ তোমার প্রেম বিরহ তোমার চাওয়া পাওয়া সবটুকু,
সাতপাকে ঘুরে সিঁদুর সঙ্গী মেনে নিয়েছি সেই কবেই তোমাকে,
কল্পনায় তোমার হাতে সিঁদুর পড়িয়ে নিয়েছি,
সব সীমা অতিক্রম করে ভালোবেসেছি,
ভালোবেসে যাবো অনন্তকাল…………………

— ফারজানা শারমিন
২৩ – ১২ – ২০১৯ ইং

মুরুব্বী’র প্রতি মুরুব্বীয়ানা


ছবির বয়স্ক যুবকটিকে অনেকেই চেনেন। যার পোষাকি নাম আজাদ কাশ্মীর জামান। কি, চিনতে কষ্ট হচ্ছে? যারা দীর্ঘদিন থেকে অনলাইনে বা বিভিন্ন বাংলা ব্লগে লেখালেখি করছেন তারা অবশ্য তাঁকে অন্য নামে চেনেন। যে নামটি বললে মুহূর্তেই চিনে যাবেন। মুরুব্বী। হ্যাঁ, এ নামেই তিনি সুদীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন বাংলা ব্লগে লিখছেন।

যতদূর মনে পড়ে, তাঁর সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল একটা বাকবিতন্ডার মাধ্যমে। তখন আমরা অনেকেই প্রথম আলো ব্লগে টুকটাক লেখালেখি করি।
তারপর দিনে দিনে কিভাবে কখন যেন হৃদয়ের বন্ধনটা দৃঢ় হয়। যা আজও বিদ্যমান।

প্রবাহমান নদীতে যেমন বিভিন্ন সময়ে পলিমাটি, জীবাশ্ম, মৃত গাছপালার দ্বারা নদীর গভীরতা কমে যেয়ে স্বাভাবিক পানি প্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।
তেমনি নানাবিধ কারণে মানুষের শরীরে রক্তের ধমনিতে অবাঞ্চিত চর্বি সৃষ্টিতে বাধাপ্রাপ্ত হয় স্বাভাবিক রক্ত প্রবাহ।
এসব প্রসঙ্গের অবতারণা করছি এ কারণে যে, কিছুদিন আগে এমন পরিস্থিতির কারণে মৃদু আক্রমণের (Mild Attack) স্বীকার হয়েছেন “মুরুব্বী” অর্থাৎ আজাদ কাশ্মীর জামান। বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরিক্ষার পর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা মোটামুটিভাবে নিশ্চিত হয়েছেন যে তার ধমনিতে এক বা একাধিক ব্লক হয়েছে। উন্নততর চিকিৎসার জন্য বর্তমানে তিনি ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন। আজ সকালে সফলভাবে তাঁর এনজিওগ্রাম সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনটি ব্লক পাওয়া গেছে, যার মধ্যে একটি ৯২%, একটি ৯০% এবং অপরটি ৬০%-৭০%। চিকিৎসরা তাৎক্ষণিকভাবে ২টি রিং (Cardiac Stent) লাগিয়েছেন। বর্তমানে তিনি আশংকামুক্ত। আশা করা যায় আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে পূর্ণ সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরতে পারবেন।

তিনি সকলের দোয়া কামনা করেছেন।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত উপদেশমূলক আয়াতসমূহ [২৬-৪৭, সুরা শুয়ারা থেকে সুরা মুহাম্মাদ পর্যন্ত]

বিসমিলল্লাহির র’হমা-নির র’হী—ম

মাপ পূর্ণ কর এবং যারা পরিমাপে কম দেয়, তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। সোজা দাঁড়ি-পাল্লায় ওজন কর। মানুষকে তাদের বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে ফিরো না। [সুরা শু’য়ারা ২৬: ১৮১-১৮৩]
(সুরা শু’য়ারায় মূসা আ: ও ফেরাউনের ঘটনা আছে। এছাড়া ইব্রাহিম আ:, নুহ আ:, লুত আ: ও সালেহ আ: এর কথাও আছে)

মুমিনদের জন্যে পথ নির্দেশ ও সুসংবাদ। যারা নামায কায়েম করে, যাকাত প্রদান করেএবং পরকালে নিশ্চিত বিশ্বাস করে। [সুরা নাম’ল ২৭:৩
(সুরা নামলে সুলায়মান আ: ও রানি বিলকিসের ঘটনা আছে।)

সুরা কাসাস ২৮(মূসা আ: এর ঘটনা আছে)
সুরা আনকাবুত(বেশ কিছু নবীদের ঘটনা এখানে বর্ণনা করা হয়েছে)[নূহ আ: ৯৫০বছর অবস্থান করেছিলেন]

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদেরমন্দ কাজ গুলো মিটিয়ে দেব এবং তাদেরকে কর্মের উৎকৃষ্টতর প্রতিদান দেব। [সুরা আনকাবুত ২৯:৭]
আমি মানুষকে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি। যদিতারা তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার জোর প্রচেষ্টা চালায়, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের আনুগত্য করো না। [সুরা আনকাবুত ২৯:৮]

আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। [সুরা আনকাবুত২৯:৪৫

________ ________ _______ ________

সবাই তাঁর(আল্লাহর) অভিমুখী হও এবং ভয় কর, নামায কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।[সুরা রূম ৩০:৩১]
আল্লাহ যার জন্যে ইচ্ছা রিযিক বর্ধিত করেন এবং হ্রাস করেন। নিশ্চয় এতে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। [সুরা রূম ৩০:৩৭]

আত্নীয়-স্ব জনকে তাদের প্রাপ্য দিন এবং মিসকীন ও মুসাফিরদেরও। এটা তাদের জন্যে উত্তম, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে।তারাই সফলকাম। [সুরা রূম ৩০:৩৮
মানুষের ধন-সম্পদে তোমাদের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, এই আশায়তোমরা সুদে যা কিছু দাও, আল্লাহর কাছে তা বৃদ্ধি পায় না। পক্ষান্তরে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পবিত্র অন্তরে যারা দিয়ে থাকে, অতএব, তারাই দ্বিগুণ লাভ করে। [সুরা রূম ৩০:৩৯

________ ________ _______ ________

হেদায়েত ও রহমত সৎকর্মপরায়ণদের জন্য। যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আখেরাত সম্পর্কে দৃঢ়বিশ্বাস রাখে। [সুরা লুকমান ৩১:৩-৪
আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তারমাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে। [সুরা লুকমান ৩১:১৪

পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথেসদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো। [সুরা লুকমান ৩১:১৫]

হে বৎস, নামায কায়েম কর, সৎকাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ কর এবং বিপদাপদে সবর কর। নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ। [সুরা লুকমান ৩১:১৭
অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। [সুরা লুকমান ৩১:১৮
পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন কর এবং কন্ঠস্বর নীচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর। [সুরা লুকমান ৩১:১৯

________ ________ _______ ________

আমি ইচ্ছা করলে প্রত্যেককে সঠিক দিক নির্দেশ দিতাম; কিন্তু আমার এ উক্তি অবধারিত সত্য যে, আমি জিন ও মানব সকলকে দিয়ে অবশ্যই জাহান্নাম পূর্ণ করব।[সুরা সাজদা ৩২:১৩
কেবল তারাই আমার আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে, যারা আয়াতসমূহ দ্বারা উপদেশপ্রাপ্ত হয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়েএবং অহংকারমুক্ত হয়ে তাদের পালনকর্তার প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করে। [সুরা সাজদা ৩২:১৫
তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। [সুরা সাজদা ৩২:১৬
________ ________ _______ ________

আল্লাহ কোন মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেননি। তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা যিহার কর, তাদেরকে তোমাদের জননী করেননি এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায়কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন। [সুরাআহযাব ৩৩:৪
তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত। যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান, তবে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই ও বন্ধুরূপে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সুরা আহযাব ৩৩:৫]

তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে। [সুরা আহযাব ৩৩:৩৩

নবী-পত্নীগণের জন্যে তাঁদের পিতা পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, সহধর্মিনী নারী এবং অধিকার ভুক্ত দাসদাসীগণের সামনে যাওয়ার ব্যাপারে গোনাহ নেই। নবী-পত্নীগণ , তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয় প্রত্যক্ষ করেন। [সুরা আহযাব ৩৩:৫৫
যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। [সুরা আহযাব৩৩:৫৮

হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।[সুরা আহযাব ৩৩:৫৯

________ ________ _______ ________

বলুন, আমার পালনকর্তা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং সীমিত পরিমাণে দেন। তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, তিনি তার বিনিময় দেন। তিনি উত্তম রিযিক দাতা। [সুরা সা’বা ৩৪:৩৯]

যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামায কায়েম করে, এবং আমি যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা কর, যাতে কখনও লোকসান হবে না। [সুরা ফাতির ৩৫:২৯]

সুরা সাফফাত ৩৭, সুরা সা’দ ৩৮ (এ সুরায় নবীদের ও জান্নাত জাহান্নামের বর্ণনা আছে)

যে ব্যক্তি রাত্রিকালে সেজদার মাধ্যমে অথবা দাঁড়িয়ে এবাদত করে, পরকালের আশংকা রাখে এবং তার পালনকর্তার রহমত প্রত্যাশা করে, সে কি তার সমান, যে এরূপ করে না; বলুন, যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে? চিন্তা-ভাবনা কেবল তারাই করে, যারা বুদ্ধিমান। [সুরা যুমার ৩৯:৯]
আর যারা শিরক থেকে বেঁচে থাকত, আল্লাহ তাদেরকে সাফল্যের সাথে মুক্তি দেবেন, তাদেরকে অনিষ্ট স্পর্শ করবে না এবং তারা চিন্তিতও হবে না। [সুরা যুমার ৩৯:৬১

যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার? [সুরা হা-মীম ৪১:৩৩]
সমান নয় ভাল ও মন্দ। জওয়াবে তাই বলুন যা উৎকৃষ্ট। তখন দেখবেন আপনার সাথে যে ব্যক্তির শুত্রুতা রয়েছে, সে যেন অন্তরঙ্গ বন্ধু। [সুরা হা-মীম ৪১:৩৪]
এ চরিত্র তারাই লাভ করে, যারা সবর করে এবং এ চরিত্রের অধিকারী তারাই হয়, যারা অত্যন্ত ভাগ্যবান। [সুরা হা-মীম ৪১:৩৫]

________ ________ _______ ________

যারা বড় গোনাহ ও অশ্লীল কার্য থেকে বেঁচে থাকে এবং ক্রোধাম্বিত হয়েও ক্ষমা করে, যারা তাদের পালনকর্তার আদেশ মান্য করে, নামায কায়েম করে; পারস্পরিক পরামর্শক্রমে কাজ করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে, যে ক্ষমা করে ও আপোষ করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে; নিশ্চয় তিনি অত্যাচারীদেরকে পছন্দ করেন না।
নিশ্চয় যে অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধেও কোন অভিযোগ নেই। অভিযোগ কেবল তাদের বিরুদ্ধে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায় ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। [সুরা শূরা ৪২:৩৭-৪২]

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল। [সুরা শূরা ৪২:৪৯-৫০]

সুরা দুখান ৪৪(জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা আছে)
যে সৎকাজ করছে, সে নিজের কল্যাণার্থেই তা করছে, আর যে অসৎকাজ করছে, তা তার উপরই বর্তাবে। অতঃপর তোমরাতোমাদের পালনকর্তার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। [সুরা যাসিয়া ৪৫:১৫

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি।….. সুরা আহক্বাফ ৪৬:১৫

আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে মুহাম্মদের প্রতি অবতীর্ণ সত্যে বিশ্বাস করে, আল্লাহ তাদের মন্দ কর্মসমূহ মার্জনা করেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করে দেন। [সুরা মুহাম্মাদ৪৭:২]
নিশ্চয় যারা কাফের এবং আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখে, অতঃপর কাফের অবস্থায় মারা যায়, আল্লাহ কখনই তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। [সুরা মুহাম্মাদ ৪৭:৩৪]

________ ________ _______ ________
(৪৮ থেকে পরের সুরাগুলো পরবর্তি পোস্টে আছে)
।।।

বি. দ্র:
পোস্টটা ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখার জন্য সাজানো হয়েছে।
অনুবাদকের ভিন্নতার কারণে কোন কোন আয়াতে শব্দগত কিছু পার্থক্য থাকতে পারে।

বিজয়

মা, মাটি আর মানুষের প্রাণান্ত যখন পাষান বুটের চাপে।
সাহসী ছেলেরা সইতে পারেনি দিয়েছিল প্রাণ সঁপে।
সন্তান হারা মায়ের আহাজারী,
এতিমের কান্না গগন বিদারী।
রক্তের কালিতে লিখে দিলে বিজয়ের নাম, লাল সবুজের ছোপে।

আশার কিরণ……….

আশার কিরণ………….

কথা দিয়েছো জীবন ভর
তোমার ভালোবাসার পরশে জড়িয়ে রাখবে
প্রতিদিনই সিক্ত করছো তোমার ভালোবাসার জোয়াড়ে,
কথা দিয়েছো এক সাথে পাড়ি দিবে জীবনের প্রতিটি পথ হাতে হাত রেখে,
এক সাথে ভিজে যাবো কোন এক রোমাঞ্চিত রিমঝিম বর্ষাতে,
কথা দিয়েছো আমার কন্ঠ না শুনে ঘুমাতে যাবেনা যতোই আসুক ক্লান্তি,
কথা দিয়েছো আমৃত্যু পাশে থাকবে যতোই আসুক বাঁধা,
অমন করে কেন এতো ভালোবাসো আমায় ?
অযুত লক্ষ কোটিবার ভালোবেসেছো অবলীলায়,
কেন হৃদয়ের সমস্ত জায়গাতে লিখেছো আমার নাম ?
কেন রাঙিয়েছো ভালোবাসার রঙে এ সিঁথি ?
কথারা নির্বাক —
তবু কাছাকাছি থাকা অনন্তকাল
অস্থিরতা, অপেক্ষা, নীরবতা, কল্পনা, প্রেম মিলেমিশে এক স্বর্গীয় অনুভূতি,
আমিও সীমাহীন আকাশের মতো তোমাকে ভালোবাসি
সমুদ্রের বিশালতার মতো গভীর ভাবে তোমাকে ভালোবাসি,
প্রণাম করি তোমায় চরণ ছুঁয়ে
আমি যেন হারিয়ে যাই একান্তই তোমার মাঝে,
তোমার আমার প্রেম বিজয় গাঁথা রইল কবিতার ভাঁজে ভাঁজে,
দীর্ঘস্থায়ী কিছুই নয় জানা সত্তেও হৃদয় প্রতি মুহুর্তে গড়ে যায় এক স্বপনের তাজমহল,
সেটা প্রেম হোক কিংবা বাস্তব !
আশার কিরণ যেন কখনো না যায় মুছে………….

— ফারজানা শারমিন
১১ – ১২ – ২০১৯ ইং

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত উপদেশমূলক আয়াতসমূহ [৪৭-১১৪, সুরা ফাতাহ থেকে শেষ পর্যন্ত]

বিসমিলল্লাহির রহমা-নির রহি—ম
তোমরা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তাঁকে সাহায্য ও সম্মান কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা কর। [সুরা ফাতাহ ৪৮:৯
যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত্য করবে তাকে তিনি জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত হয়। পক্ষান্তরে যে, ব্যক্তি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে, তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দিবেন। [সুরা ফাতাহ ৪৮:১৭
মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকু ও সেজদারত দেখবেন। তাদের মুখমন্ডলে রয়েছে সেজদার চিহ্ন ।…. যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের ওয়াদা দিয়েছেন। [সুরা ফাতাহ ৪৮:২৯

________ ________ _______

মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও। [সুরাহুজুরাত ৪৯:৬]
মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। [সুরা হুজুরাত ৪৯:১০]
মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপরনারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম। [সুরা হুজুরাত ৪৯:১১]
মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর।
আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। [সুরা হুজুরাত ৪৯:১২]

________ ________ _______

রাত্রির কিছু অংশে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন এবং নামাযের পশ্চাতেও। [সুরা ক্বাফ ৫০:৪০]

যারা বড় বড় গোনাহ ও অশ্লীলকার্য থেকে বেঁচে থাকে ছোটখাট অপরাধ করলেও নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার ক্ষমা সুদূর বিস্তৃত।তিনি তোমাদের সম্পর্কে ভাল জানেন…[সুরা নাজম ৫৩:৩২]

আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে।অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? [সুরা ক্বামার ৫৪:১৭/২২/৩৩/৪০]
নিশ্চয় অপরাধীরা পথভ্রষ্ট ও বিকারগ্রস্ত। [সুরা ক্বামার ৫৪:৪৭]
(এ সুরায় নুহ আ: , আদ জাতি, সামুদ জাতি ও লুত আ: এর ঘটনা আছে)

তোমরা ন্যায্য ওজন কায়েম কর এবং ওজনে কম দিয়ো না। [সুরা আর-রহমান ৫৫: ৯]

সুরা ওয়াক্বিয়া (এ সুরায় জান্নাত জাহান্নামের বর্ণনা ও আল্লাহর নেয়ামতের কথা বলা আছে)
নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন, যারা পাক-পবিত্র, তারাব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না। [সুরা ওয়াক্বিয়া ৫৬: ৭৫, ৭৯]

________ ________ _______

তিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়দিনে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন।
তিনি তোমাদেরকে যার উত্তরাধিকারী করেছেন,তা থেকে ব্যয় কর।
নিশ্চয় দানশীল ব্যক্তি ও দানশীলা নারী, যারা আল্লাহকে উত্তমরূপে ধার দেয়, তাদেরকে দেয়া হবে বহুগুণ এবং তাদের জন্যে রয়েছে সম্মানজনক পুরস্কার। [সুরা হাদীদ ৫৭: -১৮]

মুমিনগণ, তোমরা যখন কানাকানি কর, তখন পাপাচার, সীমালংঘন ও রসূলের অবাধ্যতার বিষয়ে কানাকানি করো না বরং অনুগ্রহ ও খোদাভীতির ব্যাপারে কানাকানি করো। আল্লাহকে ভয় কর, যাঁরকাছে তোমরা একত্রিত হবে। [সুরা মুজাদালাহ৫৮:৯]
মুমিনগণ, যখন তোমাদেরকে বলা হয়ঃ মজলিসে স্থান প্রশস্তকরে দাও, তখন তোমরা স্থান প্রশস্ত করে দিও। আল্লাহর জন্যে তোমাদের জন্য প্রশস্তকরে দিবেন। যখন বলা হয়ঃ উঠে যাও, তখন উঠে যেয়ো। তোমাদের মধ্যেযারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ তাদের মর্যাদাউচ্চ করে দিবেন। আল্লাহ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা কর। [সুরামুজাদালাহ ৫৮:১১

রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। [সুরা হাশর ৫৯:৭

ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেননা। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন। [সুরা মুমতাহিনা ৬০:৮]
আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম। [সুরা মুমতাহিনা ৬০:৯]

মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। [সুরা জুম’য়া ৬২:৯-১০]

মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।
[সুরা মুনাফিক্বুন ৬৩:৯-১০]

তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষাস্বরূপ। আর আল্লাহর কাছে রয়েছে মহাপুরস্কার। [সুরা তাগাবুন ৬৪:১৫]

________ ________ _______

তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও, তখন তাদেরকেতালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত গণনা করো। তোমরা তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করো। তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিস্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয় যদি না তারা কোন সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত হয়। তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতুবর্তীহওয়ার আশা নেই, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে। গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত।
যদি তারা গর্ভবতী হয়,তবে সন্তান প্রসব পর্যন্ত তাদের ব্যয়ভার বহন করবে। যদি তারা তোমাদের সন্তানদেরকে স্তন্যদান করে, তবে তাদেরকে প্রাপ্য পারিশ্রমিক দেবে এবং এ সম্পর্কে পরস্পর সংযতভাবে পরামর্শ করবে। তোমরা যদি পরস্পর জেদ কর, তবে অন্য নারী স্তন্যদান করবে। [সুরা তালাক ৬৫:১-৬]

মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশকরেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে। [সুরা তাহরীম ৬৬:৬]
মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ তা’আলার কাছে তওবা কর-আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দ কর্মসমূহ মোচন করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। [৬৬:৮]
যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে ফিরে। যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সে সীমালংঘন করে, সে পাপিষ্ঠ, [সুরা কালাম ৬৮:১১-১২]

________ ________ _______

মানুষ তো সৃজিত হয়েছে ভীরুরূপে। যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে হা-হুতাশ করে। আর যখন কল্যাণপ্রাপ্তহয়, তখন কৃপণ হয়ে যায়। তবে তারা স্বতন্ত্র, যারা তাদের নামাযে সার্বক্ষণিক কায়েম থাকে। এবং যারা তাদের যৌন-অঙ্গকে সংযত রাখে এবং যারা তাদের আমানত ও অঙ্গীকার রক্ষা করে َএবং যারা তাদের সাক্ষ্যদানে সরল-নিষ্ঠাবান। তারাই জান্নাতে সম্মানিত হবে। [সুরা মা’য়ারিজ ৭০:১৯-৩৫]

হে বস্তাবৃত, রাত্রিতে দন্ডায়মান হোন কিছু অংশ বাদ দিয়ে; অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কিছু কম অথবা তদপেক্ষা বেশী এবং কোরআন আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্ত ভাবেও স্পষ্টভাবে। [সুরা মুযযাম্মিল ৭৩:১-৪]
কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ ততটুকু আবৃত্তি কর। তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও….[সুরা মুযযাম্মিল ৭৩:২০]
ْআপন পোশাক পবিত্র করুন ْএবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন। ُঅধিক প্রতিদানের আশায় অন্যকে কিছু দিবেন না। [সুরা মুদ্দাসসির ৭৪:৪-৬]
َযারা মাপে কম করে, তাদের জন্যে দুর্ভোগ [সুরা মুতাফফিফীন ৮৩:১]
ِযারা মুমিন পুরুষ ও নারীকে নিপীড়ন করেছে, অতঃপর তওবা করেনি, তাদের জন্যে আছে জাহান্নামের শাস্তি, আর আছে দহন যন্ত্রণা [সুরা বুরূজ ৮৫:১০]

________ ________ _______

ْসুতরাং আপনি এতীমের প্রতি কঠোর হবেন না; ْসওয়ালকারীকে ধমক দেবেন না। [সুরা দুহা৯৩: ৯-১০]
একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম। [সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮:৫]
ٍনিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু তারা নয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের। [সুরা আসর ১০৩: ২-৩]
প্রত্যেক পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর দুর্ভোগ, [সুরা হুমাযা ১০৪:১]
দুর্ভোগ তাদের যারা এতীমকে গলা ধাক্কা দেয়, মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না, َযারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর। যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে [সুরা মাউন ১০৭: ২-৬]
আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন। [সুরা কাউসার ১০৮:২]
________ ________ _______

বি. দ্র:
পোস্টটা ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখার জন্য সাজানো হয়েছে। এর অনুবাদগুলো https://habibur.com/quran/ ওয়েবসাইট থেকে নেয়া। অনুবাদকের ভিন্নতার কারণে কোন কোন আয়াতে শব্দগত কিছু পার্থক্য থাকতে পারে। কোন আয়াত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উক্ত আয়াতের তাফসীর পড়ুন।

আড়াল

কে তুমি কথা কও
আমার বুকের মাঝে
বসে সকাল-সাঁঝে?
কে তুমি আড়ালে থাকো?

আমি সুর সাধি,
আমি গান বাঁধি,
ইশারায় তোমারে
চেয়ে। কুয়াশা নদীতে
পড়ে নাকো ধরা, অলখে
হৃদয়ে যায় সে নেয়ে।

কতোদিন আর রবে সে
আড়ালে, খুঁজে খুঁজে প্রাণ
উন্মুখ। চোখের সায়রে চোখ
পড়ে গেলে, বোঝা হয়ে যাবে
আমাদের লুকানো যতো দুখ।

একটু সতর্ক হই!

পেইজে একসাথে পনেরটি লেখা প্রদর্শিত হয়। এই পনেরটি লেখার মধ্যে একজনের চার পাঁটটি লেখা কম সময়ের মধ্যে পোস্ট করলে অন্যের লেখা দ্রুত আড়ালে চলে যায়। আসুন লেখা পোস্ট করার ক্ষেত্রে একটু সতর্ক হই।

নক্ষত্রের গোধূলি-৪৪

৬১।
যাক, আল্লাহর রহমতে মনি ঠিকভাবে পৌঁছেছে। আলহামদুলিল্লাহ! এসে জানালার পাশে দাঁড়ালো। কাল রাতে যেখানে এতো হৈ চৈ ছিলো এখন সেখানে নীরব। কেও নেই। রাস্তা দিয়ে দুই একটা গাড়ি যাচ্ছে এই শুধু। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখল আকাশ মেঘে ঢাকা। কিন্তু বৃষ্টি নেই রাস্তায় লোকজন নেই এ আবার কেমন দেশ? ভাবছিলো রাশেদ সাহেব। এখন কি করবে কোথাও যাবার জায়গা নেই কিছু চেনা নেই। এই ভাবেই চলবে আস্তে আস্তে চেনা জানা হবে হয়তো। কত দিন এখানে থাকতে হবে বা থাকা যাবে তা সে জানে না। তবে এটা জানে যে এদেশের রানী তার জন্য দরজা খুলে বসে নেই। ভিসার মেয়াদ যতদিন আছে ততদিন নিশ্চিন্ত। তারপর কি হবে? কখনো ধরতে পারলে পাঠিয়ে দিবে এইত? তা যদি দেয়ই দিবে। জোড় করে তো থাকা যাবেনা। ভাগ্যকে মেনে নিতেই হবে। কতক্ষণ এই ভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো খেয়াল নেই। নুরুল ইসলাম উঠে পড়েছে।
-কি ভাই সাব কি দেখেন?
-না কি আর দেখব এই দাঁড়িয়ে থাকা আর কি, এছাড়া কি করব সবাই ঘুমে।
-হ্যাঁ সবাই সাধারণত সারে এগারোটা পর্যন্ত ঘুমবে। এখন এগারোটা বাজে। আজকে তো আপনাদের সারে এগারোটায় নামতে হবে, সব কিছু আটাইয়ে নিতে হয়তো তাই।
-প্রতিদিন সারে এগারোটায়?
-না শুধু শুক্র শনি বারে, অন্যদিন বারোটার দশ মিনিট আগে নামলেই হয়। আজও কিন্তু কালকের মত কিংবা কালকের চাইতে বেশি বিজি হবে।

৬২।
রাশেদ সাহেব একটু ভয় পেলেন কি ভাবে কুলাবেন বুঝতে পারছেন না। দেখা যাক যা হোক একটা কিছু হবে। এতো ভয়ের কি আছে? এবারে বিছানায় এসে একটু কাত হয়ে শুয়ে পরলেন। কিছুক্ষণ এভাবে থেকে সামনের দেয়াল ঘড়িতে এগারোটা পঁচিশ দেখে উঠে প্যান্ট সার্ট বদলে নিচে নেমে একটা এপ্রণ গায়ে কিচেনে ঘুরে দেখে বুঝার চেষ্টা করে দেখলেন কি কি করতে হবে। রাতের আর সেহেরির তরকারির ডেকচি গুলি ধুয়ে রাখলেন। ছেলা পিঁয়াজের ড্রামটা অর্ধেক খালি হয়েছে। ভাবলেন এক বস্তা এনে রাখি। স্টোর থেকে বের হতেই ঠাণ্ডার একটা ধাক্কা লাগলো গায়ে। মনে হলো সমস্ত শরীরে সুই বিঁধিয়ে দিয়েছে কেও। ঝট পট এক বস্তা পিঁয়াজ এনে রাখলেন কিচেনের সাথের স্টোরে। এসে দেখে মারুফ পিঁয়াজ কাটছে। পিঁয়াজ কাটার ধরনটা তার কাছে বেশ ভাল লাগল। একটা চপিং বোর্ডের নিচে ভেজা কাপর বিছান, তার পাশে টেবিলের উপর প্রায় এক বালতি ছেলা পিঁয়াজ। একটা একটা করে নিয়ে কাটছে আর টেবিলের নিচে বোর্ড বরাবর একটা বালতিতে ছেড়ে দিচ্ছে। রাশেদ সাহেবকে দেখে বললো –
-ভাইছাব এক বস্তা পিঁয়াজ আনতে পারবেন?
হ্যাঁ এইতো নিয়ে এলাম ওপাশে রেখেছি।
-আচ্ছা বেশ, এখন এই যে এ ড্রয়ারের ভিতরে ছুরি ওখান থেকে একটা নিয়ে যান ওগুলি ছিলতে থাকেন। আপনে দুইটা পিঁয়াজ নিয়ে আসেন আমি দেখিয়ে দেই কিভাবে ছিলবেন।
দুই তিন টা পিঁয়াজ নিয়ে এসে মারুফের সামনে রাখতেই এপাশে ওপাশে কেটে দেখিয়ে দিল আবার বললো ওই যে বিন ওইটা নিয়ে যান খোসাগুলি এতে ফেলবেন আর ছেলা গুলি রাখার জন্যে একটা বালতি নিয়ে নেন বালতি ভরলে আমাকে দিয়ে যাবেন। এদেশের পিঁয়াজগুলি বেশ বড় বড়।
রাশেদ সাহেব মারুফ কে বললেন-
-এই এতদিনে ওসি ডিসির মানে বুঝলাম।
মারুফ বললো-
-কিরকম।
-শোনেন তাহলে, ছেলে বিদেশে লাখ টাকা কামাচ্ছে শুনে বাবা খুব খুশী। একবার জানতে চাইলেন বাবা তুমি কি কর, কি কাজ তোমার? তখন ছেলে লিখে পাঠাল বাবা আমি এখানে ওসি ডিসির কাজ করি। তা মারুফ ভাই আপনি আমাকে সেই ওসি ডিসি বানালেন? মানে অনিওন কাটার এন্ড ডিশ ক্লিনার!
-ও আচ্ছা আচ্ছা, হ্যাঁ ভাই কি আর করা যাবে দেখেন না আমরাও তাই করি। আপনি কি মনে করেছেন আমি এসেই সেফ বা তন্দুরি সেফ হয়ে গেছি? না আমিও ওই কিচেন পোর্টার থেকে শুরু করেছি এবং শুধু আমি না এদেশে যত সেফ দেখবেন তা সেফই হোক আর মালিকই হোক সবাই এই একই কাজ থেকে শুরু করেছে। নয়তো কুমি ওয়েটার থেকে। কুমি ওয়েটার কি জানেন?
-না।
-শুধু কুমি ওয়েটার বলি কেন সব ওয়েটারকেই টয়লেট পরিষ্কার করতে হয়।
-বলেন কি সুইপার নেই?
-আরে না সুইপার রাখলে বেতন কত হবে জানেন? তার বেতন দিতে গেলে মালিকের লাভ শেষ আর ব্যবসা চলেনা। মালিক নিজেও করে আপনি যদি সামনের কাজ নেন আপনাকেও করতে হবে। কিচেনের কাজে বেতন বেশি তবে কষ্টও বেশি আপনি কুলাতে পারবেন না। আপনি দেশে কি করেছেন তা না বললেও আমরা বুঝতে পারছি। আমরা কাল রাতে আপনাকে নিয়ে আলাপ করেছি। আপনি এ কাজ পারবেন না আপনার জন্য এ কাজ না। দেখি আমিও দেখছি আপনিও দেখেন সামনে একটা কাজ জোগাড় করে নেন। ওখানে আরামে থাকতে পারবেন নয়তো শেষ হয়ে যাবেন। সামনেও পরিশ্রম আছে তবে কিচেনের মত না। ওখানে সুট টাই পরে সেন্ট মেখে কাজ করবেন সাহেবের মত। সাহেব মেম সাহেবদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলবেন।

এমন সময় কবির আর দেলোয়ার কথা বলতে বলতে কিচেনে ঢুকে বললো-
-রাশেদ কার নাম? ভাই সাহেব আপনার নাম রাশেদ নাকি?
-হ্যাঁ আমিই রাশেদ, কেন?
-আপনার ফোন।
-কোথায়?
-ভিতরে যান, না না এভাবে না এপ্রণ খুলে রাখে যান।
-ও আচ্ছা।

এপ্রণটা খুলে দরজার বাইরে হুকে ঝুলিয়ে রেখে ভিতরে গিয়ে ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে ফিরোজের কণ্ঠ-
-কি রাশেদ কি খবর?
-ভাল।
-কাজ শুরু করেছ?
-হ্যাঁ সে তো কাল এখানে আসার সাথে সাথেই শুরু।
-আচ্ছা ঠিক আছে, আমি কাল ফোন করিনি কারণ আমি জানি অবস্থা। যাক কেমন লাগছে কষ্ট হচ্ছে?
-হ্যাঁ তা তো বুঝতেই পার। ডেকচি মাজতে মাজতে হাতের আঙ্গুলে বেশ কেটে কুটে গেছে।
-কেন গ্লোভস নেই? তুমি বল গ্লোভস দিতে, গ্লোভস পরে করবে এসব। এখন কি আর করবে, আপাতত করতে থাক সাবধানে কর কষ্ট তো একটু হবেই। আচ্ছা আমি মাঝে মাঝে ফোন করব। তোমাকে যেদিন অফ দিবে সেদিন ঘরে বসে থাকবে না মন খারাপ হবে। কাপর চোপর ধুবে, বিছানা পত্র ঘর গুছাবে, বাইরে বের হবে, ঘুরবে দেখবে সময়মত এসে খেয়ে যাবে। মন ভাল থাকবে আর দেখবে আসে পাশে লাইবেরি কোথায় যে কোন লোককে বললেই দেখিয়ে দিবে। সেখানে যাবে। তোমার পাসপোর্ট দিয়েই হবে, বলবে আমি ভিজিটর। ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারবে, বাসায় মেইল পাঠাবে। ভাল কথা, বাসায় ফোন করেছ? ভাবীর খবর কি?
-ও পৌঁছেছে অসুবিধা হয়নি।
-তো ঠিক আছে আজকে রাখি তাহলে। ফোন করবে মাঝে মাঝে। দরকার মনে করলে আসে পাশেই দেখবে কয়েন ফোন বক্স আছে সেখান থেকে তুমিও ফোন করতে পার আমাকে। আমি বাসায় না থাকলে তোমার ভাবী তো থাকবে কি দরকার বলে দিও।
-আচ্ছা।
-ফোন টা রেখে আবার পিঁয়াজ ছেলা শুরু করতেই কুইক করেন ভাইছাব। দেলোয়ারের তাগিদ। পনের মিনিটে এক বস্তা পিঁয়াজ ছিলতে হবে, বুঝলেন? কুইক, কুইক করেন।
-হবে ভাই হবে একটু সময় তো দিবেন।
-কথা বাদ দেন কুইক করেন, হাত চালান।
মারুফের পিঁয়াজ কাটা শেষ। এখানে যে কয়টা ছেলা হয়েছে সেগুলিও শেষ। এবারে মারুফও ছেলার কাজে হাত দিয়ে তাড়াতাড়ি বস্তা শেষ করে আবার কাটা কাটিতে লেগে গেলো।
এবার কবিরের হুকুম-
-ভাইছাব করে থেকে একটা ডেকচিতে করে আট পট চাউল এনে ধুয়ে দেন।
-করে মানে?
-ও! করে মানে পিছনে।
-আচ্ছা।
চাউল এনে ধুয়ে দেয়ার আগেই-
-এই যে ভাই এই কিমা গুলি মাখান তো।
শুধু রাশেদ সাহেব নয় সবাই বিজি কারো নিশ্বাস ফেলার সময় নেই।
মারুফ বললো –
-ভাই এক ফাঁকে রাতে আর সেহেরির জন্যে ওই ফ্রিজ থেকে এক পোটলা মাছ আর এক পোটলা চিকেন বের করে পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন আর এখন আমাকে কয়েকটা টমাটো আর দুই তিন টা লাল পিঁয়াজ দেন।

এর মধ্যে বিরাট এক ডেকচিতে সদ্য কাটা সব পিঁয়াজ বিভিন্ন মশলা, লবণ, টমাটো আরও কি কি সব দিয়ে চুলায় দিয়ে দিল।
-এটা কি হবে ভাই?
-এটা হচ্ছে গ্রেভি, এগুলি দিয়েই কারি রান্না হবে।

রাশেদ সাহেব বুঝলেন ফ্রাইংপ্যানে চামচ দিয়ে যে জিনিস দেয়া হয় তাহলে এই সেই। এটা হলো কারির ঝোল। ওদিকে একজন বড় এক গামলায় করে মুরগির মাংস মশলা দিয়ে মাখাচ্ছে। একজন আবার একটা সিংক এর ভিতর দিকটা পরিষ্কার করে তার মধ্যে ময়দা ছেড়ে দিল বস্তা থেকে। তার মধ্যে ডিম, লবণ, চিনি, কালিজিরা, বেকিং পাউডার এসব দিয়ে মাখাচ্ছে।

এই যে ভাই এই গুলি ধুয়ে দেনতো, আরে ভাই দেখে আসেন তো ওই ওখানে কড়াইতে ফুলকপি কত গুলি আছে দেখেন। কুইক করেন। আচ্ছা ভাইছাব এই যে দেখেন এইরকম তিনটা কৌটা নিয়ে আসেন স্টোর থেকে। হ্যাঁ ঠিক আছে। আচ্ছা উপরের টয়লেটের পাশে যে রুম ওখানে দেখবেন এই যে ভিম পাউডার এই গুলি আছে এরকম দুইটা নিয়ে আসেন। ভাইছাব এইগুলি একটু কুইক ধুয়ে দেন। শ্বাস ফেলার সময় নেই। হুলস্থূল ব্যাপার। যাক মোটামুটি দুইটার মধ্যে একটু হালকা হলো। মারুফ বললো-
-ভাই সাহেব রান্না করতে পারেন?
-আসলে রান্না করার তো কখনও প্রয়োজন হয়নি তাই চেষ্টা করা হয়ে উঠেনি।
-আচ্ছা ঠিক আছে শিখিয়ে নিব।
-হ্যাঁ তাতে আপত্তি নেই।
-ঠিক আছে কাল দেখিয়ে দিব আপনে রান্না করবেন। এখন কিচেন টা একটু ব্রাশ করে শেষ করে উপরে চলে যান।
কয়েকটা চুলা সমানে জ্বলছে। কোনটায় গ্রেভি, কোনটায় মুরগী, কোনটায় ভেড়া আরও কি কি যেন। রাশেদ সাহেব বললেন-
-আপনি যাবেন না?
-না আমার যেতে একটু দেরি হবে আপনে যান।
-না কি দরকার চলেন এক সাথে যাই।
-না আপনি টায়ার্ড, নতুন তো রেস্ট নেন।
-না চলেন একসাথে যাই।

এই বলে টেবিলের উপর উঠে বসল।
বাড়ি কোথায়, কবে এসেছে মানে তাকে যা যা বলেছে সবাই সেও তাই জানতে চাইল। মারুফ সুনামগঞ্জ থেকে এসেছে। ওখানে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে বেকার ঘুরছিলো এদেশের এক মেয়ের সাথে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে বাবা। আর দেরি না করে লন্ডনি মেয়ে বিয়ে করে তার আঁচল ধরে চলে এসেছি চার বৎসর আগে, আমরা তো আর অন্য কোন কাজ পারি না লেখাপড়াও তেমন নেই তাই এই কাজই করি। তবে ভালই আছি বাড়ি কিনেছি। না না এক বারে না। মাসে মাসে কিস্তি দেই। গাড়ি কিনেছি।
-ও আচ্ছা, ওই যে পিছনের গাড়িটা?
-হ্যাঁ হ্যাঁ ওইটাই আমার। আমি এইতো সোম বারে রাতে ডিউটি শেষ করে আমার অফ আমি গাড়ি নিয়ে লন্ডন চলে যাব। সেফ আসবে মঙ্গলবারে। আবার বৃহস্পতিবার বিকেলে এসে ডিউটি করব।
-আচ্ছা, আপনার ওয়াইফ তাহলে লন্ডন থাকে, কতক্ষণ লাগে লন্ডন যেতে?
-বেশি না, দেড় ঘণ্টার মত। ওই যে কবির, ওকে দেখছেন ও এসেছে তিন বৎসর আপনার মত টুরিস্ট হয়ে এসেছিলো এখন বেআইনি।

-উনি বেআইনি কেন থাকবে? দেখে টেখে একটা বিয়ে করিয়ে দেন আপনাদের সবাই এদেশে অনেক জানাশোনা। ওর একটা গতি হোক। ওর বাড়ি কি আপনার এলাকায়?
-হ্যাঁ সেই জন্যেই একটু মাথা ব্যথা। খুঁজছি কিন্তু পাইনা সেরকম।
-আর দেলোয়ার?
-না ও টেম্পোরারি। সেফ নেই তাই ওকে আনা হয়েছে। সেফ এলেই ওকে বিদায় দেয়া হবে দেখবেন ওকে কিন্তু আবার একথা বলবেন না। দেখেন না আপনার সাথে কেমন ব্যবহার করে তবুও আমরা কিছু বলি না।
-না আমি আর কি বলতে যাব? আচ্ছা, দুপুরে মালিকেরা কেও আসেনা?
-আসে তো, দেখেন নাই? ও! তখন আপনে স্টোরে ছিলেন। ওরা সামনে কাজ সেরে চলে যায়। সেফ না থাকলে এদিকে খুব একটা আসেনা। দেখি আমার গ্রেভির কি অবস্থা!

টেবিল থেকে নেমে যা যা জ্বাল হচ্ছিল সব কিছু দেখে একটা একটা করে চুলা নিভিয়ে দিয়ে বললো-
-চলেন যাই।
এক সাথেই উপরে চলে এলো দুই জনে।
-আসেন একটু বসেন।
আমতা আমতা করে বললো-
-নামাজ পড়া হয়নি।
-ও না না ঠিক আছে নামাজ পড়েন গিয়ে পরে আলাপ করা যাবে।

কথোপকথন-০৭

— জানেন, আজকাল কেউ একজন আমার
বুকের ভিতর সংগোপনে বাস করে।
বুকের উঠোন জুড়ে ঘর বাঁধে। বেলকনি আঁকে।
জানলা দিয়ে চাঁদ দেখে, জোৎস্না গায়ে মাখে।
ইচ্ছে হলেই পাহাড় গড়ে, ঝর্ণা হয়ে ঝরে চোখের
কোণে।
— বাহ্! কি রোমান্টিক! প্রেমে পড়ছেন বুঝি ?
— না তো,,আমি প্রেমে প…ড়…ব…?
— প্রেমে পড়লে এমনই হয়। বুঝলেন তো !
— তাই বুঝি!
— হ্যাঁ তাই। তো আর কি কি করে শুনি?
— দরজা খুলে বাইরে আসে। উঠোন জুড়ে হাঁটতে থাকে।
নূপুরের সুরে পুষ্পবৃষ্টি ঝরে মনের নিখাঁদ বাসনায়।
তারপর — তারপর, তৃষিত মুখ, উষ্ণ শ্বাস ছুঁয়ে যায়
হৃদয় গভীরতা।
— তারপর…?
— বাতাসে উড়িয়ে দেয় দূরত্ব। কপালে এঁটে নেয় লাল
রঙের আনন্দ। একে একে ডেকে যায় বিষন্ন দুপুর,
নিঝুম বিকেল, উদাসীন সন্ধ্যা।ধরা না দিয়েও হৃদয়
ছুঁয়ে যায় নীরবে।
— এবার ধরেই ফেলেন,?
— সেই তো ধরা দিতে চায় না! রোজ রোজ কথা বলে।
রোজ রোজ মান অভিমান করে। কারণে অকারণে
অনুযোগ অভিযোগ করে তবুও দূরে থাকে।
— রোদ্দুরে ভেজা নৈঃশব্দ্য নদীকে ছুঁয়ে দেখতে নেই।
অনুভব করাই শ্রেয়। তার আঙুলের ডগায় চোখের
বিস্ময়, শখের অরণ্যে রোদ মেঘ বৃষ্টি। আগুন হয়ে
ঝরে যায় অনর্গল। “সাহস করে বললেই তো পারেন। ”
— ভয় হয় যদি ফিরিয়ে দেয় !
— নাও ফেরাতে তো পারে ! বলে তো দেখতে পারেন।
— এই যে আপনি, আমার ঘুম ভাঙানিয়া পাখি হবেন
প্রতিটি ভোরের, আমায় দেখার আয়না হবেন প্রতি
স্নানের শেষে অমন সমুদ্র চোখে।
সন্ধ্যে নামার বিকেল হবেন, হবেন কি আমার ঘরের
একশো আরতি দীপ জ্বলা সন্ধ্যা বাতি।
হবেন কি আপনি আমার এই জীবনের একান্ত তুমি,
তুই আর রাগ অনুরাগ,মান অভিমান।
— চুপ! মোটু, আপনি একটা শয়তান। চুপ! হাসবেন না?
এই যে শুনেন আপনার অমন গ্লুকোজ মার্কা হাসি
আমার খুব সুইট লাগে বুঝলেন তো। ব্যাঁ, ব্যাঁ ব্যাঁ ।
— আ্যাঁ কি তাই,,,,,!
— হ্যাঁ তাই , চুপ,,!

০৪/১২/১৯

নক্ষত্রের গোধূলি-৪০

৫৫।
সবাই রাশেদ সাহেবকে নিয়ে মোটামুটি হাসি তামাশা হৈ চৈ গালা গালি যার যখন যা ইচ্ছা চালিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু রাশেদ সাহেব কোন প্রতিবাদ করছে না। আরে এইটা করতে এতক্ষণ লাগে নাকি, ওইটা কোথায় থাকে জানেন না, একটু দেখে নিলেই তো হয়, হা করে কি দেখেন এই ধরনের সব কথার প্রতিবাদ করবেই বা কী। নীরবে শুনে যাওয়াই ভালো। বোবার নাকি শত্রু থাকে না। ঘড়ি দেখার কথা মনে নেই। মারুফ বললো
-ওরে বাবা সারে বারোটা বেজে গেছে? তাড়াতাড়ি কর সবাই। নয়া ভাই সাহেব আপনি মপের বালতি ভরে চুলায় দেন।
মপের পানি গরম হলে বললো-
-ওই যে ওই খানে ব্রাশ আছে ওটা নিয়ে আসেন। পারবেন তো ব্রাশ করতে? দেন আমি দেখিয়ে দেই
বলে বালতিতে গুড়া সাবান, ব্লিচ, এনটি ব্যাকটেরিয়াল সুগন্ধি মিশিয়ে বললো-
-দেখেন কি ভাবে ব্রাশ করবেন।
দেখিয়ে দেয়ার পর রাশেদ সাহেব পুরো কিচেন আর তার পাশের স্টোরে মপ মেরে জিজ্ঞেস করলো-
-এই পানি কোথায় ফেলব?
দেলোয়ার বাইরে নিয়ে গিয়ে একটা ড্রেনের মুখ দেখিয়ে বললো-
-এই খানে ফেলবেন সবসময়। আর ওই বালতি ব্রাশ এই যে এইখানে রাখবেন সবসময়। একই ভাবে করবেন যাতে করে আপনে যেদিন না থাকবেন সেদিন যেন আমাদের কারো খুঁজে পেতে অসুবিধা না হয়।
ফিরে এসে দেখে কাজ কর্ম সব শেষ। কিচেন দেখে মনেই হবে না এখানে এতক্ষণ মহাযজ্ঞ চলেছে। সমস্ত কিচেন চক চক করছে।
-এই যে ভাই সাহেব হাত মুখ ধুয়ে আসেন।
-কেন?
-খাইবেন না?
-ও আচ্ছা, তা হলে আমি কাপর গুলিও বদলে আসি। সিংক থেকে নোংরা পানি ছিটে এসেছে কেমন লাগছে এই কাপর গায়ে খেতে পারবো না।
বলেই রাশেদ সাহেব আর দেরি করলেন না। সারা দিনের এই নতুন ধরনের শারীরিক পরিশ্রম যাতে সে অভ্যস্ত নয়, এর পর বিষণ্ণ মন, অবসাদ আর ক্লান্তিতে সমস্ত শরীর যেন আর চলতে চাইছিলো না। কোন রকম টেনেটুনে তিন তলায় এসে কাপর বদলে বিছানায় একটু বসে মনে হলো কতদিন যেন বসতে পারেনি। মুখে হাত দিয়ে দেখে ঘাম শুকিয়ে লবণ কিচ কিচ করছে। সেই সাড়ে পাঁচটার পর একটা সিগারেট ও টানার সুযোগ পায়নি। আগে একটা সিগারেট বানিয়ে তাড়াতাড়ি দুটো টান দিয়ে এ্যাশট্রেতে ফেলে দিলেন। বেশি দেরি হলে আবার কি বলে এমনিতেই নতুনের দোষ বেশি।

বাথরুমে গিয়ে সাবানের কথা মনে হলো, আগে একেবারে মনেই হয়নি এখন আর অত দূরে সাবান আনতে যেতে ইচ্ছা হলো না। সাবান ছাড়াই মুখ হাত ভাল করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিচে এসে দেখে সবাই যার যার মত কিচেনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই খাচ্ছে। মালিকদের অন্য এক অংশীদার ওসমান বললো-
-নেন নেন ভাই তাড়াতাড়ি একটা প্লেট নেন।
রাশেদ সাহেব দেখলেন সে যেখানে প্লেট গুলি ধুয়ে রেখেছে এগুলি সেই প্লেট। সে নিজেও একটা হাতে নিয়ে নিলেন। আসাদ সাহেব ভাতের ডেকচি আর তরকারির হাড়ি দেখিয়ে দিল। মারুফ বললো-
-নিজেই নিয়ে নেন কেও দিয়ে দিবে না।
-ও আচ্ছা, ঠিক আছে নিচ্ছি।
কাস্টমারের জন্যে যে প্লেইন রাইস সেই একই রাইস, তরকারির হাড়িতে দেখে কিসের মাংস যেন।
-এটা কি গরুর মাংস?
-না না এ হলো ল্যাম্ব মানে ভেড়া। কেন খান না নাকি?
-না না সেরকম কিছু না সবই খাই।
-ঠিক আছে, নিয়ে নিবেন যা লাগে।
ওসমান বললো-
-ভাই সাবের সাথে তো কথা বলার সময় পাইলাম না, ঠিক আছে আছেন তো পরে আলাপ করবো।
এর মধ্যে তার খাওয়া শেষ। কোন রকম হাতটা ধুয়ে বললো আচ্ছা আমি আসি, সালামালেকুম বলেই দৌড়।
রাশেদ সাহেব খেতে শুরু করেছেন। আসাদ বললো-
-কি, ঠিক আছে? চলবে তো! না কি?
-হা ভাই চলবে মানে কি চালাতে হবে এছাড়া তো উপায় নেই।
-আচ্ছা আপনি এই কাজ নিলেন কেন? আপনার তো এই কাজের বয়স না। দেশ থেকে কবে এসেছেন, দেশের খবর কেমন, ওখানে কি করতেন ইত্যাদিসহ নানা প্রশ্ন যা এখন রাশেদ সাহেবের কাছে যন্ত্রণার মতো মনে হচ্ছিল। এমনিতেই কথা বলতে ভাল লাগছিলো না তার মধ্যে একই প্যাঁচাল বার বার আর কত! কেন, মানুষের এতো কৌতূহল কেন? আমি কি করতাম তা জানার কি এমন দরকার? কি হবে জেনে? যাই হোক কিছু বুঝতে দিলো না। অবলীলায় তার সব কথার জবাব দিয়ে গে্লেন।
যদিও সে বুঝতে পারছিলো এটা হলো আলাপ করার একটা পদ্ধতি। প্রথম আলাপ আর কি ভাবে শুরু করে তাই এই সব অবান্তর প্রসঙ্গ। তবে যাই হোক লোকটাকে ভালোই লাগলো। নতুন এসেছে এতো বিরক্ত হলে তো চলবে না কিন্তু তার মনের অবস্থা তো তার জানার কথা নয় তাই এই প্রসঙ্গ। কি আর করা যাবে এই ভাবেই তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সবার কাছ থেকেই ভাল আশা করা সম্ভব নয়। রান্না খারাপ ভালো দেখার অবস্থা নেই। কোন ফাঁকে যে রান্না করেছে কে করেছে তা রাশেদ সাহেব খেয়াল করতে পারেনি। আর করবেই কখন এক সাথে দুই তিন জনে হুকুম করেছে। কোথায় কি থাকে, কি আছে, কাকে কি বলে এগুলি তো কিছুই জানা নেই। তারপর কিভাবে কি করবে তাও কিছু জানা নেই। কেও যে দেখিয়ে দিবে সে উপায়ও নেই। সবাই যার যার মত ব্যস্ত। আর এক সমস্যা ভাষা। কথাটা শুনেছে কিন্তু বুঝতে পারছেনা, জিজ্ঞেস করেছিলো দুএক বার। জবাব শুনে আর করতে ইচ্ছা হয়নি। যেমন বাংলাটাও শিখে আসেন নাই!! একবার বলেছিলো এটা তো -বাংলার একটা আঞ্চলিক রূপ সে তো আমার সব বোঝার কথা নয়।
-কি বললেন আমরা বাঙ্গালি না?
-না না তা হবে কেন?
-ও! উনি শুদ্ধ ভাষা ছাড়া বুঝেন না তা জানেন না? এখানে সবাই এই রকম কথা বলে তো আপনে এখানে আসলেন কেন?

তৃষিত প্রাণ

তেষ্টা নাকি তৃষিত ছাড়া কেউ বোঝেনা।
কষ্ট ছাড়া কেষ্ট নাকি কভু মেলেনা।
বৃষ্টি ছাড়া চাতকের তৃষ্ণা মেটেনা।
কোকিলের পা কভু নাকি মাটিতে পড়েনা।
শিশির জমা এক ফোটা জল তৃষিত প্রাণের বাসনা।

গাঁয়ে আছে স্নেহছায়া …….আছে মায়া আমার গাঁয়ের কবিতা-৪ (চতুর্থ পর্ব)

গাঁয়ে আছে স্নেহছায়া …….আছে মায়া
আমার গাঁয়ের কবিতা-৪ (চতুর্থ পর্ব)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

গাঁয়ে আছে তালবন, আমবন দূরে,
সবুজ ধানের খেত গ্রামখানি জুড়ে।
সোনারবি উঠে রোজ কিরণ ছড়ায়,
পাখিরা তরুর শাখে সুমধুর গায়।

মাটির উঠানে আছে মাটির উনান,
কাঠের আগুন জ্বলে সেদ্ধ হয় ধান।
সেদ্ধধান উঠানেতে রোদে দেয়া হয়,
হাঁসগুলো ধান খায় নাই কোন ভয়।

উঠানে দুধের শিশু, শুয়ে খাটিয়ায়,
মায়ের কোলেতে বসে শিশু দুধ খায়।
গাভী দুটো হাম্বা হাম্বা করে চিত্কার,
ছাগল ভেড়ার পাল বাঁধা চারিধার।

মাটির মানুষ সুখে থাকে বারো মাস,
সকলের সাথে করে একসাথে বাস।

অমর প্রেম

একটি উল্কা খসেছে ঈশ্বরের প্রেমগ্রন্থ হতে
গতকাল রাতে এসেছে পৃথিবীর বুকেতে,
তাই খুঁজে ফিরি এই প্রাতেঃ
ভিন্ন ভিন্ন রুপে মনের আয়নাতে।

তোমাকে চেয়েছি উল্কা পতনের পথে
শুনেছি জনশ্রুতিতে
যে নাম লেখা থাকে ছুটে পড়া উল্কাতে
সে প্রেম অমর হবে স্বর্গ -মর্ত্যতে।

যে প্রেম পায় না স্বীকৃতি এই ধরিত্রীতে
ঈশ্বর সে নাম লিখেন নক্ষত্ররাজিতে
আত্মা মিলিত হয় প্রেমাত্মাতে
বিশ্বব্রহ্মাণ্ড আলোকিত রয় সেই জ্যোতিতে।