বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

গা ঘেঁষে দাঁড়াবো না

গা ঘেঁষে দাঁড়াবো না! প্রমিজ করছি মেয়ে।
কিন্তু পুরুষ নামের হিংস্র হায়নার লোভাতুর
মনের তৃষিত চোখের ঘষায় প্রতিদিন
যে তুমি নীরবে কতবার ধর্ষিত হচ্ছো
তার দায় কে নিবে?বলতে পারো কি মেয়ে ?

মেয়ে তুমি এতটাও সুন্দর না! যতটা না সুন্দর আমার এক একটি সদ্যজাত কবিতা।

দেহে ও রুপে সৌন্দর্য্য থাকে না মেয়ে। মনই হচ্ছে সত্যিকারের সৌন্দর্য্য!

দেহ কাম-বাসনার উপকরণ মাত্র।
এটাকে বিকৃত করো না। আবৃত রাখো।
বরং এটা প্রতিবাদের নামে নিজেকে প্রকাশ করা মাত্র।

আগুনমুখী বৈশাখ

সারাদিন উত্তর দক্ষিণ করে পশ্চিমের কথা
ভুলে গেছে মানুষ !
অথচ আগুনমুখী বৈশাখ দেখে
সমষ্টিগত অস্থির আমার মন ৷

আজকাল ঝড় ওড়াচ্ছে চারদিক
সকালের সোনারোদ তরতর করে
বেড়ে ওঠে যখন বুক বরাবর
আমি চাইতেই আকাশের মুখ অন্ধকার হয়ে যায়।

চলতি পথে একজন বললেন
এবার কালবৈশাখী একটু আগেই শুরু হয়ে গেলো !
আগুনের তাণ্ডব আর মারমুখী ঝড়ের শাসনে
গাড়ীগুলো দেখেন কেমন দাঁড়িয়ে আছে লাশের গল্প নিয়ে,

আমি মনের মুখোমুখি হই
লাল সাদা পোষাকের মহত্ত্বে দেশজুড়ে বর্ষবরণ,
শোভাযাত্রা,অগ্নীস্নান ,গরীব জনগোষ্ঠীর উপহাসি জীবন
ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার, আরও কত কি!

পরদিন পত্রিকার শিরোনাম হয়ে সূর্য উঠবে চোখের পাতায়
নাচের তালে তালে গণধর্ষণ কিম্বা ছাত্রীর আগুনে ঝলসানো ছবি।

দূরে একদল নবধর্ষক নিলামে ওড়া্ছে বাঙালীর সম্ভ্রম ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখকদের বই নিয়ে ‘সতীর্থ’ বইমেলা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখকদের বই নিয়ে ‘সতীর্থ’ বইমেলা

কবি ও গল্পকার এবং শব্দনীড় ব্লগার রোদেলা নীলা‘র পুরনো এবং নতুন বই পাওয়া যাবে সতীর্থ বইমেলা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বইমেলায়।

নির্বাণ প্রকাশের আয়োজনে দ্বিতীয় বারের মতো আগামী ১২, ১৩, ১৪ এবং ১৫ এপ্রিল রোজ শুক্র, শনি, রবি এবং সোমবার; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সতীর্থ বইমেলা ২০১৯।

সতীর্থ বইমেলায় থাকছে বিভিন্ন প্রকাশনী হতে প্রকাশিত জাহাঙ্গীরনগরের বর্তমান ছাত্র, সাবেক ছাত্র এবং শিক্ষকদের বই। ১২, ১৩, ১৪ এবং ১৫ এপ্রিল প্রতিদিন সকাল ১০ টায় মেলা শুরু হয়ে চলবে রাত ৯ টা পর্যন্ত।

বইমেলার পাশাপাশি গতবছরের মতো এবারো থাকছে কবিতা পাঠ, গান এবং উচ্চাঙ্গ সংগীত। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে ১২ তারিখ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত।

আপনারা সবাই আমন্ত্রিত।

সন্ধেয়

আর এককাপ চা খাবেন?
-খাবো, টঙ এর চা প্রিয় যে !
এই নিন
সন্ধে হল বলে
-আচ্ছা আদুরে বাতাস আছে সেখানে ?
সন্ধে হল বলে, আসবে হয়ত,
-আলোর ফাঁকিবাজি !
আছে ওখানে?
-হুম বিদ্যুৎ নেই,
কেরোসিনের কুপি
আলো ছায়ার নাচ পেতে পারেন
-বাতাস দোলাবে খুচরো চুল ?
অন্ধকারে কিভাবে বুঝব বলুন,
সে ঠিক টের পাবেন আপনি
-আর কেউ নেই ওখানে ?
কিছু সাজানো স্বপ্ন থাকবে ঝোলায়
ওদের কি কেউ ভাবা যায়?
অনেকটা পথ।
আপনি হাটতে পারেন বেশ
-বেশতো তবে চলুন।

কবিতার রঙ্গমঞ্চ

– আপনার পেশা কি? মানে আপনি কি করেন?
প্রশ্নের উত্তর দিতে চায় নি কবি। উল্টে কবি সম্মেলন মঞ্চে কবিতা পড়ে শোনাল – দুমুঠো ফুটিয়ে খাব। এক পৃথিবী লিখব। সবার হৃদয়ে আকাশ আঁকব।
কবিতা পড়া শেষ করে আর আমার কাছে এসে বসল না। তাই তার পাশে এক সুন্দরী মহিলা কবি বসেছিলেন তিনিও ধীর পদক্ষেপে তার সিট ছেড়ে উঠে গেলেন।
সেখানে কবির পাশে আর সিট ফাঁকা নেই। কবি তিনিকে দেখে পাশের ভদ্রলোককে কিসব বললেন। তাতে ভদ্রলোক তিনিকে দেখে কবিকে বললেন – শিওর। আসুন। বসুন।
ভদ্রলোক উঠে এদিক ওদিক তাকিয়ে সিট খুঁজতে লাগলেন। আমি হাতছানি দিয়ে ডাকলাম। ভদ্রলোক এসে আমার পাশে বসলেন । বললেন – ধন্যবাদ।
আমি হেসে জিজ্ঞেস করলাম – আপনি কি করেন?
– আমি শিক্ষক।
– কবি নন?
ভদ্রলোক হো হো করে হেসে ফেলল। শব্দ একটু জোরে হয়ে গেল। তাই লজ্জা পেয়ে বললেন – কবি সম্মেলনে এসেছি তাই কবি তো অবশ্যই। শুধু কবিতা লেখা বা গল্প লেখার পেশা, অনেকটা জীবনকে ফাঁকি দেওয়ার মত। তবে আমি শিক্ষকতা করি। আর অবসরে এসব চর্চা করি।
আমি মনে জোর পেলাম। বললাম – আপনার সঙ্গে আমার জমবে। তার মানে কবিতা গল্প লেখার জন্য আপনি আপনার কর্মকুশলতায় কোন ফাঁকি দেন নি। তাই তো?
ভদ্রলোক আমার দিকে তাকালেন। বললেন – তা কী করে হয়? আমি শিক্ষকতায় ফাঁকি দিলে আগামী শিক্ষা সমাজ ফাঁকিতে পড়বে। কিন্তু ছাত্রছাত্রী ঠিক তার পড়াশুনা করে নেবে। তাই প্রশাসন পদ্ধতি চাইবে আর শিক্ষক নিয়োগ করে কি হবে?
আমি কবির সাথে হাত মেলালাম। সামনে বসা নিজেদের মধ্যে প্রায় মুখে মুখ লাগিয়ে গল্প করা সেই কবি ও কবিনীকে দেখিয়ে বললাম – ওই দেখুন, কবি ও তার উদ্দেশ্য। কিছু শুনছে কী?
আমার পাশে বসা কবিও হাসলেন। বললেন – আমিও তাই ভাবি কতভাবে কবিতা লেখা হয়।
– তাই তো। এবার শোনা যাক কবিতার রঙ্গমঞ্চের কিছু কবিতা।

ইমোশন

মার্ক টোয়েন একদিন সকাল বেলা বাইরে বেরুবার জন্য রেডি হচ্ছিলেন। একটা জামা বের করে দেখলেন ওটার বোতাম নাই। নিজের মনে বকাবাদ্য করে ওটা ফেলে দিয়ে দ্বিতীয় আরেকটা বের করলেন, ওটারও একই অবস্থা। এবারও একচোট গালাগালি করে নিয়ে আরেকটা বের করে গায়ে দিলেন। দেখলেন এইটারও বোতাম নাই। এইবার মাথাখারাপের মত অকথ্য-কুকথ্য ভাষায় ইচ্ছেমত গালিগালাজ করে নিলেন। গালিগালিতে কড়াইল বস্তি ফেইল। এরপর চতুর্থ জামা বের করে পরতে গিয়ে দেখেন তাঁর স্ত্রী পেছনে দাঁড়িয়ে।

এবার স্বামীকে অপ্রস্তুত করতে তাঁর সম্ভ্রান্ত স্ত্রী, স্পষ্ট উচ্চারণে সমস্ত গালিগালাজ একে একে রিপিট করলেন।

মার্ক টোয়েন কিঞ্চিত লজ্জিত হয়ে বললেন, উচ্চারণ ঠিকই আছে। কিন্তু ইমোশনটা নাই।

ইমোশন এমন একটা জিনিস যেটা পারফেক্টলি দিতে না পারলে, কমিউনিকেশন ব্যর্থ হয়ে যাবে।

স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই …

মৃত্যু অনিবার্য সত্য। তাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। সে মৃত্যু স্বাভাবিক হোক এটুকু অন্তত মানুষের মানবিক অধিকার। আমরা এখন পদে পদে অধিকার হারাচ্ছি, হারাচ্ছি স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা।

চকবাজারের ঘটনার মাত্র সাঁইত্রিশ দিনের মাথায় বনানীর ভয়বহ প্রাণঘাতি আগুন। এদেশ যেন এক অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হয়েছে। কিন্তু কেনো? কারা এর জন্য দায়ী? কে নেবে এসব মৃত্যুর দায়? যারা দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারালো তাদের অপরাধটা কি ? এসব প্রশ্ন এখন গোটা জাতির।

বেঁচে থাকার জন্য মানুষ প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে, জীবন নিয়ে ভাবে, সমাজকে উপলব্ধি করে, আর জীবন সায়াহ্নে এসে অপেক্ষা করে স্বাভাবিক মৃত্যুকে বরণ করার জন্য। কিন্তু সায়াহ্নের আগেই তাকে প্রাণ দিতে হয় পদে পদে ফাঁদ পাতা অপঘাতে।

এদেশের মাটিতে প্রতিমুহূর্তে পাখির মতো অকালে ঝরছে প্রাণ। অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে জীবন। অথচ তার কোন সুরাহা হচ্ছে না। দুর্ঘটনার পরের কিছুদিন ফেইসবুকে স্ট্যাটাস, কাগজে কিছু প্রচার-প্রচারণা, মিডিয়ায় টকশো, সংবাদমাধ্যমে মৃত্যুর আপডেট, অতঃপর আবার সেই নীরবতা।

কতৃপক্ষের গাফিলতি কতটা নির্মম তা আজ আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।

দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করা গেলেও তার প্রতিকার ফাইলচাপা পড়ে থাকে। তদন্ত কমিশন গঠন হলেও তদন্তরিপোর্ট হয় না, আর হলেও বা তা থাকে সাধারণের জানার বাইরে।

আমাদের দেশে পরিবহন দুর্ঘটনায়, বিল্ডিং ধ্বসে পড়ে এবং আগুন লেগে মৃতের সংখ্যা স্মরণকালের সকল রেকর্ড অতিক্রম করে চলেছে। সন্দেহাতীতভাবে এটা মানবতার মহাবিপর্যয় ।

মৃত্যু অবধারিত বলেই মানুষ শতবেদনায়ও তা মেনে নেয়। কিন্তু আকস্মিক বা অস্বাভাবিক মৃত্যু, যে মৃত্যুর জন্য মানুষের প্রস্তুতি নেই, যা মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক অথচ সতর্ক হলে অনেকাংশেই এড়ানো সম্ভব, তা কি করে মেনে নিতে পারে মানুষ ?

স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা পেতে কি তাহলে পথে নামতে হবে ? অন্য সব অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মতোই কি এটাও আন্দোলন করে আদায় করতে হবে? তাহলে জনগনের অর্থ ব্যয়ে নগর রক্ষার দায়িত্বে কতৃপক্ষকে কি অশ্বডিম্ব পাড়ার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে?

আমরা আর কোন মৃত্যু চাইনা, অপঘাতে মৃত্যু নিষিদ্ধ হোক, আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই। এটুকু অধিকার তো আমরা চাইতেই পারি।

এফ আর টাওয়ারে অগ্নিদগ্ধ আহত ও নিহতদের জন্য গভীর সমবেদনা।

কিছু গল্প কিছু স্বগোতক্তি

শীত একেবারেই বিদায় নিলো। ঝা চকচকে রৌদ্রময় দিন আজ। দাবদাহ। চারপাশ গাঢ় হলুদ রঙের রোদ্দুরে ভরে আছে। মানুষের গল্প যথারীতি এগিয়ে চলেছে অবিরাম। এখানে সর্বত্র কোলাহল, এন্তার যানবাহনের আনাগোনা অহর্নিশ। কানের কাছ দিয়ে শিষ কেটে একের পর এক গাড়িঘোড়া ছুটে চলেছে। দাঁড়িয়ে আছি বাড়ির কাছের এক গলির মুখে। পৃথিবী এগিয়ে চলেছে আপন গতিতে, নিজের খেয়ালখুশি মতো। কখনও অতিকায় ডাইনোসর এই মর্ত্যলোকে দাপিয়ে বেড়াতো। তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ তীব্র আন্দোলন সৃষ্টি করতো মাটিতে। কিন্ত তারা টিকতে পারেনি, নিঃশেষ হয়ে গেছে। বিরূপ প্রকৃতির কাছে পরাজিত হয়ে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
আচ্ছা, পৃথিবীর বয়স কতো হলো? এর সর্বজনগৃহীত কোনও উত্তর নেই। বিভিন্ন ধারণা প্রচলিত। প্রতিষ্ঠিত বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীদের এ ব্যাপারে মতভিন্নতা আছে। সত্যি, মাঝেমাঝে বড্ড জানতে ইচ্ছে করে কোথায় শুরু? কোথায় শেষ? আমি কোথায় দাঁড়িয়ে আছি? এরপর?

***
আমার দারুণ প্রিয় একটি দেশাত্মবোধক গান, “আমায় যদি প্রশ্ন করে/আলো নদীর এক দেশ/বলবো আমি বাংলাদেশ…”। চমৎকার একটি গান। শাহনাজ রহমতুল্লাহ গেয়েছেন। শাহনাজ রহমতুল্লাহ আমার খুবই প্রিয় শিল্পী। ছোটোবেলা থেকে তার গান শুনে আসছি৷ আমি তখন খুবই ছোটো। প্রাইমারি স্কুলে সবে ভর্তি হয়েছি। এ সময় আমার বড় বোনকে দেখতাম, তাঁর বেশ কয়েকটি গান নিয়মিত গাইতো; “যে ছিলো দৃষ্টির সীমানায়/যে ছিলো হৃদয়ের আঙ্গিনায়/সে হারালো কোথায় কোন দূর অজানায়…”, ও আরও দুয়েকটি গান (এ মুহূর্তে ঠিক মনে পড়ছে না)। তাঁর আরেকটি অসামান্য দেশাত্মবোধক গান, “একবার যেতে দে না/আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়/যেথায় কোকিল ডাকে কুহু/দোয়েল ডাকে মুহূর্মুহু…”।
সত্যি, অসাধারণ গায়িকা! সাবিনা ইয়াসমিন বা রুনা লায়লা’র থেকে প্রতিভা, দক্ষতা কোনও অংশেই তিনি কম নন। অনেক জনপ্রিয় গানও গেয়েছেন। যেমন সুমধুর তাঁর কণ্ঠ, তেমনি সাবলীল গায়কী। অত্যন্ত আবেদনময়ী কণ্ঠের অধিকারিণী তিনি। তবু্ও জানি না কেন, কোনও অজ্ঞাত, রহস্যবৃত কারণে আমাদের দেশের মিডিয়া কখনওই সাবিনা ইয়াসমিন বা রুনা লায়লা’র মতো তাঁকে মূল্যায়ন করেনি। কোনও একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকারেও তাঁকে এটা নিয়ে প্রকারান্তরে খেদ প্রকাশ করতে দেখেছিলাম। উক্ত দুই শিল্পীর কাতারে কখনওই আমরা তাঁকে রাখিনি বা বিবেচনা করিনি! অথচ তাঁর সঙ্গীত ক্যারিয়ার, যোগ্যতা, দক্ষতা কোনও বিবেচনাতেই রুনা লায়লা বা সাবিনা ইয়াসমিন’র থেকে কম নয় কিছুতেই।
আমি তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করছি। এখন বোধহয় তিনি আর গান করেন না। এরকম পড়েছিও কোথাও যে, তিনি আর গান গাইবেন না। আমি আশা করি, তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে আবার গান গাইবেন আমার, আমার বড় বোন ও এরকম আরও অগণিত ভক্ত অনুরাগীর জন্য।

স্বাধীনতা অর্জন ( প্রতিবেদন )

২৫শে মার্চের কাল রাত্রির কথা বাঙালীরা ভুলতে পারবে না কোন দিনই। ১৯৭১ সালের মার্চের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলিতে চলছিল অসহযোগ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সারা বাংলাদেশে যে বেসামরিক প্রশাসন আওয়ামী লীগ হাতে তুলে নিয়েছিল তার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রীর দায়িত্ব যেন ৭ই মার্চের পর থেকে তাঁর কাঁধেই অর্পিত হয়েছিল…..

মায়েরা হাসতে হাসতে তাঁদের ছেলেমেয়েদের উৎসর্গ করে ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য। বাবারা তাঁদের ছেলেমেয়েদের উৎসর্গ করে ছিলেন আমাদের এই স্বাধীনতার জন্য। ভাই ও বোনেরা নিজেদের জীবন এই মুক্তির জন্য উৎসর্গ করে রেখে গিয়েছেন। ত্রিশ লক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে বিনিময়ে পাওয়া এই স্বাধীনতা…..

আমি একজন নারীর কথা জানি –
যিনি একটা পুকুরের পাশে কাপড় কাচছিলেন,
সেই পুকুরে পানার নিচে কোনো রকমে নাক ভাসিয়ে লুকিয়ে ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। মিলিটারি বলল, মুক্তি কিধার হ্যায়, নারীটি বললেন, দেখিনি,
মিলিটারি চলে যাচ্ছিল, হঠাৎ নড়ে উঠল পানা,
মিলিটারি গুলি করে মেরে ফেলল সেই নারীটিকে…..
এক নারী ভোরবেলা গ্রাম্য কুটিরের দুয়ারে বসে কোরআন শরিফ পড়ছিলেন, ভেতরে ছিল মুক্তিযোদ্ধারা, পাকিস্তানি মিলিটারি ওই ঘরের দুয়ার থেকে ফিরে গেল, মুক্তিযোদ্ধা নিরাপদে সরে গিয়ে আক্রমণ করল পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর,
ফেরার পথে মিলিটারিরা জ্বালিয়ে দিল ওই বাড়ি,
শহীদ হলেন সেই নারী…..
আমি একজন বাবার কথা জানি –
তাঁর একমাত্র ছেলে নারায়ণগঞ্জে অপারেশনে এসে শহীদ হলো। মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে সেই খবর দিল, কাকা, আপনার ছেলে শহীদ হয়েছে।
তিনি কাঁদতে লাগলেন। বললেন, আমি এ জন্য কাঁদছি না যে আমার একমাত্র ছেলে শহীদ কেন হলো ?
আমি কাঁদছি এই জন্য যে আমার কেন একটা মাত্র ছেলে। আজ আরেকজন ছেলে থাকলে তো আমি তাকে যুদ্ধে পাঠাতে পারতাম।
আমি একজন বোনের কথা জানি –
একাত্তরে তার পেটে গুলি লেগেছিল। তাকে নেয়া হয়েছিল আগরতলার হাসপাতালে।
রক্ত দরকার। রক্ত জোগাড় করা যায়নি,
ডাক্তারের হাত ধরে সেই বোন বলেছিলেন, দাদা, আমি তো মারা যাচ্ছি,
আপনি কথা দেন যে দেশটাকে স্বাধীন করে যাবেন।
আমি একজন মায়ের কথা জানি –
তাঁর একমাত্র ছেলে আজাদ যুদ্ধে ধরা পড়ার পর তাঁর কাছে ভাত খেতে চেয়েছিল। মা বলেছিলেন, শক্ত হয়ে থেকো বাবা, কোনো কিছু স্বীকার করবে না।
মা ভাত নিয়ে গিয়েছিলেন রমনা থানায়।
ছেলের দেখা পাননি। এই মা আরও ১৪ বছর বেঁচে ছিলেন। আর কোনো দিনও ভাত খাননি…..
আসলে স্বাধীনতার ইতিহাস লিখে শেষ করা যাবেনা। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এই রেসকোর্স ময়দানে রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করব। তিনি তাঁর কথা রেখেছেন…..
আমরা পেয়েছি দেশ পেয়েছি ভাষা আমরা পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা পেয়েছি স্বাধীনতা।

আমাদের তাই করতে হবে যা আমাদের সবার ভেতরে আছে দেশের জন্য ভালোবাসা। নিজেকে আলোকিত করতে হবে ১৬ কোটি প্রাণে যদি আলো জ্বলে ওঠে
আলোয় আলোয় ভরে উঠবে এই দেশ। নিজেদের গড়ব আমরা ন্যায়ের পথে চলব অন্যায়ের প্রতিবাদ করব, সত্যের জন্য লড়বো। আমাদের কষ্টের অর্জিত এই স্বাধীনতা আমরা রক্ষা করবো………..!!

লেখা : ফারজানা শারমিন

r:আমার দেখা ব্লগের সাড়ে তিন বছরঃ ব্লগারদের ধরণ-

আমি নিজে বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরিয়া। এই বেশ একটা সময়ে নানা ধরনের ব্লগারের দেখা পাইয়াছি। তাহাদের নানা ধরণ লইয়াই আজকের পোষ্ট!

বাংলা ব্লগে মোটামুটি পাঁচ ধরনের ব্লগার আছেন। (মতান্তরে ছয় ধরনের)। যাহারা সবাই নিজ নিজ স্থান থেকে ব্লগে উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে যাইতেছেন।

১. আম জনতার ব্লগারঃ
ইহারা রেগুলার পোষ্ট করিয়া থাকেন, কখনো দিনে দুইটা কিংবা তিনটাও হইয়া যায়। অন্যের ব্লগে মন্তব্য করিয়া থাকেন, নিজের ব্লগেও মন্তব্যের জবাব দিতে বিলম্ব করেন না। খুঁজে খুঁজে অন্যের পুরানো লেখায়ও মন্তব্যে করেন। ইহারা মোটামুটি আমুদে, তেমন কোন কাজকর্ম ইহাদের থাকে না বলে ইহারা সারাদিন ব্লগে পড়ে থাকতে পারেন।

২. জনতার মাঝে নির্জনতার ব্লগারঃ
ইহারা শুধুমাত্র নিজের পোষ্টে মন্তব্য পেলে অমনি ধরে সেটাতে উত্তর দেন। অন্যের পোষ্টে মন্তব্য করেন না। ইহারা এক সময়ের সেলিব্রেটি ব্লগার ছিলেন, তবে এক্ষন আর তাহাদের ব্লগে মাক্ষীও বসেন না।

৩. উদাস ব্লগারঃ
ইহারা যে কবে কোনদিন ব্লগে লগিন দিয়েছিল ভুলিয়া যান, যখন মনে হয় অনেকদিন ব্লগে যাওয়া হয় না তখন পোষ্ট দিয়ে সাথে সাথেই আবার লগ আউট করিয়া দেন এবং ইহা নিশ্চিত থাকে যে আগামী ঈদের চাঁদ দেখিবার পূর্বে তাহাদের মুখ আর দেখা যাইবে না।

৪. ওয়াচম্যান ব্লগারঃ
ইহারা সারাদিন সারারাত ব্লগে লগিন দিয়ে থাকেন– কিন্তু না কোন পোষ্ট করেন, না কোন মন্তব্য করেন- না কারও লেখায় লাইক দেন ! ইহারা যে কাহার উপর এমন অভিমান করিয়া থাকেন আর কে যে আসিয়া উহাদের রাগ ভাঙ্গাইবেন তাহা কেহ না জানে।

৫, আপদকালীন সময়ের ব্লগারঃ
ইহাদের নাম যেমন উদ্ভট হয় কাজকর্মও তেমন উদ্ভট হয়। সারা বছর এদের কোন হদিস থাকে না, কিন্তু যদি দেখা যায় যে ব্লগে কোন ধরনের কোন ক্যাচাল লাগিয়াছে তাহলেই কেবল ইহাদিগকে দেখা যায়। এরা যে কে কার পক্ষ হয়ে কথা বলে সেটাও বোঝা দায় ! ইহারা যে মাল্টিধারী ব্লগার তাহা বুঝিতে রকেট সায়েন্স পড়িতে হয় না।

ইচ্ছাময়ী

চাইবো না কিছুই
তুমি জানো তোমার সকালের
সুন্দর ইচ্ছার কাছে নতজানু মন
ইচ্ছাময়ী ঘ্রাণের বাগান
আমি একবার দুইবার তিনবার
শতবার বিচরণ করছি পবিত্র জমিনে।

আকাশের দিকে চেয়ে আছো
খানিকবাদেই বৃষ্টি হবে
নতজানু বর্ষা তোমার আরাধনায়
কেটেছে পথহারা কতো প্রহর
অখন্ড মানচিত্রের ভালোবাসা সিক্ত হ্নদয়ে
কিম্বা একটি সন্তান হবে তিস্তাপুত্র,
তোমার কোলে ইচ্ছাময়ী ফসল
আমার পানি আমাকে ফিরিয়ে দাও
চাইবো না কিছুই
ইচ্ছাময়ী ঘ্রাণের বাগান ছাড়া!

হরেক রকম ফুল ফুটবে
শিউলী গোলাপ বকুল
প্রিয়তমা,তোমায় বকুল ফুলের মালা দেবো
নাকে নাক ফুল রেশমী চুড়ি
নুপুরের রিনিঝিনি আর যখন চুল ছুঁয়ে দেবো
সাপের বেণী হয়ে যাবে তুমি,

ইচ্ছাময়ী তুমি আমার হয়ে যাও
নতুবা পুড়িয়ে দেবো তোমার জরায়ুর ক্যাম্প।

ফেসবুকের লাইক কমেন্ট সাহিত্যের গুণমান নির্ধারণ করে না

বিতর্ক – বিপক্ষে
______________

কোন লেখা কিংবা ভাবনা অথবা ছবি আমরা কেন ফেসবুকে পোস্ট করি? লাইক কমেন্ট পাওয়ার জন্য। তাহলে লাইক কমেন্ট লেখার গুণমান নির্ধারণ করবে না কিভাবে? ছবির মর্যাদা বাড়াবে না কিভাবে?

যে লাইক কমেন্টের জন্য হা-পিত্যেশ করে বসে থাকি, লেখাটি পোস্ট করে একটু পরে পরে ফেসবুক খুলছি আর বন্ধ করছি শুধু লাইক কমেন্ট দেখার জন্য, ধন্যবাদ জানানোর জন্য সেখানে লেখার গুণমান কিভাবে নির্ধারিত নয়?

যে লেখে সেইই জানে তার লেখা কেমন। পোস্ট করার সাথে সাথে তার লেখায় লাইক কমেন্টের উপর সে আন্দাজ করতে পারে লেখাটি কেমন। নেট খরচ করে না পড়ে লেখায় কমেন্ট বা লাইক দেয় দু চার শতাংশ। তাও মুখ চেনা কিংবা পরিচিতির জন্য। বাদ বাকী অনেকেই না পড়ে লাইক দিলেও কমেন্ট করে না।

তাছাড়া কমেন্টের মধ্যে কিছু কমেন্ট অসাধারণ দারুণ খুব ভালো ইত্যাদির বাইরেও কিছু বিরূপ কমেন্ট থাকে। যা দেখে লেখক ঠিক বুঝে নেয় তার কী করা উচিত। বেশির ভাগ লেখক নিজেদের ইয়ে ভাবে। তারা যা লেখে তাই ঠিক এবং সেরা। সেসব হাতে অবশ্য গোনা। যারা সবে শিখছে লিখছে আর ভালো লিখতে চায় তাদের জন্য এই ফেসবুকের লাইক কমেন্ট আশীর্বাদের মত। চেনা নেই জানা নেই শুধু লেখা পড়ে নেট খরচ করে যে একটা লাইক দিল একটা ছোট্ট কমেন্ট ‘দারুণ’ লিখল সে আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়।

আর একটু বিরূপ কমেন্ট করলে আরও বেশি আনন্দ হয় যে তিনি লেখাটি পুরো পড়েছেন তাই আমাকে লেখক হিসেবে গ্রাহ্য করেন না। বা আমার লেখাটি সাহিত্য নয়। কিংবা লেখাটিতে কোন লাইক কমেন্ট নেই তার মানে আমি আমার লেখাটি সাহিত্যের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারি নি। তাহলে গুণমানের হিসেবে লাইক কমেন্ট একশত ভাগ এগিয়ে।

আর যারা সুখ্যাত বিখ্যাত লেখক সাহিত্যের ধারণ বাহক মনে করেন তারা লাইক কমেন্টের আশা যেমন করেন না, তেমনি তাদের বই বিক্রি নিয়েও তারা ভাবেন না। তারা লিখতেই থাকেন। আর ফেসবুকে পোস্ট করেন অথবা করেন না।

শেয়াল ও বুদ্ধিজীবী

একবার এক বুদ্ধিজীবী বনের পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে একদল শেয়ালের সাথে উনার দেখা হয়ে গেল। এত শেয়াল দেখে তিনি ভয় পেয়ে গেলেন। তিনি দৌড়ে পালাবেন কিনা সেটা ভাবতে ভাবতে দেখলেন, সে পথ নাই। পেছনের দিকেও আরো একপাল এসে হাজির হয়েছে। এত শেয়াল দেখে তাঁর ভিরমি খাওয়ার উপক্রম। তিনি ঠিক কোন দিকে দৌড় দিবেন সে সিদ্ধান্ত নিতে নিতে তারা তাঁকে চারদিকে ঘিরে দাঁড়াল। এই প্রেক্ষিতে কি করনীয় সেটা নির্ধারণে তিনি তাঁর উৎকৃষ্ট মগজ হাতড়ে কোন উপায় বের করতে পারলেন না। ভয়ে নিজের চোখ বন্ধ করে নিজেক শেয়ালের পালের হাতে সমর্পণ করে দিলেন।

দীর্ঘক্ষণ চক্ষু বন্ধ রাখার পরে দেখলেন নিজের উপর কোন ধরনের আক্রমন এমন কি আঁচড়েরও আভাস পাওয়া গেল না। তখন তিনি চোখ খুললেন। খুলে দেখলেন, সব শেয়াল সামনের ডান পা কপালে তুলে তাঁকে স্যালুট দিচ্ছে। তাদের মধ্যে নেতা শেয়ালটি সামনে এসে বলল, হে মহাজন, আপনি আমাদের সালাম গ্রহন করুন।
আমরা শেয়াল নিখিল বাংলার
সকলেই আপনার ফলোয়ার
বাকী শেয়ালগুলা বলল, হুক্কা হুয়া, হুক্কা হুয়া, হুক্কা হুয়া।
শেয়ালদের ধ্বনিতে আকাশ বাতাস বন বাঁদাড় মুখরিত হল। মাননীয় বুদ্ধিজীবির দেহে প্রাণ আসল। তিনি হাত তুলে তাদের সালাম গ্রহন করলেন।

সহসা, এক শেয়াল চিৎকার দিয়ে উঠল। বাঘ, বাঘ আসছে বাঘ। সাবধান! সাবধান!! শেয়ালগুলো সব এদিক সেদিক পালাতে লাগল। এদিকে বুদ্ধিজীবী সাহেব মরিয়া হয়ে বললেন, আমাকে রেখে যেওনা। প্লিজ।‘
শেয়ালনেতা, দাঁড়িয়ে বলল, হুজুর একটা কাজ করুন, আপনি সমস্ত কাপড় চোপড় খুলে দাঁড়িয়ে থাকুন। ভাল হয় যদি, ন্যাংটা হয়ে গাছের ডালে ঝুলে থাকেন। বাঘেরা ন্যাংটা মানুষ দেখেনি কোনদিন। সে আপনাকে ভূত ভেবে আর কিছু করবে না। বলে সেও লুকিয়ে গেল।

তখন মাননীয় বুদ্ধীজীবি মহাশয় আর কি করবেন, কাপড়-চোপড় সব খুলে সম্পূর্ন নগ্ন হয়ে আদি ও আসল চর্ম সম্বল করে গাছের ডালে ঝুলে পড়লেন।

পাশের গাছে দুষ্ট বান্দরেরা তখন হাসতে লাগল।

কারাবন্দীর কান্না

একটি নদীকে ভালবেসেছি
দু’পাড়ে ছিল তার সুখের নীড়
সেই নদীর পাড়ে নীল আকাশে
নিঝুম দুপুরে গাং চিলেরা করত ভিড়।

কলসি কাঁখে সন্ধ্যা বেলা সে
শামুকের ঘুঙ্গুর বেধে পায়
জল নিতে আসতো ঘাটে
আঁচল উড়িয়ে দখিনা বায়।

সখীদের সাথে হেসে-খেলে,
দু’গালে টোল ফেলে
মুক্ত বলাকার মত চঞ্চল পায়ে
ফিরে যেত বাঁধানো তুলসী তলে।

সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বেলে ঘরে
আঁচলে জড়িয়ে দেহলতা
প্রণাম সেরে দেবতায় নীরবে
কি বর চাইতো, জানি সে কথা।

সে ছিল আমার মানসী,
শান্ত নদীর বালুকা বেলায়
তারই সাথে বসে দু’জনে
স্বপ্ন সাগরে ভেসেছি কত স্বপ্ন ভেলায়।

চন্দন টিপে আর সিঁদুরে সেজে
শ্বেত-শুভ্র শাখা হাতে
আসবে সে ঘরে পথ খুঁজে।
ভরে দিবে আমার আঙ্গিনা,
মন মাতানো গন্ধ বিধুর ধুপে
বসন্ত বাসর ছুটে আসবে
দুয়ারে রিনিঝিনি সুরে।

মানুষের সাথে মানুষ হয়ে
ঘর বাধবো মানুষের মত
আমি আর মালতী
মুছে দিব দু,জনার বেদনা যত।

সোনালী প্রেমের বাগানে
ফুটবে নতুন কুড়ি,
বনে বাদারে ঘুরে কুড়িয়ে
আনবে ভরে ফুলের ঝুড়ি।

বসন্ত না আসিতে কাল বৈশাখী
এলো জাতের ঝড় তুলে
হিন্দু মুসলিম আর বৌদ্ধ খৃস্টানের
মিথ্যে ভেদাভেদে মানুষের জাত ভুলে।।

মম চিত্তে নিতি নৃত্যে -[২৭]-২৭

কথা বলতে বলতে বাস ছেড়ে দিল। বুদ্ধি পরামর্শ বা চিন্তা ভাবনা যা করার তা গত রাতে আর আজকে ঝিটকা আসার পথেই নিশাত ভেবে নিয়েছে। বাস মানিকগঞ্জের কাছে আসার পর পাশে বসা নিরুকে জানিয়ে দিয়েছে পরবর্তীতে কি হতে যাচ্ছে। নিরুকে শুধু জিজ্ঞেস করেছিল
কাল যদি বিয়ে হয় তোমার আপত্তি আছে?
নিরু চুপচাপ। কোন উত্তর নেই
কি হলো কিছু বলছ না
কি বলব?
কি করবে তাই বল নয়ত যা বলেছি তার উত্তর দাও
আপনার যা ইচ্ছা তাই করেন তবে কোন পাগলামি করবেন না
পাগলামি কিসের? আমি বুঝতে পারছি না! ব্যপারটাতো আর একদিনের ঘটনা নয়, গত প্রায় সাতটা বছর ধরে চলছে এইটুক মনে পরছে তবে এর আগে কতদিন ছিল তা এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না। কেউ জানে না বলে কি তুমিও জান না? বাজে কথা রেখে যা জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দাও!
বললামতো আপনার যা ইচ্ছে তাই করেন!

নিরু জানালার বাইরে মুখ ঘুড়িয়ে বসে রইল। বাসে আর কোন কথা হয়নি। সোবহান বাগ নেমে বীণা আপার বাড়িতে নিরুকে পৌঁছে দিয়ে বাইরে থেকেই চলে এসেছিল। নিজের বাসায় না গিয়ে সেন্ট্রাল রোডে মেঝ মামার বাসায় এসে মামাকে খুঁজছিল। মামা বাসায় নেই। মামির সাথে আলাপ করছিল। মামি জিজ্ঞেস করল হঠাৎ করে চলে এসেছিস, কি ব্যাপার? ইত্যাদি নানা কিছু। অনেকক্ষণ পরে মামা বসায় ফিরেই দেখে নিশাত বসে আছে।
কিরে ব্যাটা কি খবর, কবে এসেছিস?
মামা একটা জরুরী কাজে চলে আসতে হলো তবে আবার সামনের জানুয়ারিতে চলে যাব।
কি এমন জরুরী কাজ?
বাসায় চলেন, মাকে বলেন তার বৌ নিয়ে আসার জন্য
কি বলছিস?
কাজলের কথা থেকে শুরু করে নিরুর কথা সব খুলে বলল মামাকে। বলল মামা আপনি আর মা কাল নিরুর বোনের বাড়িতে যেয়ে নিরুকে দেখবেন এবং ওর দুলাভাইকে বা অন্য কাউকে বাড়ি পাঠাবেন যেন চাচা চাচীকে নিয়ে আসে। সন্ধ্যায় তাদের মেয়ের বিয়ে হবে
দাড়া দাড়া! কি বলছিস তুই, আমি কি স্বপ্নে দেখছি? একটু খুলে বল!
নিরুর সাথের সমস্ত ঘটনা খুলে বলল এমনকি আজকের ওর দুবাই থেকে এখানে আসার কারণটাও যে নিরু সে কথাও খুলে বলল।
সব শুনে মামা বলল আচ্ছা সবই বুঝলাম কিন্তু একটু সময় দে, এখন রাত বাজে নয়টা এই সময়ের মধ্যে কি করব?
না মামা আপনাকে কিছু করতেই হবে। না হলে এইযে দেখেন আমার পকেটে টিকেট আমি জানুয়ারি মাসে লন্ডন চলে যাব আর কোন দিন ফিরব না! ভেবে দেখেন কি করবেন! বলেই পকেট থেকে টিকেট বের করে মামার সামনে মেলে ধরল।

মামি পাশেই ছিল। মামি নিশাতকে সমর্থন করে বলল তুমি যাও, আপার ওখানে খেয়ে দেয়ে আপা দুলাভাইকে বুঝিয়ে বলে রাজী করিয়ে ছেলে যেমন বলছে তেমন ব্যবস্থা করে আস।
আচ্ছা আপা দুলাভাইকে না হয় রাজী করালাম কিন্তু মেয়ের বাবাকে কে রাজী করাবে?
দুলাভাই যদি প্রস্তাব পাঠায় তাহলে ওরা কেউ অরাজি হবে না! এটা আমার বিশ্বাস। একই গ্রামের ছেলে মেয়ে। তাছাড়া ওদের কি একটা আত্মীয়তাও আছে। কাজেই বাছ বিচারের কি আছে? তাছাড়া তুমি ওই মেয়েকে দেখনি? নিরু! দুই জনে খুব মানাবে, যেমন আমাদের ছেলে তেমন মেয়েটা। কি লক্ষ্মী মেয়ে! দেখতে যেমন সুন্দর তেমন লেখাপড়া, বাধা কোথায়? তুমি এক্ষণি ওকে নিয়ে যাও।
শুধু এক পক্ষ দেখলেইতো হবে না!
আমাদের ছেলে কম কিসে?
দেখি বেটা চল

ড্রাইভার চলে গিয়েছিল বলে মামা নিজেই ড্রাইভ করে মতিঝিলে পৌঁছল। বাসায় যেয়ে এদিকে নিশাত পোশাক বদলাচ্ছিল ওদিকে মামা তার আপার কাছে খাবার চাহিদা জানাল।
কিরে জামিল তুই নিশাতকে কোথায় পেলি?
নাতো কোথাও পাইনি, এইতো তোমাদের সিঁড়িতে দেখা।
ও আচ্ছা,
একটু পরেই নিশাত চলে আসল। টেবিলে ভাত নিয়ে মা অপেক্ষা করছিল। মামা বলল, আপা একটা কথা বলি?
বল
নিশাত যখন এবার এসেছে তাহলে একটা বৌ নিয়ে আস!
হ্যাঁ আমিও বলছিলাম কাল সকালে
কি বলছিলে? মেয়ে দেখেছ? কে?
ওই যে রায়হান ভাইয়ের মেয়ে কাজলের কথা!
না আপা, আমার মনে হয় সোবহান বাগে থাকে তোমাদের ভাতিজি বীণা, ওর বোন আছে না একজন, কি যেন নাম!
কে! নিরুর কথা বলছিস?
হ্যাঁ হ্যাঁ নিরু, আমার মনে হয় নিরুকে মানাবে ভাল তাছাড়া ওরাতো একই এলাকার একই গ্রামের
না, তা কি করে হয়! এত দিন ধরে জানাজানি চলছে যদিও কথা দেয়া নেয়া হয়নি কিন্তু ভাবে সাবে এটা পরিষ্কার যে কাজলই এ বাড়ির বৌ হবে। এমন একটা অলিখিত কথা দুই সংসারে সবাই জানে এমন সময় হুট করে কি কিছু করা উচিত হবে?
দুলাভাই জানে, তার কি মত?
সে জানে, তারও একই মত
ছেলে কিছু বলেছে কখনও?
ও আবার কি বলবে? আমরা যা বলব তাই ওর কথা!
না আপা, এটা হয় না। আজকাল এ কথা তুমি বলতেই পার না। আজকাল সবারই নিজস্ব কোন মতামত অবশ্যই থাকতে পারে আর তোমাদের তা নিয়ে ভাবতেও হবে! সে যুগ আর নেই।
ওকে জিজ্ঞেস করে দেখ, কি বলে!
আপা, তোমরা রায়হান ভাইদের কিছু বলেছ?
না, আনুষ্ঠানিক ভাবে এমন কিছু বলা হয়নি তবে ঈদে বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাজলকে কাপড় চোপর দেয়া বা তেমন করে আদর আহ্লাদ করা যা এত কাল চলে এসেছে সেসব কি ইচ্ছে করলেই বাদ দেয়া যায়? নারে জামিল আমার কেমন যেন লাগছে! তুই হঠাৎ করে নিরুর কথা বলছিস কেমন করে তুইতো ওকে ভাল করে চিনিস না, তাহলে?

কে বলেছে চিনি না? খুব ভাল করেই চিনি! সিরাজ বেয়াইর মেয়ে, ওই যে মুন্নির বিয়েতে এসেছিল সেই মেয়ে। ওকে সেই ছোট বেলা থেকেই চিনি না? বড় হবার পর মুন্নির বিয়েতে দেখলাম, সেদিন দেখেই আমি নিশাতের কথা ভেবে রেখেছি। হ্যাঁ কাজলও ভাল মেয়ে আমি অস্বীকার করছি না কিন্তু নিশাতের জন্য ওর চেয়ে নিরুকেই মানায় ভাল। আমার যতদূর ধারনা মানে ওদের দেখে যা মনে হয়েছে তাতে মনে হয় ওরা উভয়েই উভয়কে পছন্দ করে!
তুই কেমনে জানলি?
আচ্ছা আপা বলতো আমার বয়স কি কম হয়েছে?
ঠিক আছে কিন্তু কাজলের কি হবে? ওর মা বাবার কাছে মুখ দেখাব কেমন করে?
বা রে! তোমরা কেউ কাওকে কোন কথা দাওনি, কারও সাথে এ ব্যাপারে কোন আলাপ হয়নি অথচ তোমরা ভেবে অস্থির হচ্ছ কেন বুঝতে পারছি না!
কি জানি দেখ তোর দুলাভাইয়ের সাথে আলাপ করে
সারারাত ধরেই জাহিদের মামা আর মা বাবার সাথে এই নিয়ে কথা কাটা কাটি চলল। এক সময় মসজিদে আজানের সুর ভেসে এলো। শেষ পর্যন্ত মেঝ মামাই জয়ী হলো।
আমি এত কিছু পারব না। আমি এখন নিশাতকে নিয়ে ওদের বাড়ি যাচ্ছি এবং বৌ নিয়ে আসব যা করার আপনারা করে রাখবেন বলে মামা বের হয়ে গেল যাবার আগে দুলাভাইকে বলে গেল আমি এখনই আসছি আপনারা রেডি হয়ে থাকেন।

সকালে ঠিক সাতটায় মামা এসে হাজির। নিচে গাড়ি রেখে উপরে এসে হৈ চৈ। কি ব্যাপার দুলাভাই আপা আপনারা রেডি হননি কেন? তাড়াতাড়ি করুন। দশ মিনিটের মধ্যে রেডি হবেন।
অগত্যা মা বাবা নিম রাজি হয়েই মেঝ মামার সাথে গাড়িতে উঠে বসল। সবাইকে নিয়ে বীণা আপার বাড়ি। কবির দুলাভাই সাত সকালে এদের দেখে বেশ অবাক!
ও! মামা! কি ব্যাপার আপনারা এই সকাল বেলা!
বুঝবে বুঝবে একটু পরেই বুঝবে। বীণা কোথায় ওকে বল নাশতা বানাতে আমরা কেউ বাসা থেকে খেয়ে আসিনি।
সে হবে, এ তো ভাল কথা! বীণা দেখ কারা এসেছেন! নাস্তা রেডি কর।
নিশাতের মা ভিতরে যেয়ে হাতে আটা মাখা হাত ধরে নিরুকে বসার ঘরে এনে সোফার মাঝখানে বসিয়ে নিজে তার পাশে বসল। পিছনে বীণা আপাও আসল। মামা বলল আপা দুলাভাই আপনারা মেয়ে দেখেন। বীণা আপা এবং কবির দুলাভাই হতভম্বের মত তাকিয়েই আছে! হচ্ছে কি এসব!
মামা বলল, কবির শোন, মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়েছে তুমি বাড়িতে কাউকে পাঠিয়ে দাও তোমার শ্বশুর শাশুড়িকে নিয়ে আসবে।
মামা কি বলছেন আমি বুঝতে পারছি না
বুঝবে একটু পরেই বুঝবে, তোমার শ্বশুর শাশুড়িকে নিয়ে আস তারপরে সব বুঝবে। আমাদের বৌ নিয়ে তোমার শ্বশুর কোথায় বিয়ে দিচ্ছে? যাক তাদের আনার ব্যবস্থা কর তারা এলে তখন বুঝবে।
দুলাভাই কিছুটা অনুমান করতে পেরে বলল
কাকে পাঠাব! আমাকেই যেতে হবে কিন্তু আমার যে অফিসে খুব জরুরী কাজ আছে!
আচ্ছা ঠিক আছে তুমি একটা চিঠি লিখে ড্রাইভার দিয়ে গাড়ি পাঠিয়ে দাও, আমার গাড়ি নিয়ে তুমি অফিসের জরুরী কাজ সেরে তাড়াতাড়ি চলে আস, আমরা আজ এখানেই থাকছি। বৌ নিয়ে তবে আজ আমরা এখান থেকে যাব। সাহস কত! আমাদের বৌ নিয়ে তোমরা এদিক ওদিক দেখাচ্ছ! তোমার শ্বশুর পেয়েছে কি?
আচ্ছা মামা! সবই হবে কিন্তু আমাকে একটু বুঝিয়ে বলুন কি হয়েছে, কি করতে চাইছেন? আমি এখনও পরিষ্কার করে বুঝতে পারছি না!
কেন বুঝতে পারছ না? তোমার এই শ্যালিকা নিরুকে আমরা আমাদের নিশাতের জন্য নিতে এসেছি। এত সকালে কোন মিষ্টির দোকান খুলেনি বলে মিষ্টি আনতে পারিনি, একটু পরে আমি যাচ্ছি মিষ্টি আনতে। ও ভাল কথা, গাড়িটা একটু পরে যাক, মিষ্টি পাঠাতে হবে। আর তুমি একটু পরে যাও আমার ড্রাইভার আসবে এখানে। আমরা কেউ কোথাও যাচ্ছি না।

ওইদিন বিকেলে নিরুর বাবা, মা, চাচা, শিহাব, মইন চাচা, তমাল ওরা সবাই আসল। যুঁই মিরপুরে শ্বশুর বাড়িতে ছিল বলে তখন আসতে পারেনি তবে ফোন করে বিকেলে আনান হয়েছিল। নিরুর দুলাভাই দুপুরের মধ্যেই অফিস থেকে ফিরে এলে মামা বীণাকে তার চাচীকে সাথে নিয়ে রান্না বান্নার আয়োজন করতে বলে নিরুকে নিয়ে মতিঝিল গেল। ওখান থেকে নিশাতকে নিয়ে নিউমার্কেটে এসে নিরুর পছন্দমত শাড়ি ব্লাউজ, পাঞ্জাবি শেরওয়ানি এবং অন্যান্য কেনাকাটা করে মতিঝিলের বাসায় নিশাতকে রেডি হবার জন্য নামিয়ে দিল। নিশাত মামাকে একটু অপেক্ষা করতে বলে বাসায় গিয়ে তারাহুরো করে এতদিন ধরে জমান নিরুর জন্যে কেনা নানান কিছু থেকে যা তখন চোখে পরল একটা সুটকেস ভরে নিচে এনে মামার গাড়িতে তুলে দিল। মামা ওখান থেকে সোজা বীণার বাড়িতে আসল এবং নিরুকে বিয়ের পোশাক পড়িয়ে রেডি করতে বলে আবার মতিঝিলে এসে নিশাতকে বিয়ের পোশাক পড়িয়ে বীণা আপার বাড়ি নিয়ে কবির দুলাভাইকে কাজী আনতে পাঠাল।
নিরুকে সাজাবার সময় যূঁই নিরুর কানে কানে বলছিল তুই খুব ভাগ্যবতী, নিশাতের মত বর পেয়েছিস। নিশাত খুব ভাল ছেলে কত দিন থেকে দেখছি। তোর ছোট বেলা থেকেই কেন যেন আমার মনে হোত তুইই হবি নিশাতের বৌ এই জন্যেই তোকে সবসময় অমন করে বলতাম, এখন বুঝেছিস? নিশাতকে বলবি বৌর জন্য এত কিছু এনে রেখেছে আর আমার ঘটকালির শাড়ি কোথায়?
দুলাভাই কাজী আনতে যাবার পর নিরুর বাবার সাথে মামা আলাপ শুরু করল। নিরুর বাবা সামনের পরীক্ষার জন্য একটু আপত্তি জানিয়েছিল কিন্তু মামার আপত্তির কাছে তার আপত্তি টিকেনি। ওই রাতেই বিয়ে পড়িয়ে বৌ নিয়ে চলে এলো।

আকাশে চন্দ্র সূর্য এবং অগণিত তারকা অসংখ্য বার উদয় হয়ে আবার অস্ত গেছে, অনেক প্রতীক্ষার দুঃসহ লগ্ন পেরিয়ে গেছে দূর মহা সাগরের ওপাড়ে। নিরুর জীবনের অনেক গুলি নির্বাক বসন্ত কাউকে না জানিয়ে নিরুর চোখের নোনা জল বয়ে নিয়ে গেছে সেই কোন অচেনা সুদূর নীল জলের নীল মহাসাগরের অতলে যে সাগরে তার নিশাত ঘুরে বেড়ায়। নিরুর চোখের জলে মহাসাগরের সব জল নোনা হয়ে গেছে, নিরুর একটু খানি ছোট্ট অবুঝ হৃদয়ে যখন নিশাতের জন্য বিশাল হাহাকারের ঢেউ উত্তাল সাগরের উত্তাল তরঙের মত আছড়ে পরেছে এবং নিশাতের অনেক চাওয়া, অনেক সাধনা, অনেক প্রতীক্ষা, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আজ ছোট্ট দুটি অবুঝ মন এক হয়েছে। দুটি মন, দুটি আত্মা, দুটি হাহাকার, দুটি অবুঝ মনের আকুতি এক হয়ে মিশে গেল চির দিনের তরে স্বর্গিয় আবেশ পাওয়ার জন্য। শুরু হলো তাদের নতুন যাত্রা অনন্ত কালের জন্য। এ যাত্রা শুধু সমুখ পানে এগিয়ে যাবার।

সকল আনুষ্ঠানিকতা সেরে যখন নিশাত বাসর ঘরে ঢুকল তখন নিরু বলল’
বান্ধবীরা কেউ জানল না, গায়ে হলুদ নেই হাতে মেহেদি নেই, সারা জীবন মেহেদি পরিনি আমি কত ভেবে রেখেছি বিয়ের দিন হাতে মেহেদি পরব আর তুমি কি করলে এটা? এই ভাবে কারো বিয়ে হয়? সারা জীবন এমন পাগলামি করেছ তুমি!
(যারা নিরু আর নিশাতের বিয়েতে নেমন্তন্ন পাননি তারা কোন আফসোস করবেননা প্লিজ! হঠাত করে বিয়ে হয়ে গেলতো তাই, তবে বিবাহ বার্ষিকীতে মনে করিয়ে দিলে নেমন্তন্ন দেয়ার অনুরোধ করব। সবাই মিলে দারুন মজা করব। কি বলেন?)
আজ এখানেই ইতি টেনে দিলাম। সবাইকে ধন্যবাদ, যারা এতদিন ধরে ধৈর্য ধরে সাথে ছিলেন। আবার দেখা হবে মেগা সিরিয়াল “নক্ষত্রের গোধূলি” এর সাথে।