বিভাগের আর্কাইভঃ কবিতা

আকাশ ছুঁয়ে আছে বিজয়ের পতাকা

320

আকাশ ছুঁয়ে বিজয়ের পতাকা উড়ে, হাসে বিজয় কন্যা দেশ
চারিদিকে সুর কলরোল বইছে সুখের আবেশ
আকাশে কুয়াশায় বিজয়ের সবুজ লাল আছে ছড়িয়ে,
টুপটাপ শিশিরের শব্দে বিজয়ের হাসি পড়ছে ঐ গড়িয়ে।

আকাশ জানে বিজয়ের জন্য লড়ে যাওয়া মানুষের গল্প
এই প্রজন্ম ভেবো না রক্তের বিনিময়ে কেনা দেশ নয় কথা কল্প;
রক্তে ভিজেছিলো ঘাস লতা পাতা,
তবেই না খুলতে পেরেছি আমরা বিজয়ের খাতা।

লাল সবুজ পতাকা এমনি এমনি যাই নি পেয়ে,
লক্ষ শহীদের রক্তে কেনা দেশে তাই পারছি যেতে আনন্দের গান গেয়ে
এখানে পরাধীনতা ছিল, এই আকাশ ছিল পাকদের দখলে,
আমরা লড়েছি আবাল বৃদ্ধ বনিতা একসাথে সকলে।

আজ বিজয়ের সুরে মিলাতে পারছি সুর
যদি মিলিত সুর বিজয়ে না উঠতো ঠোঁটে, বিজয় থাকতো বহুদূর
বেয়োনেটের খোঁচায় কত বাঙালী মিশেছিলো ধুলায়
তাদের প্রাণের বিনিময়েই বিজয় এলো আপন কুলায়।

কত শত মা বোনের ইজ্জত হারিয়েছে সে শুধু আকাশ জানে
একটাই লক্ষ্য ছিল বিজয় আর বিজয়, ভয় উধাও বীরেদের প্রাণে,
কত কষ্ট উপেক্ষায় ওরা বীরেরা লড়েছিল পাকিদের সাথে
তাদের কারণ বিজয় আজ আমাদের হাতে।

বিজয়ের গান গাই, হেরে গলা ছেড়ে,
আমরা বীর বাঙালী বিজয় এনেছি আকাশ হতে পেড়ে,
স্বাধীনতার স্বাদ ঠোঁটে, প্রাণে আছে দেশের মাটির ঘ্রাণ মিশে
আমরা বাঙালী চাই না হারাতে আর দিশে।

(স্যামসাং এস নাইন প্লাস,ঢাকা)

সম্পর্ক

সম্পর্কগুলোর যত্ন নিতে হয়…….
কিছু সম্পর্ক প্রকৃতিতে মিশে যায়
কিছু সম্পর্ক জন্মগতভাবে হয়,
কিছু সম্পর্ক হয় বিধাতার ইশারায়
কিছু সম্পর্কের মাঝে ভালোবাসা কথা কয়।
কিছু সম্পর্ক উচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়
কিছু সম্পর্ক আলোকিত জ্যোৎস্নায়,
কিছু সম্পর্ক থাকে কবিতার খাতায়
কিছু সম্পর্ক অমর হয়।

সম্পর্কগুলোর যত্ন নিতে হয়………
কিছু সম্পর্কে দুরত্ব তৈরি হয়
কিছু সম্পর্ক ভাঙাগড়া খেলে যায়,
কিছু সম্পর্ক হৃদয় থেকে হারিয়ে যায়
কিছু সম্পর্ক শুধু অশ্রুজলে লেখা হয়।
কিছু সম্পর্কের মাঝে অভিমান অন্তরায়
কিছু সম্পর্ক ভাসে ভুলে ভুল ধারণায়,
কিছু সম্পর্ক ফিরে না পূর্বের জায়গায়
কিছু সম্পর্কে ক্ষমা তাঁর স্থান হারায়।

সম্পর্কগুলোর যত্ন নিতে হয়………
কিছু সম্পর্কে ঈশ্বর রয়
কিছু সম্পর্ক ইতিহাস গাঁথা হয়,
কিছু সম্পর্ক বন্ধুত্বে আবদ্ধ রয়
কিছু সম্পর্কে অবিশ্বাসের বসবাস হয়।
কিছু সম্পর্ক সাম্যের গান গায়
কিছু সম্পর্ক জাগে মুক্তির চেতনায়,
কিছু সম্পর্ক থাকে স্মৃতির পাতায়
কিছু সম্পর্ক স্থির অপেক্ষায়!

সম্পর্কগুলোর যত্ন নিতে হয়
তা নাহলে নোনা জলে হারিয়ে যায়।

বিজয়ের কবিতা: আমি বিশ্বাস করি

ima

আমি বিশ্বাস করি, এই বাংলার আকাশে প্রতিদিন সূর্য উঠে,
শহিদের ঘাম আর দম নিয়ে। যে গোলাপ
আমার দিকে তাকিয়ে হাসে, অথবা-
যে শিশু সড়কে দাঁড়িয়ে কাঁদে, জানে সে ও,
এখানে একদিন মানুষের কান্নারও অধিকার ছিল না।

আমি বিশ্বাস করি, পিতারা যুদ্ধে গেলেই,
সন্তান দ্রোহী হয়।
মায়ের আঁচলে হাত মুছে যে মেয়ে স্ট্যানগান
তুলে নেয় কাঁধে, কোনো শক্তিই তাকে থামাতে পারে না।

জানি, যারা আমাদের এখনও অন্ধকারের
গল্প শোনান, তারা ভীরু- কাপুরুষ
তারা ভুলে যান, গুহা থেকে বেরিয়ে এখন
পথে হাঁটছেন। আর পথই মানুষকে,
মহাসড়কে পৌঁছে দেয়। গন্তব্যের নিশানা দেখায়।

আমি শেষ পর্যন্ত বিশ্বাসীই থেকে যাব।
এবং এই বাংলার আকাশকে বলবো,
আমি আলোর উত্তরসূরি। একাত্তরের দহন
দেখা মানুষ। আমাকে হতাশার গল্প শোনাতে এসো না।

আজকে মহান বিজয় দিবস

recei

আজকে মহান বিজয় দিবস
খুশিতে সব দোলে,
খোকা খুকি ঘুরতে যাবে
বাবা-মায়ের কোলে।

আজকে মহান বিজয় দিবস
সালাম জানাই ভোরে,
সকল শহিদ মুক্তি সেনা
আসুক ফিরে দোরে।

আজকে মহান বিজয় দিবস
ইতিহাস যাই ভুলে,
যুদ্ধ করে আনলো বিজয়
তাঁরাই জাতির মূলে।

আজকে মহান বিজয় দিবস
একটা নতুন রবি,
এই রবিতে জেগে আছে
মুক্তিযোদ্ধার ছবি।

আজকে মহান বিজয় দিবস
দেশের সকল প্রানে,
বীর বাঙ্গালী ধনী গরীব
ভরি জীবন গানে।

কেমন আছি

index

আমি কেমন আছি ভাবতে গেলেই
চারপাশ গুলিয়ে যায়
ছোট ছোট তারা চোখের সামনে
নাচতে নাচতে বুদবুদ হয়।

কাগজ কল থেকে ছাঁটাই হওয়া দাদু
কবেই মরে ভুত হয়েছে
ধুঁকতে ধুঁকতে মরে গেছে
জুট মিল থেকে ছাঁটাই জ্যাঠা।

বিএসসি পাশ দাদা এখন সাইকেলে
রোজ কয়লা পাচার করে, সন্ধ্যেয়
চুল্লুর ঠেকে কাটিয়ে রাস্তার ধারেই
শুয়ে পড়ে রাতের তারা গোনে।

দাদার প্রেম করা বউ
এক সময়ে খুব রূপসী ছিল, আজও
জেল্লার টানে দাদার বন্ধুরা আসে, তারাই
দেখে বৌদিকে, বিরিয়ানির গন্ধে ম ম করে ওদের আকাশ।

আমি চুল্লু খেতে পারিনা, সকাল বিকেল
হরিদার চায়ের দোকান, ধারে এক ভাঁড়
ভয়ঙ্কর মিষ্টি চা, কখনো শস্তার মোবাইলে
ফেসবুকের মায়া জগৎ, বছরে একবার টেট।

স্পঞ্জ আয়রন থেকে ছাঁটাই বাবা লক্ষ
টাকা চোখে দেখেনি কোনোদিন
আমি চাকরির পরীক্ষা দিই দিতে হবে বলে
লক্ষ্মীভাণ্ডারের পাঁচশ টাকা হাত পেতে নিই।

কেমন আছি জিজ্ঞেস করলেই
গোল বৃত্তাকার ধূসর ঝালর নেমে আসে
আমার চারপাশে, আস্তে আস্তে ফেড হয়ে কালো
আমিও একসময় মিলিয়ে যাই কালোর অতলে।

অশ্রু বিভ্রান্ত

316

চন্দ্রিমা রাত, বিবর্ণ প্রান্তর ছুঁয়ে
কুয়াশাস্নাত বন হরিণীর বেদনাহত দৃষ্টি
তীব্র আর্তনাদে গগন বিদারী প্রতিধ্বনি
কেউ নেই এই সৃষ্টি কূলে; সুদূরের মেঘালয়ে
চাপা পড়া তারার হাসি, মুছে দেয় গ্লানি;
প্রেমিকার হাত ধরে প্রেমিকের স্বপ্নবানী
আড়াল জুড়ে কামনার উল্কা ঝড়! চিবুক বেয়ে
গড়িয়ে পড়ে দু ফোটা অশ্রু!

একি শুধু স্বপ্ন?
শুধুই মোহাচ্ছন্ন ঘোর?
নাকি হৃদয় খসা আকুল ভালোবাসা!
নির্বাক হরিণীর চোখে চোখ রেখে
যার উত্তর খুঁজি আজো।…

বৃষ্টিদ্রোহী

॥ক॥
নষ্ট আগুন নিয়ে কিছু লোক চলে গেল এক্সপ্রেস ট্রেন ধরে। বিচ্ছিন্ন ঘাসের
কোলে ডুবে থাকা গ্রামগুলো ঘটনার সাক্ষী হয়ে লিখে রাখলো স্বরবর্ণের শোক।
প্রতিরোধ গড়ে তোলার কোনো ক্ষমতা ছিল না বলে ভাসমান ডিঙিও মাঝির
হাত ধরে কাঁদলো পুনরায়। আমি কোনো কবি নই। তবুও পংক্তির পুনরাবৃত্তি
দেখে বৃষ্টির ঠোঁটে তুলে দিলাম কর্ণফুলীর সমস্ত জল। কানে ফুল দুলিয়ে যে
কিশোরী কবিতার জন্য সারারাত কেঁদেছিল, সে ও হেসে উঠলো ধানক্ষেতে
জোতদার কর্তৃক খোদাই করা ক্ষত দেখে। সে রাতে এই গ্রামে কেউ ঘুমোয়নি।
সবাই জেগে পাহারা দিয়েছে হলুদ ব্রিজের উত্তর-দক্ষিণ। শুধু ঘুমিয়েছিল নবীন চাঁদ।
তার সকল নির্জনতা আমাদের দিকে ঠেলে দিয়ে ভুলে যেতে চেয়েছিল
নষ্ট আগুনের খেলা। লিখতে চেয়েছিল ভাটিবোধ, মন জোড়া দেবার মজলিশি কৌশল।

॥ খ॥
যথার্থ সম্মান দিয়েই পড়ি লিখিত গানচিত্র। সুরের মালিকানায় আমার কোনো অধিকার নেই। তবুও ভাগ বসাবো বলে, হাতড়ে দেখি মেঘের তৈজস। মেঘ উড়ে
গেছে অনেক আগেই, শাদা বকের মতো পালক ফেলে সুখের বারান্দায়। আমিও পালক ভেবে কুড়িয়েছি বৃষ্টি, আর বলেছি ভিজে যাওয়া দুপুরের বিরুদ্ধেই আমার
বিদ্রোহ অমরতা পাক। কিংবা তোমাকে ভিজিয়ে দেবার মহেন্দ্রক্ষণ, সর্দি-জ্বরের
উষ্ণতায় পবিত্র হোক প্রেমের আচ্ছাদনে। ঢেকে রাখা আমার কাজ নয়, তবুও
বিভক্তির বিপরীতে বিছিয়েছি নরম উলের চাদর। চোখের ইশারায় বুঝাতে চেয়েছি,
এ নগরে বৃষ্টি যেন বারোমাস হয়। পাথরের শ্বেতশরীর, মেঘের ভ্রূণে লুকাতে লুকাতে যেন করে তোমার তালাশ। আর প্রেম-আফিম মুখে পুরে বৃষ্টিমেয়েরা
যেন বদলায় তাদের হাঁটার ভঙ্গিমা।

এই শুনছো?

31160

আহা কী যে সুন্দর আকাশটা আজ
নীলের তাকে তাকে কেবল মেঘেদের ভাঁজ,
চলো দেখে আসি আকাশ, দূরে যাই কোথাও,
এবেলা যন্ত্র শহর হতে হয়ে যাই উধাও।

কী ঝলমলে রোদ্দুর, হেমন্ত দুয়ারে নাড়ছে কড়া
রোদ্দুর আলোও নয় এত কড়া
চলো না আকাশ ছুঁয়ে আসি, হেঁটে যাই বহুদূর,
চলো গায়ে লাগাই হেমন্ত রোদ্দুর।

রোদ্দুর ছলনাময়ী জ্বলে ঐ নিভে যায়,
আমার পরানে কে যেন মিহি সুরের বাজনা বাজায়
ছাদের বাড়ীতে কই আকাশ, দেখি না যে মেঘ,
অনুভব করো প্লিজ মনের আবেগ।

মনের সুতো ছিঁড়ে গেলো
মন টিকে না ঘরে, মন যে এলোমেলো,
বন্দিত্ব আর কত বল, একঘেঁয়েমিতে ধরেছে আজ
চলো বেরোই চুলোয় যাক সাংসারিক কাজ।

কিছু মুগ্ধতা জমাবো চোখে
রেখো না আর ইচ্ছেদের রুখে,
আকাশের মেঘগুলো ওড়ছে চোখের সম্মুখে,
উচ্ছাসের ঢেউ বন্ধু বইছে বুকে।

আকাশের নীলে চলো ছড়িয়ে রাখি সুখ,
নিঃশ্বাসে শুদ্ধ অক্সিজেনে ভরি বুক
তুমি না যাও যদি, একেলা যাবো বাইরে পা বাড়িয়ে
আমি না হয় আজ যাই সুখেই হারিয়ে।

.
(স্যামসাং এস নাইন প্লাস, পীঁরেরগাঁও মিয়াবাড়ী চুনারুঘাট)

মুঠোফোন

বেশি অবসাদ এলে আশ্রয়ে যাব।
ভেতরে কেবল মালটার মতো রং
আমাকে এত প্রহর গোনায়,
বারান্দায় বসলে মৌখিক দৃশ্য শেষে
রাস্তার জ্রেবাদাগে বুক মিশিয়ে
শাদা জামার ফুলে হাঁটো, প্রতিদিন;

বিজ্ঞাপনের কাগজ মৃতপ্রায়
শিরোনামে শহর দ্বিধাহীন গল্প ছাপে
আর তন্ময় ধ্যানে সাধুর মতো
আলো নিয়ে ফেরা লাবণী চোখ
আমাকে দার্শনিক করে অথচ
মুঠোফোনের যুগে কথাহীন তুমি!

দীপন্তি, তুমি চলে যাও

Exif_JPEG_420

কতকাল আঙুল ছঁইনি, ছুঁইনি নীল রঙা ফুল।
কতকাল দেখিনি,
ভোরের শিশিরে মুখের মিছিল
লাবণ্যে ছুঁয়ে থাকা ঝরা বকুল।

দীপন্তি,
তুমি এলে, বড় দেরি করে এলে
মেঘময় আকাশ মধ্যরাতে ডাক পাঠাবে
এখন তুমি যাও, চলে যাও।

বুকের শ্মশানে এখন অসম্ভব নির্জনতা
কাঁটার ঝোপঝাড়ে মাকড়সার জাল।
সেদিনের ক্ষতটা এখনো স্পষ্ট দেখা যায়
পূর্ণিমা চাঁদের মত জ্বল জ্বল করছে।

আমাদের বাইরে বাইরে দূরত্ব বেড়েছে অনেক
কিন্তু ভিতরে ভিতরে ভাঙছে পরিত্যক্ত ঘরদালান।

মনের ভিতরে মন জমে আছে আঁধার বিস্মৃতি
ক্ষুরে ক্ষুরে খায় ঘুণ পোকা বুকের জলচকি
পড়ে আছে পরিত্যক্ত চশমা, নষ্ট ঘড়ি।

থাক সব পড়ে থাক, ধুলো জমে ঝাপসা হয়ে যাক
তোমায় দেখার চোখ। তবুও বলবো
এই আমি এখনো তুমি ছাড়া ভালো আছি “দীপন্তি”।

তুমি এলে, বড় দেরি করে এলে
এখন তুমি যাও, দূর বহু দূরে চলে যাও।

কতকাল আঙুল ছঁইনি, ছুঁইনি নীল রঙা ফুল।
কতকাল দেখিনি,
ভোরের শিশিরে মুখের মিছিল
লাবণ্যে ছুঁয়ে থাকা ঝরা বকুল।

রায়

প্রোমোটারের যে মাফিয়াটি মন্ত্রীর ছাতার তলায় ছিল
তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলাম,
অভাবী সংসারের যে মেয়েটি ধার করে টাকা দিয়েছিল
মন্ত্রীর শাগরেদদের, সেই মন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দিলাম,
চাল নেই বলে যে বউটি মন্ত্রীর চামুণ্ডের রুগ্ন শিস্ন দ্বারা ধর্ষিত হয়েছিল
সেই মন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দিলাম,
আমার রাষ্ট্রের, আমার রাজ্যের প্রতি সেকেন্ডে যারা রক্ত শুষে নিচ্ছে
তাদের মৃত্যুদণ্ড দিলাম,
আমিই ভোটার, আমিই ধর্মাবতার, কলমের নিব ভেঙে আদর করলাম আমার দেশকে।

ধূসর পাণ্ডুলিপি

এখন বেশ আছি আঁতুড় ঘর, ক্ষুধা আর শীত
শূন্য হাত সকরুণ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে
আর বাজখাঁই গলা বেসুরো হাঁকে
এ জীবনের নিবেদন; এখন মানুষগুলো
যেনো কেমন কেমন, কেউ তাকিয়েও দেখে না!

ওই পাড়ায় গিয়েছিলাম জ্ঞান দর্শন; সেখানেও
ঈশ্বর জেগে জেগে ঘুমিয়ে আছে; কামলা আর
আমলা ওরাই এখন বেশ আছে, আমিও কম না
বয়ে বেড়াই জীবনের মামলা, সংজ্ঞাহীন দিন-রাত
তবুও চলে যায়, কখনও জোয়ার, কখনও ভাটায়!

অনুতাপ আর পরিতাপ ওরাই এখন এ জীবনের
পদাবলী, ওদেরই এখন গিলে গিলে খায় বিষকাঁঠালি;
বিলুপ্ত বোধ সেও মাঝে মাঝে বিপ্লবী হতে চায়
তবে হালে পানি পায় না; গ্রীলকাটা জানলার মুখের
মতোন এই আমিও এখন কেবল ধূসর পাণ্ডুলিপি!

এখানে আলো নেই

এখানে আলো নেই
কি জানি, কেন জানি?
এখানে আলো নেই
মাথার ওপরে ইটসুরকির ছাদ! নেই আকাশ।
পথে আলো নেই,
ঘরে আলো নেই
ইট সুরকির উঁচু উঁচু দালান! সারি সারি।

উঁচু গাছ নেই,
উঁচু পাহাড় নেই
গহিন বন নেই, গরুর রাখালের মাঠ নেই।
এখানে চলচাতুরিতে ভরা,
সস্তা শ্রমে মিলে ভাত; আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।

এখানে আলো নেই,
সভ্যতার চিতা জ্বলে
পুড়ে পুড়ে খাঁক, বির্মষ নিষ্ঠা সুসভ্য আলখেল্লা।

১৪২৩/২৪, অগ্রাহায়ণ/হেমন্তকাল।

অবাধ্য

23

আর কতবার অবাধ্য হলে
অসুখের মুখে সুস্থ হবে;
প্রতিটা ঘন্টা, প্রতিটা দিন
এভাবেই চলছে অবাধ্যতা!
আকাশের বৃষ্টি দেখে বুঝাই
মাটির কাদা দেখো চৈত্রের
খরা হয়ে ফেঁটে ফেঁটে যাচ্ছে-
পাতা দেখো নিয়মে ঝরছে;
তবু তারা অবাধ্য নয় শুধু শুধু
তোমার জ্ঞানটাই যত অবাধ্য।

২৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ১১ ডিসেম্বর’২২ 

একঘরে সরোজ

1611

নিবিড় ভোর
ঘন শীত কুয়াশা
ওপারে কাঞ্চন ব্রীজ আরেকটু এগোলেই সেই টিনের ঘর
হাতে হাতে কল্কি
জানিনা কি নেশায়
বিলীয়মান বাসের ভেতর তাকাই
কাদের যেন ছেলে এক হুহু করে চলে যাচ্ছে
কোমরে সমরাস্ত্র যুদ্ধাংদেহী
কি তার ভাব! গরম গরম!
অথচ চোখ দুটো দেখো স্বচ্ছ কেমন
কাঞ্চন ব্রীজের অদূরে শুয়ে থাকা নদী যেন
আমি সেই নর’কে দেখি
একেকটা সকাল
একেকটা বাসে
চলে যায় কত মানুষ, কত পুরুষ
শুধু তাকে দেখি না
কক্ষনো দেখিনি
সেই সে পুরুষ
রূপকথার পুরুষ
কখনো দেখিনি যারে
কত ট্রেন, কত বাস চলে গেল ইত্যবসরে

একটা লোকমা তুলে দেয়া হাত
আর নদীর সবটা জলে টইটম্বুর চোখ
এটুকুই চেয়েছি জীবনে শুধু
আমিই পাইনি নাকি প্রভাত কুয়াশা
রেখেছে ঢেকে
এইসকল ভোর আর নবান্নের অগ্রহায়ণ!

শেষ হয়ে আসে ঊষা
কুয়াশা চিরে যারা এখনো বেরুতে পারেনি
তারা চলে যাক যথা ইচ্ছা তথা
অপেক্ষারা তো মরে গেছে জন্মের পরেই।