বিভাগের আর্কাইভঃ সমকালীন

৮ই ফাল্গুন বাংলা মাতৃভাষা দিবস ২১শে ফেব্রুয়ারী নয়

বাংলা ভাষার জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হওয়ার পর অর্জিত হয়েছিল বাংলায়, মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার। কিন্তু দুঃখের বিষয় নানা অজুহাত আর রাষ্টীয় অনাগ্রহ এবং অবহেলার কারনে বাংলা মাতৃভাষা দিবসটি বাংলাতে বলতে পারিনি। মাতৃভাষা দিবস বলতে আজও আমাদের ২১ শে ফেব্রুয়ারী বলতে হয়। ৮ই ফাল্গুন বলতে পারিনা। আফসুস বাংলার জন্য যুদ্ধ করে বাংলাকে অবহেলা।
ইদানিং আবার নতুন একটা অজুহাত-
এটা তো এখন আন্তর্জাতিক দিবস, কিছু করার নাই। ভাই এই কারনেই আমাদের দাসত্ত করা লাগে। আমাদের সত্তা কেন বিসর্জন দিব!!!
আসুন আজথেকে বদলায়, বলি-
৮ ই ফাল্গুন হল বাংলা মাতৃভাষা দিবস।
২১ শে ফেব্রুয়ারী হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। যা বাংলা মাতৃভাষা দিবসের অনেক পরে সীকৃতি পেয়েছে।
আমরা শুধু মাত্র কথার এবং দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন করি, তাহলেই আমাদের সত্তায় কোন প্রকার আঘাত আসবেনা।
যুদ্ধ করে লাভ কি যদি নিজেই নিজেকে শ্রদ্ধা করতে না পারি!!!!

গত বছর এই পোষ্টটি প্রথম দিয়েছিলাম সামু ব্লগে। তখন বেশ কয়েকজন সম্মানীত ব্লগার বা লেখক ভাইরা মন্তব্য করেছিলেন। আজ সেইগুলো সহ পোষ্ট করলাম শব্দনীড়ে। এখানে সকল মন্তব্য দেওয়া হয়নি।

১. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৬১

চাঁদগাজী বলেছেন:

বৃটিশ থেকে বের হওয়ার পর, দেশের রাস্ট্রীয় ভাষা ইংরেজী থাকাই উচিত ছিলো; উর্দু বা বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করার কথা যারা বলেছিলেন, তারা বুদ্ধিমান ছিলেন না।

২. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৮০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তাইলেতো ভা্ই
২৫মার্চ স্বাধীনতা দিবস
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস
নতুন করে হিসাব কষতে হব।
এমন কিছু সময় দিন মাস
ক্ষণ আছে যা আমাদের জাতি
সত্বার কাছে খাপ খাইয়ে নিয়েছে।
এখানে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করা
ঠিক হবেনা।

৩. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩৫১

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ফেব্রুয়ারি বানান ভুল
দাসত্ব বানান ভুল
এ বছর একুশে ফেব্রুয়ারি কয় তারিখ বাংলায়?????
৯ ফাল্গুন হবে……

International দিবস গুলো সবই ইংরেজি তথা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে…….

৫. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:০৮০

শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: ইংরেজি বা বাংলা যেটাই হোক ,এটাকে ইস্যু না বানিয়ে আগে সঠিক ভাষা শিক্ষা জরুরী ।

৭. ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৪৩০

কিশোর মাইনু বলেছেন: তার আগে কয়জন বাংলা বার মাসের নাম বলতে পারবে সেটা দেখেন ভাইয়া।

৮. ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৫৫০

সনেট কবি বলেছেন: দিবসের হিসেব সাধারণত ইংরেজীতেই হয়।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:০৭০

লেখক বলেছেন: কেন বাংলাই করেন না???? বাংলাতে কি গণণা সাল নেই!!!! আর আমাদের নিজেদের ঐতিহ্য অনুষ্ঠান কেন আমরা ভিন্ন দেশের ভাষাতে বা তাদের বলে দেওয়া সালে পালন করব!!! তাই যদি করতে হয় তাহলে কিসের আবার বাংলা ভাষা, কিসের ভাষা দিবস, কিসের মাতৃভাষা!!!! উর্দুই ছিল ভালা।
৯. ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:০১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লেখক বলেছেন: কিসের আবার বাংলা ভাষা, কিসের ভাষা দিবস, কিসের মাতৃভাষা!!!! উর্দুই ছিল ভালা।
কুল ম্যান !! সম্ভবত আপনার বোঝার ভুল আছে, আবেগ দিয়ে সব কিছু হয়না। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সঃ) জন্ম তরিখও(২৯ আগস্ট ৫৭০খ্রীস্টাব্দ) কিন্তু আরবীর সাথে ইংরেজী সনের হিসেবে করা হয়। তাতে কি তার জন্ম তারিখ অশুদ্ধ হয়ে যাবে?
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৪৪০

লেখক বলেছেন: জনাব তখন কিন্তু আরবি গণনা সাল ছিল না। নবী(সঃ) হিজরত করার পর থেকে আরবি গণনা সাল শুরু করা হয়। যার ফলে খ্রীস্টাব্দ কে গ্রহণ করা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের বাংলা ভাষার জন্য যখন যুদ্ধ হল তখন কিন্তু আমাদের একটা গণনা সাল ছিল এখনো আছে তাহলে সেইটাকে আমরা গ্রহণ না করে কেন খ্রীস্টাব্দ-কে গ্রহণ করলাম!!!! এইটা কি বাংলার জন্য যুদ্ধ করে প্রান দিয়ে বাংলাকে অবমাননা নয়???? তাহলে ভাষা দিবস বলে এই সব নাটকের মানে কি????

ডায়েরিতে লিখা ছিলো (১)

১-
অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া বনভূমি থেকে সদ্য জন্ম নেয়া নানান রঙ্গের উদ্ভিদ দেখে আমার মনে পড়ে যায় মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ আল-কোরআনের একটি বিখ্যাত আয়াতের কথা, “মাটি থেকেই আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব এবং পুনরায় এ থেকেই আমি তোমাদেরকে উত্থিত করবো।” বিষয়টা ভিন্ন হলেও একই রকম ঘটনা, কি আশ্চর্য! কি সুন্দর বনভূমি! অতঃপর ছাই হয়ে যাওয়া সেই ভুমি থেকেই নতুন করে উদ্ভিদ জন্মাচ্ছে।

২-
জুম্মন সাহেবের একটি কথা আমাকে প্রায়ই ভাবায়। তিনি বলেছিলেন,
“ঢাবি ছাত্রী যখন ধর্ষনের স্বীকার, আমি তখন নির্বিকার। মননে কোন প্রতিক্রিয়া জন্ম নেয় নি। কারন আমি অভ্যস্ত। আসলে আমি একজন বোকা মানুষ। আমি যদি জ্ঞানী হতাম তবে আমি প্রতিক্রিয়া জানাতাম। প্রতিবাদ করতাম। খোলা হাত মুষ্টিবদ্ধ করতাম।” ভেবে দেখলাম আমার সাথে তার কত মিল!

৩-
শীতের বরফ কঠিন আবহাওয়ায় অনুচিন্তনে জড়তা ধরে গেছে। তাই শীতার্ত পথিকের ন্যায় কিছুটা উষ্ণতা আমারও চাই জড়তা কাটিয়ে উঠবার জন্য। মানুষকে তো বোঝাতে হবে আমি কে? আমার উদ্দেশ্য কি?

৪-
আমি শিখতে চাই শেখাতে চাই। যারা মনে মনে ভাবে, “শিখেছি নিজের জন্য অন্যকে শেখাতে নয়।” এরা শিক্ষার সংজ্ঞা জানে না।

৫-
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা ঠিক তখনই মনে পড়ে যখন সেই গুরুত্বপূর্ণ সময়টা অতিক্রম করে যাই।

৬-
মুক্তমন হলো কোন একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা আর না করার মাঝামাঝি অবস্থানকে বোঝায়। এখানে একজন মানুষ শুধু ভাবতে পারে। অতঃপর যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে মানুষ তার প্রকৃত অবস্থান জানান দেয় অন্যদের নিকটে।

৭-
একটি কুকুর তার প্রভুর নির্দেশ মানতে দ্বিধাবোধ করে না। কিন্তু মানুষ করে।কারণ মানুষের অকৃতজ্ঞ।

৮-
জনজীবনে এতো অবজ্ঞা আর অবহেলা কেন?
মানুষ কি ভুলে গেছে তার গন্তব্যে সাড়ে তিন হাত মাটি?

৯-
স্বপ্নের সৈকত জুড়ে অপেক্ষার প্রহর যেন কিছুতেই শেষ হচ্ছে না। ক্ষণ গণনা করতে করতে আমি ক্লান্ত শ্রান্ত একজন মুসাফির। বন্ধু, ভালো লাগে না আমাকে নাকি আমার পরীক্ষা নিতে চাও? তবে করো তুমি পরীক্ষা আমি নিরাশ করবো না। কারন আমার ভালোবাসা মিথ্যে নয়।

১০-
কেউ যখন ভুল করে তাকে অবহেলা না করে তার ভুল সংশোধন করে দেয়া উচিৎ। কারণ মানুষ তো ভুলের ঊর্ধ্বে নয়।

১১-
আমি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিংবা কাজী নজরুল হতে চাই না আমি হতে চাই মুহ’ম্মদ (সঃ) এর আদর্শ শিষ্য।

১২-
ঘৃণা দিয়ে ঘৃণা জয় করা সম্ভব আর ভালোবাসা দিয়ে যে কারও মন জয় করা সম্ভব। পার্থক্য কেবল সময়ের। মন জয় করা যেনতেন ব্যাপার নয়। প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়।

১৩-
আমি কখনও বিভ্রান্ত হই না। আমি রহস্য উদঘাটন করার উপায় খুঁজি। আমি পেয়ে যাই মোটেও কষ্ট হয় না। কারন রব আমার সাথেই থাকেন।

১৪-
মানুষকে চেনা কঠিন কিছু না৷কৌশলে তার মনের ভেতর ঢুকতে পারলেই হয়। তার ভালো-লাগা মন্দ লাগা, লুকিয়ে থাকা সত্য-মিথ্যা এসব বোঝা মুহূর্তের ব্যাপার।

১৫-
এই শীতে নীহার শান্ত বিকেলে খোলা আকাশের নীচে একাকী বসে থাকার মাঝে একগুচ্ছ গল্প করার মানুষ চাই।

১৬-
আমি নিজেকে অতি তুচ্ছ একজন মানুষ ভাবি।হাসি-ঠাট্টার ভীড়ে মানুষ যখন খাটো করে তখন আর গায়ে লাগে না।আমার মাঝে রোষানলের প্রবনতা এক্কেবারেই নেই।রবের নিকট কৃতজ্ঞতা।

১৭-
জীবনে কিছু কিছু অপরাধ সহ্য করতে হয়, কিছু কিছু মিথ্যা আড়াল করতে হয় আর কিছু কিছু হারিয়ে যাওয়া ব্যাপার ভুলে থাকতে হয়।

১৮-
একজন মানুষকে পাওয়ার প্রবনতা দমিয়ে রাখা উচিৎ কিছু কাল কিংবা কিছু মুহূর্তের জন্য।রবের দয়ায় সহনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

১৯-
কারও মন জয় করা, কারও হৃদয় আহত করা এদুটোকে সামনে রেখেই আমাদের পথ চলতে হয়।

২০-
প্রতিভা অন্যের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্য স্রেফ খ্যাতি কুড়ানো।তবে তারা নয় যারা সত্যিকার অর্থেই চায় বাকীরাও যেন নিজেদের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করুক।এরা অনেকটা নিরহংকারী ধরনের হয়।

২১-
পড়াশোনা না জানা লোকজন কিংবা কম জানা লোকজন মানুষকে ছোট করার মধ্য দিয়ে এক ধরনের পৈচাশিক আনন্দ পায়।এরা কখনও মানসিকভাবে সুখী হয় না।

২২-
আমাকে সহ্য করতে পারেন না এমন লোকের অভাব নেই।আমি ভুল করি।আমি তো মানুষ।ভুল ধরিয়ে না দিলে সংশোধনের আগ্রহও যে জন্মাবে না আমার!

২৩-
আমার কারণে কেউ বিরক্ত হলে দোষটা নিজের কাঁধেই চাপাই।তখন নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধী মনে হয়।ইশ!আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম।

২৪-
একটা বন্য কুকুর একটি সিংহকে উপদেশ দিলো,একজন ভালো শিকারী হতে চাইলে তোমাকে হতে হবে কৌশলী।সিংহটা বললো, আজ কি দিয়ে নাস্তা করেছো? বুক ফুলিয়ে কুকুর বললো, মহিষের মাংস।সিংহ বললো, বেশ তো!কুকুর সিংহকে প্রশ্ন করলো তুমি কি দিয়ে নাস্তা করেছো? সিংহ উত্তরে বললো,
তুমি যে মহিষের মাংস দিয়ে নাশতা করেছো গতকাল আমিই সেটা শিকার করেছিলাম।এখন আমার ক্ষুধা নেই।

২৫-
মানুষ যখন কন্ঠ নামিয়ে কথা বলে আমি স্থান ত্যাগ করি।এর কারন আমি নিজেই।

২৬-
বিপরীত স্বভাবের কাউকে ভালো লাগলে দূর থেকেই ভালোবাসা উচিৎ। কাছে আসলে দূরের চলে যাওয়ার ভয় থাকে।আর এই জন্যই ভালোবাসার এতো কদর।

২৭-
এক সময় বাসা ছাড়া কিছু বুঝতাম না।মা বলতো বাহিরে যা।বাবা বলতো বাহিরে যা।আমি চুপ করে থাকতাম কিন্তু অনুভব করতাম না।এখন বাহিরে এসে বুঝলাম আমি অন্যদের তুলনায় বেশ পিছিয়ে।

২৮-
একজন মানুষ যখন আনন্দ পায় তাকে আরও আনন্দ দিতে ইচ্ছে করে।ইচ্ছে করে মানুষটা যেন সর্বদা হাসি-খুশী থাকে।কিন্তু কাউকে একবার আঘাত করলে দ্বিতীবার ইচ্ছে করে না।আপন কষ্ট অনুভবে যন্ত্রনার কিন্তু মানুষের কষ্ট সহ্য করা দুর্বিষহ।

২৯-
ভাব বলতে কিছু নেই আমার ভিতর। যারা ভাব নেয় তারা সবসময় ছোট মনের পরিচয় দেয় নিজেদের অজান্তেই।

৩০-
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন মানেই একটি অসুখকর জীবন।প্রচন্ড পরিশ্রম করতে হয়।আর আমি এটা থেকে নিজেকে আড়াল করে রেখেছি সেই শুরু থেকেই।ইশ! কি যে হবে আমার!

৩১-
ভালো লাগে মানুষকে ভালো পরামর্শ দিতে।মন্দ পরামর্শে কারও ক্ষতি হলে
তার দায় নিজেকেই নিতে হয়।

৩২-
“এক থাপ্পড়ে গালের দাত সব ফেলে দিব।তুই এক্ষুনি আমাকে ডিভোর্স দিবি নয়তো নারী নির্যাতন মামলায় খাচায় ভরে দিবো।তুই চিনিস না আমাকে”।
পাশের বাসা থেকে এমন উচ্চবাচ্য প্রায়ই শোনা যায়।খোজ নিয়ে জানতে পারলাম, যাকে ডিভোর্স দিতে বলা হচ্ছে তিনি হলেন,আমার কলিগ জুম্মন সাহেব। বুঝতে পারলাম বিগত কয়েকদিন যাবত কেন তিনি মানসিক যন্ত্রনায় ভুগছিলেন। কষ্ট হয় বেচারার জন্য।

৩৩-
এই যে হ্যা,আমি জানি আপনি আমার ডায়েরি পড়েন।মনে রাখবেন ডায়েরির কথাগুলো আপনার অনেক কাজে দিবে।

৩৪-
আমি বড্ড অগোছালো একজন মানুষ।শুনেছি সব মেয়েরাই একজন অগোছালো মানুষ চায় যাকে নিজের মতো করে গুছিয়ে নিবে।এমন কেউ কি আছেন?তবে হাত তুলুন।

৩৫-
ঝামেলামুক্ত নিরাপদ একটি শহর চাই।যেখানে বিরাজ করবে মনুষ্যত্ব।সত্যি বলতে এই শহরে থাকতে থাকতে আমি এক প্রকার বিরক্ত!

৩৬-
যেখানেই থাকো না কেন,আকাশ এখন অন্ধকার!

৩৭-
রাগ হয় খুবই রাগ হয় যখন কেউ বলে আর কেউ চুপচাপ থাকে।মনে হয় যেন একজন ব্যক্তি কথা বলছে একজন বাক-প্রতিবন্ধীর সঙ্গে।মানুষের বোঝা উচিৎ নীরবতা কখনও কখনও অবজ্ঞার কারনও বোঝায়।

৩৮-
নিঃসঙ্গ চলাটা আমার কাছে অত্যন্ত সুখকর ব্যাপার।আযানের আহ্বানে এক দৌড়ে মসজিদে ছুটে যেতে পারি। আলহা’মদুলিল্লাহ।

৩৯-
আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি!কিন্তু কখনও তাকে বলা হয় নি।আদৌ বলা হয়ে উঠবে কিনা সে বিষয়ে ঢের সন্দেহ রয়েছে।কারন আমি একজন অভাবি মানুষ।নিজের চলতেই কষ্ট হয়ে যায় আর সেখানে আরও একজনকে চালানোর কথা নিয়ে তো প্রশ্নই নেই। আসলে আবেগ দিয়ে কি আর সবকিছু করা যায়? আবেগ আর বাস্তবতা উভয়ের সাথে তাল মিলিয়েই চলতে হয় এই ভুবনে।আমি একজন বাস্তবমুখী মানুষ।তাই আমার ধৈর্যও অনেক।

৪০-
কিছু কিছু মেয়ে আছে নিজেদের বয়সের তুলনায় মাস ছয়েক ছোট এমন ছেলেদের শিশুর মতোই ভাবে৷এরা অহংবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ।

৪১-
আমি ক্যারিয়ারের চিন্তায় মগ্ন আর আমার বন্ধুবান্ধব একেকজন বিয়ের চিন্তায় মসগুল।চিন্তা নেই – তারা প্রত্যেকেই কর্মজীবি।

৪২-
আচ্ছা, বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার ভাবনা কি?

৪৩-
কুকুরের বাচ্চা যতই ঘেউ ঘেউ চিৎকার চেচামেচি করুক বাঘের কাছে সর্বদাই বিধ্বস্ত হয়ে যায়!

৪৪-
হুমায়ুন আহমেদ বলেছিলেন,
“ভালো লাগা এমন একটি ব্যাপার যা একবার শুরু হলে সবকিছুতেই ভালো লাগতে থাকে”।সত্যি বলতে, ব্যক্তিগত ভাবে আমি এই কথাটার সাথে একমত না।ধরুন, একজনকে খুব ভালো লাগে আপনার কাছে; তারপর দেখলেন আপনার ভালো লাগার মানুষটা মদ-গাঁজা সেবন করে তখন বিকারগস্ত মানুষ বাদে কার কাছেই বা ব্যাপারটা ভালো লাগবে?

৪৫-
হে আমার রব!
আমি তো তোমারই জন্য আর তোমার দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।তুমি ছাড়া এই জীবনে আমি কারও প্রতি ভরসা পাই না।তাই তোমার প্রতি ভরসা রেখেই আমি লোকেদের ভীড়ে মিলিয়ে যাই।

৪৬-
আপনি এমনিতেই সুন্দর!
এতো রঙ্গ-ঢং করার কোন মানে হয় না।আমি চাই আপনি মনের অবস্থান থেকে সুন্দর হয়ে উঠুন।তাহলে সর্বত্রই প্রশংসার পাত্র হবেন।কারন যার মন সুন্দর হয় তার মুখ নিঃসৃত কথা মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায় আমার বিশ্বাস।

৪৭-
ঔ বেটা,
*** *** এভাবেই একজন মহিলা অপর একজনকে উদ্দেশ্য করে গালমন্দ করছিলেন।আর আমি রাস্তার পাশে জিলাপির দোকানের সামনে দাড়িয়ে জিলাপি খাচ্ছিলাম আর শুনছিলাম তাদের উচ্চবাচ্য।খারাপ লাগলো।বুঝতে পারলাম লজ্জাসংকোচ বলতে কিছু নেই তাদের ভিতর।আহারে, মানুষ!

৪৮-
একবার এক বান্ধবীকে বলেছিলাম, “বন্ধু, পর্দা করিস না কেন”? প্রতি উত্তরে সে আমাকে বললো, ” তোরে কি এবার খাস বাংলায় গালি দিমু”?
ভাভা গো ভাভা!সে কি ভয়ংকর উত্তর দিলো আমাকে।আমি তারপর কোন দিন তাকে পর্দা করার কথা বলি নাই।আমি চাই না কেউ আমার কারনে পাপের বোঝা বহন করুক।

৪৯-
ভাবছি ডাবের ব্যাবসা করবো।ভ্যান গাড়িটা ঠিক সেখানেই রাখবো যে রাস্তা আপনার নিত্যদিনের সঙ্গী। রোজ বিকেলে আপনি আমার সামনে দিয়ে হেটে যাবেন আর আমি সেই সুযোগে বলবো, “আফা,ডাবের পানি খাইয়া যান।মনডা হালকা হইয়া যাইবো”।

৫০-
ভালো লাগে পড়তে, লিখতে পর্যবেক্ষন আর মন্তব্য করতে।আপনার কি ভালো লাগে?

৫১-
জুম্মন সাহেব আমাকে প্রশ্ন করলেন,
গার্লফ্রেন্ড দিয়ে কি হবে?
আমি উত্তরে বললাম,ভালো লাগবে খুব।তিনি প্রতিবাদী কন্ঠে বলেন, তুমি যে উদ্দেশ্যে বলছো ভালো লাগবে ঔটা হলো আবেগ।ঔটাই মোহ।আমি চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়লাম।তিনি বললেন, ভয়ের কারণ নেই তুমি গার্লফ্রেন্ড বানাও তবে সে যেন আল্লাহ ভীত হয়,নেককার হয়।জানোই তো নেককার স্বামী-স্ত্রী জান্নাতে একই সাথে থাকবে।বিস্ময়ের সাথে বললাম, কিন্তু আজকাল তেমন মানুষজন খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টের!জুম্মন সাহেব বলেন, আরে বোকা ভালো কিছু অর্জন করতে হলে কষ্ট তো করতেই হবে আর কষ্টের পরেই রয়েছে স্বস্তি।
আমি যেন প্রান ফিরে পেলাম!

৫২-
মাঝে মাঝে মনে হয় কেউ একজন আমাকে দূর থেকে অনুসরণ করেন।আমি দেখি না কিন্তু সে আমাকে ঠিকই দেখে।আমার ভাবতে খুব ইচ্ছে করে,বোকাদের প্রতিও বুঝি মানুষের ভালো লাগা জন্মায়! আচ্ছা, এটা কি করে সম্ভব?আমি আনমনে হাসি নীরবে নিরালায়…..

৫৩-
এক বুক আশা নিয়ে রাতভর পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলাম।কিন্তু সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি, পরীক্ষা শেষ হতে আর মাত্র একঘন্টা সময় বাকী আছে।তাড়াহুড়ো করে হল রুমে গিয়ে পৌছালাম।ম্যাডাম বললেন,আপনি এক ঘন্টা পাঁচ মিনিট দেরী করেছেন; দুঃখিত আমি রুলসের বাহিরে যেতে পারবো না।আপনি সাপ্লি দিন।অসহায় পথিকের ন্যায় আমি কন্ট্রোলার স্যারের কাছে গেলাম।তারও ভাষ্য একই ছিলো।আমি কথা না বাড়িয়ে সোজা বাসায় যাত্রা করলাম আর পথিমধ্যে আনমনে ভাবতে থাকলাম,এক হাজার টাকার জন্য কর্তৃপক্ষ আমাকে এলাও করলো না।আহারে…

৫৪-
অসুস্থ ব্যক্তিদের সাথে হাসি মুখে কথা বলা উচিৎ। তারা স্বস্তি পায়।ইশ!মানুষ যদি বুঝতো।

৫৫-
হঠাৎ আসা আবেগ হঠাৎই চলে যায়।আপনি জানেন না, আমি জানি।

৫৬-
মানুষ সর্বদাই জিততে চায়।আমি তাদের কাছে সর্বদাই হেরে যাই তাদের ভাবনার বলে।

৫৭-
যদি দূরে যেতে চাও যাও,
আমি পথ হয়ে সাথে রবো। সূর্যের তীব্র উত্তাপে পোড়াবই উষ্ণ নীহারে….

৫৮-
আমি অহংকার কম করি।আসলে করি না বললেই চলে।ভালো লাগে মানুষের সঙ্গ দিতে।হোক সে যে কেউই।

_মাহমুদুর রহমান

ধর্ষন: কিছু মিথ -১

৭৭ এর দিকে মিশেল ফুকোঅদ্ভুত একটা যুক্তি দিলেন। নারী পুরুষের যৌনপ্রক্রিয়া কখনোই অপরাধতুল্য হতে পারে না। কারন এটা একটা আদিমতম জৈবিক প্রক্রিয়া যা স্বতঃস্ফূর্ত কিন্তু ধর্ষন অবশ্যই অপরাধতুল্য কেননা এটা জোর করে তার ওপর শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে। অনেকটা এমন যে আপনি কাউকে সাকার পাঞ্চ বা সজোরে মুস্টিবদ্ধ ঘুষি মারলেন। সেভাবে কারো জননাঙ্গের ভেতরে জোর করে নিজের যৌনাঙ্গ প্রবেশ করা অবশ্যই সেরকম একটা উদাহরন ধরা যেতে পারে কিন্তু আপনি যখনই সেটা শুধু মেয়েদের জননাঙ্গ হিসেবে তুলে ধরবেন যা সুরক্ষা করা দরকার (যেমন টাকা পয়সা ইত্যাদির মতো বিশেষ লিঙ্গের জননাঙ্গকে অস্পৃশ্য মনে করা), বস্তুত আপনি তখনই ট্যাবুতে নিয়ে গেলেন। আসলে এটা তা না, এটা হলো একধরনের সহিংসতা। তার এই যুক্তিটি তৎকালীন নারীবাদের মেইনস্ট্রিমের সেক্সিট জনপ্রিয় ধারার থেকে সমালোচিত হয়। ফুকোর এই বক্তব্য অনুযায়ী আধুনিক সময়ে যৌনতাকে ট্যাবু হিসেবে দেখার যে ভ্রান্তি এবং তা থেকে সুযোগ নেয়া সুবিধাবাদীদের আঁতে বেশ ঘাঁ দিতে এখনো সক্ষম। হয়তো ২০২০ এর দিকে #MeToo এর সেকেন্ড ওয়েভে ধর্ষক বা নীপিড়কদের উল্টো প্রতিবাদী হয়ে ওঠা অথবা বাংলাদেশে সুবিধাবাদী সুশিল ধর্ষকদের কন্ঠে পুরুষ নির্যাতনের যে বুলি শোনা যায় এটা তারই ফল।
দ্বাদশ শতকে রোমানরা ধর্ষনকে অপরাধ গন্য করে সংজ্ঞায়িত করে এভাবে যে যৌনমিলন হোক বা না হোক নারীর ওপর ধর্ষনের উদ্দেশ্যে বলপ্রয়োগ করা হলেই সেটা ধর্ষন বলে গন্য হবে। সম্প্রতি এফবিআই তাদের ধর্ষনের সংজ্ঞাকে এমনভাবে পরিবর্তন করেছে যার মাধ্যমে ভিক্টিম শুধু নারী হতে পারেন না, একটি শিশু, হিজড়া অথবা একজন পুরুষ বা সমকামী অথবা বিবাহিতা স্ত্রীও (যদি তার স্বামীর দ্বারা ধর্ষিত হন) হতে পারেন।

তারপরও ধর্ষন থেমে নেই। ধর্ষন কেন হয় সেটা নিয়ে একটা ব্লগ লিখেছিলাম চাইলে এখানে পড়ে আসতে পারেন। পুরোটাই মানসিক বিকৃতি সংশ্লিস্ট ব্যাপার।

ধর্ষন নিয়ে যখনই কোনো আলোচনা হয় তখন এর দুটো দিক নিয়ে কথা হয় সেটা হলো ধর্ষিতা নারী সাহসী হয়ে তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জনসম্মুখে বলবে যাতে সবাই সচেতন হন এবং এটা যে আসলেই কত খারাপ সেটা নিয়ে সবাই ভাবতে পারে, এর মূল উদঘাটনে ডিসকোর্স হতে পারে। আরেকটি দিক হলো প্রশাসনিক যারা মূলত ধর্ষনের কোনো ঘটনা ঘটলে তার তদন্ত, আসামী পাকড়াও, ভিক্টিমের পুনর্বাসন এবং তার উপযুক্ত বিচারের মাধ্যমে শাস্তি প্রদানের মতো দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পাদন করেন।কিন্তু সমস্যা এখানেই শেষ হচ্ছে না, মূল সমস্যা যেখানে সেটা হলো ধর্ষনের সংজ্ঞা একেক দেশে একেক রকম। আমেরিকার এফবিআই ধর্ষনকে যে সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করেছে, মুসলমান দেশগুলো সেভাবে সংজ্ঞায়িত করে না কারন সেখানে দাসী আর স্ত্রী ধর্ষন হুদুদ আইনেই বৈধতা দিয়ে দিয়েছে এবং হ্বদের ধারায় ধর্ষনকে কোনোভাবেই সুস্পস্টরূপে ব্যাখ্যা করে নাই। আবার অনেক দেশে সমকামীরা নিজেদের পরিচয় জানালেই তাদের মৃত্যু অনিবার্য, আবার বাচ্চাবাজী ও বাল্যবিবাহের নামে শিশুধর্ষন বা স্টাচুয়ারী র‌েপ রাস্ট্রিয় ভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়।

১) সুইডেন ধর্ষনে এত উপরে কেন?

যদি আমরা ধর্ষনের পরিসংখ্যানের দিকে তাকাই তাহলে সুইডেনের অবস্থান পাবো ষষ্ঠ স্থানে। প্রশ্ন আসতে পারে সভ্যতার ধারক বাহক বলে খ্যাত এবং শান্তির দেশ হিসেবে যাকে বিবেচনা করা হয় তাদের সমাজ ব্যাবস্থা এত খারাপ কেন! তাহলে মানুষ যাবে কোথায়?
এর কারন হলো সুইডেনের অতিরিক্ত উদ্বাস্তু থাকার কারনে সেখানে যে সামাজিক বিপর্যয় হচ্ছে এবং দ্বিতীয়ত ধর্ষনের সংজ্ঞার পরিবর্তন।
বিশ্বের নানা জায়গায় যুদ্ধবিগ্রহ,অযাচারের কারনে উদ্বাস্তুরা যেসব উন্নত দেশে নিরাপদে থাকার অনুমতি পায় তাদের মধ্যে সুইডেন শীর্ষস্থানীয়। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে এসভিটির তথ্যমতে ধর্ষনকারীদের ৫৮ শতাংশের জন্মই সুইডেনের বাইরে যার ৪০ শতাংশ এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের বর্বর মুসলমান দেশগুলো থেকে। বাকীরা আফগানিস্তান আফ্রিকা ও পূর্ব ইউরোপ থেকে। আর বাকী যারা সুইডেনে জন্মেছে তাদের ৮০ ভাগ এসেছে ইমিগ্রান্ট ফ্যামিলির থেকে। মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, আফগানিস্তানের যুদ্ধের কারনে চলে আসা উদ্বাস্তুদের জন্য তার দুয়ার খুলে দেয়ার ফলে গত এক দশকে সুইডেনে বেড়েছে ৮০ শতাংশের ওপরে। ।

এখন আসি ধর্ষনের সংজ্ঞাতে তাদের কি বিবর্তন হয়েছে।ত্রয়োদশ দশক থেকেই স্টাচুয়ারী রেপ অর্থাৎ শিশু বা কিশোরের সাথে যেকোনো প্রকারের সহবাসকে ধর্ষন হিসেবে গন্য করে আসছে এবং সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত এর শাস্তি মৃত্যুদন্ড ছিলো। ১৯৬৫ সালে সুইডেন বিশ্বে সর্বপ্রথম ম্যারিটাল রেপ অর্থাৎ স্ত্রীর অনুমতি ব্যাতিত সহবাসকে ধর্ষন হিসেবে গন্য করা শুরু করে। সমকামী এবং লিঙ্গ নিরপেক্ষ সংজ্ঞাকে প্রাধান্য দেয়া শুরু করে ১৯৮৪ সাল থেকে। অজ্ঞান অবস্থায় কারো সাথে সহবাস করলে তা সে স্ত্রী হোক অথবা গার্লফ্রেন্ড সেটাকেও ধর্ষন হিসেবে গন্য করা শুরু করে ২০০৫ সাল থেকে। সুইডিশ পুলিশের ওয়েবসাইট অনুযায়ী বর্তমানে ধর্ষনের সংজ্ঞা অনেকটা এমন:

যেকেউ যদি কাউকে শক্তির মাধ্যমে যৌনক্রিয়া করা হুমকি দিলে যদি ভিক্টিম অপমানিত বোধ করেন তাহলে তাকে ধর্ষনের দায়ে ২ থেকে ৬ মাসের জেল খাটতে হবে।ধর্ষনের জন্য জেল কখনোই চার বছরের নীচে এবং ১০ বছরের ওপরে হবে না

যৌনক্রিয়া, হতে পারে তা সহবাস, কিন্তু অন্যান্য যৌনক্রিয়া ও এর তালিকাভুক্ত এবং তার জন্য যদি কাউকে হুমকি বা ঝগড়ার মাধ্যমে বাধ্য করা হয় বা তার চেস্টা করা হয় তাহলে সেটাও ধর্ষনের অন্তর্ভুক্ত হবে। যদি অরাধী কাউকে ড্রাগ, মানসিক প্রতিবন্ধী বা মাতাল অথবা অন্যান্য মাদকের মাধ্যমে তার দুর্বলতার সুযোগ নেয় তাহলে তাকে ধর্ষনের দন্ডে দন্ডিত করা হবে।

২০০৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে যৌনাঙ্গ ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে স হবাস বা পেনিট্রেট যেকোনো অবস্থাতে করলেও সেটা ধর্ষন বলে গন্য করা হবে।
সুইডেনে ধর্ষনের পরিসংখ্যান এমন ভাবে করা হয় যে যখনই উপরোক্ত সংজ্ঞানুসারে কোনো অভিযোগ রিপোর্ট করা হয় তখনই সেটা পরিসংখ্যান বিভাগে চলে যায়। পরে যদি কেসটা অপ্রমানিত বা ডিশমিশ হয়ে যায় তাতেও সে পরিসংখ্যানে কোনো প্রভাব পড়ে না যেটা অন্যান্য ইউরোপীয়ান দেশে হয়ে থাকে। আবার কোনো স্ত্রী যদি অভিযোগ করেন যে তার স্বামী মাসে প্রতিদিন তাকে ধর্ষন করে তাহলে সেখানকার পুলিশ তা ৩০ বার হিসাব করে।
আরো একটি কারন না বললেই নয় যে ২০০০ সালের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ভিক্টিম সার্ভের তথ্যানুযায়ী ধর্ষনের মতো ঘটনা সুইডেনের পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ গোপনীয়তা এবং ভিক্টিমের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এবং শূন্য দুর্নীতি থাকায় সেখানে ধর্ষিতা বা অভিযোগকারীর সন্তুষ্টি বেশ ভালো কারন লিঙ্গ সাম্যতায় সুইডেন বিশ্বে শীর্ষস্থানে আছে।

ইউএনওডিসির রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি ১ লক্ষ জনে ৬৫ জন ধর্ষনের অভিযোগ করে যেখানে ১২৯ টা দেশের মধ্যে ৬৭ দেশে ধর্ষনের কোনো ডাটাি পাওয়া যায় না। এর অন্যতম প্রধান কারন সেসব দেশের দুর্নীতি, প্রশাসনের ওপর অনাস্থা। আবার এই ৬৭ টা দেশের ৯০ ভাগ দেশই হলো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। আবার অনেক দেশে ধর্ষন নামে কোনো টার্ম নাই কারন কোরানে ধর্ষন নামের কোনো শব্দ নাই যেমন মিশর। মিশর এটাকে শারিরীক আঘাতের তালিকাভুক্ত করে। এমনকি বাংলাদেশ চায়নার মতো দেশে গত দশকে ধর্ষনের হিসাবটাও ঠিক মতো পাওয়া যেতো না। সৌদিআরবের ঘটনা আরো ভয়ঙ্কর

যাই হোক উদ্বাস্তু সমস্যার কারনে গত ৫ বছরে তাদের দেশে ধর্ষনের পরিমান ভয়াবহ পরিমানে বেড়েছে। এবং শাস্তি প্রদানের হার ১৩% যা অন্যান্য নরডিক দেশের তুলনায় সর্বনিম্ন। এ নিয়ে এয়ামনেস্টি ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছে তারা। আরো ভয়াবহ ব্যাপার হলো ২০১৩ সালে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে এত কিছুর পরও প্রায় ৮০শতাংশ ধর্ষনের ঘটনাই রিপোর্টে করা হয় না।

সে হিসেবে বলা যেতে পারে প্রশাসনিক সততা স্বচ্ছতা ও পরিপূ্র্ন সংজ্ঞায়িতকরন এবং উন্নত সমাজ ব্যাবস্থার সাথে বর্বরতম জঙ্গী সভ্যতার অসততাই দায়ী সুইডেনের এমন উচ্চ পরিসংখ্যানের পিছে।

২) বাংলাদেশ ধর্ষনে ভারত থেকে পিছিয়ে।

২০১৯ সালে ধর্ষন পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ৪১ তম যেখানে সুইডেনের অবস্থান ৬। ভারতের অবস্থান হলো ৯১ তম। পরিংখ্যানে বলা হয় বাংলাদেশে ভারতের থেকে ৫ গুন বেশী ধর্ষন হয়। শুধু ধর্ষনই নয়, সার্বিক অপরাধচিত্র কতটা ভয়াবহ ভারতের তুলনায় সেটা এখানে ক্লিক করলেই বোঝা যাবে। তাই কেউ যদি বলে ভারতের থেকে বাংলাদেশে ধর্ষন কম হয়, তাহলে নিশ্চিত থাকুন সে একজন জ্ঞানপাপী মিথ্যুক বা অজ্ঞ। যে দেশে বাল্যবিবাহকে সুন্নত হিসেবে দেখা হয় এবং ইসলামী স্কলাররা শিশুধর্ষনের চর্চায় মত্ত তাদের কাছ থেকে সত্য কখনো জানবেন না।

চলবে……

কবিতাঃ আজকাল চুপচাপ শুধু দেখেই যায়…………

আজকাল ডাস্টবিনগুলি চুপচাপ শুধু দেখেই যায়-
প্রতিনিয়ত বাড়ছে সেখানে অপাংক্তদের চাপ,
যেখানে থাকার কথা উচ্ছিষ্ট আর ময়লা পঁচা গন্ধ
সেখানে পরে থাকে এখন সদ্য নাড়ীকাটা নবজাতক
লাল টুকটুকে রক্তের দাগে ভেসে যায় বিষন্ন মানবতা।
.
.
আজকাল আস্তাকুঁড়গুলি নিঃশব্দে শুধু দেখেই যায়-
নিজের বিষাক্ত বীর্য্যের প্রতি যুক্তিহীন ঘৃণায়, কিংবা
ক্রোধোন্মত্ত তামাশায় জন্মের পরেই ছুড়ে ফেলে দেয়া
সদ্য ভুমিষ্ঠ অবুঝ শিশুটি আজ কত অসহায়!
.
.
আজকাল ভাগাড়েগুলি নিঃস্তব্ধ হয়ে শুধু দেখেই যায়-
পাপিষ্ঠ দেহের ক্রমাগত অনৈতিক জৈবিক চাহিদা শেষে
ব্যালকনি কিংবা জানালার গ্রীলের ফাঁকফোকড়ে মাঝে
মানবতার গলায় পা দিয়ে অসীম শক্তিতে বলীয়ান হয়ে
ছুড়ে ফেলে দেয় অপ্রয়োজনীয় জীবন্ত মাংশপিন্ড।
.
.
রাস্তায় কিংবা ফুটপাতে সারমেয়রা অপেক্ষায় বসে দেখে-
আজকালের ডিজিটাল ভালোবাসার ক্লেদাক্ত পরিনতি,
না দেখা অগুনিত অতৃপ্ত কামনার সব এইচ ডি মুভি ক্লীপের
নিষ্ঠুর পরিসমাপ্তি হয় সদ্য জন্মানো মানবশিশুর
প্যাকেটে ভরে রাস্তায় ফেলে অগোচরে পালিয়ে যাওয়ায়।
.
.
ভাষাহীন নির্বাক চোখে ময়লা ফেলার গাড়িগুলি-
টেনে নিয়ে যায় অবাঞ্চিত রক্তাক্ত মানবতা
মনুষ্যত্ব হারিয়ে যায় অবৈধ সম্পর্কের ক্রমাগত আস্ফালনে,
দশমাস বিরক্তকর গর্ভধারণের তিক্ততায়
নরম তুলতুলে শরীরটার শেষ আশ্রয় হয়
পীচ ঢালা রাস্তা কিংবা গলির মোড়ের নোংরা ডাস্টবিন!
.
.
শিয়াল কুকুর ইঁদুরের এখন মহাউৎসব চলে অহরহ
দূঃসহ খাদ্যসংকট কেটে গেছে না চাইতেও
নরম তুলতুলে শরীর দিয়ে হয় অপ্রত্যাশিত ডিনার।
.
.
বেহায়া মানবতা আর মনুষ্যত্বের সামাজিক কৌষ্ঠকাঠিন্যের আবর্তে
অবৈধ সম্পর্কে জন্ম নেয়া এইসব আপদ
নিঃস্তব্ধ সদ্য নাড়ীকাটা শিশুরা এভাবেই বিদায় নেয়
নিরবে একদম নিভৃতেই!
.
.
ছবিঃ দৈনিক পত্রিকা থেকে প্রাপ্ত, ইচ্ছে করেই ছবি কিছুটা ঘোলাটে করে দেয়া হয়েছে।

@ যুনাইদ

নিষ্ঠুর শব্দটা

একটি শব্দ ধর্ষণ
ইস্ কি দুর্বিষহ যন্ত্রনা আছে শব্দটাতে
কি মর্মান্তিক নিষ্ঠুরতা জড়িয়ে আছে তাতে ৷

একটা অসহায় নারী আর কতো আকুতি
তবুও বেমালুম ভুলে গেলি নারীই তোর জন্মদাত্রী
নির্দ্বিধায় ঝাঁপিয়ে পরলি দেখে অসহায় নারী
ধর্ষণ করে নর্দমায় ফেলে তৃপ্তির হাসি হাসলি ৷

তোর তো শালা চেহারায় মানুষের আবাস
অথচ অন্তরে তোর হিংস্র পশুর বাস ৷
যে নারীর চোখে আগামী জয়ের স্বপ্ন ভাসে

অসহায় নামক বেড়াজালে রাখলি তাকে ঘিরে
আর সুযোগ বুঝে সেঁটে দিলি
ধর্ষণ নামক সাইনবোর্ডটা ওর গায়ে ৷

নক্ষত্রের গোধূলি-৩৪

৪৯।
দুর্বলের উপর যখন সবলের অত্যাচার চরম পর্যায়ে পৌঁছে যখন দুর্বলের কিছু করার থাকে না, দুর্বলের মনের যে হাহাকার তা শোনার মতো কেও থাকে না, সে যে কত মর্মান্তিক কত হৃদয় বিদারক ব্যাপার তা একমাত্র দুর্বলেই বুঝতে পারে। এই আঘাত শুধু মনের, আর মনের তো রক্ত নেই তাই তা দেখা যায়না কতটা আঘাত সে পেয়েছে। রক্ত থাকে শরীরের মাংসে, হাড়ে মজ্জায়। মনের যদি রক্ত থাকত তাহলে যে কত মনরক্ত ক্ষরণ দেখতে পেতাম সে হিসাব করতে পারব কি আমরা? নাকি মনরক্তের কোন মূল্য আমরা জানি? আমরা শুধু জানি আহা মুক্তির মন্দির সোপান তলে কত প্রাণ হলো বলিদান। কিন্তু যে বলিদান হলো সে তো চলেই গেলো যে বলিদান হতে পারল না তার মন যে চুরমার হলো সে কথা কি কখন জানতে পেরেছি না জানতে চেয়েছি? নাকি কারো দিকে তাকিয়ে দেখেছি কত মনরক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। শরীরের আঘাতে রক্ত ঝরে নয়ত হাড় মাংস থেঁতলে বা ভেঙ্গে যায়। যা চিকিৎসা করা যায়, জোড়া তালি দেয়া যায়, সেলাই করা যায়। দরকার হলে ভিন্ন শরীর থেকে রক্ত হাড় মাংস এনে পূরণ করা যায়। যার মন ভেঙ্গে গেছে তার কি চিকিৎসা? ভিন্ন মন এনে কি তার মন জোড়া যায়? মন কি সেলাই করা যায়? কেন যায়না তা হলে সে কি করে ভাঙ্গা ক্ষত বিক্ষত মন নিয়ে বেঁচে থাকবে?

বাসের সিটে বসে ভাবছিলেন। দুপাশের কোন দৃশ্য তার চোখে পরেনি। কতক্ষণ সময় গেছে তাও চোখে পরেনি। মনি কিভাবে পৌঁছবে, মেয়েরা কি ভাবে মানুষ হবে আমি কত দূর কি করতে পারব, কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে ভাগ্য, ফেলে আসা জীবন। আমার ভুল কোথায় ছিলো আদৌ কোন ভুল ছিলো কি? হ্যাঁ ভুল তো অবশ্যই ছিলো। অন্ধ বিশ্বাস আর সরলতা। কামরুল তো বলেছিল তুমি যা করতে যাচ্ছ তার মূল্য কি পাবে? তোমার যে মানসিকতা তুমি কি পারবে মানিয়ে নিতে? কিছু মনে করনা বাবা মা যাই বল কেও কিন্তু স্বার্থের বাইরে নয় তুমি যতক্ষণ দিতে পারবে ততক্ষণ তুমি ভাল। যখনই দেয়া বন্ধ হবে তখনি শুরু হবে দ্বন্দ্ব? ভেবে দেখ তোমার ফ্যামিলি চাইবে এক রকম আর তোমার বাস্তব হবে অন্য রকম। মাঝ থেকে তোমার বউ ভুগবে তোমার মেয়েরা ভুগবে তাদের মনে কিন্তু ভীষণ প্রভাব পরবে। অফিসের কলিগরা সবাই বলেছিলো রাশেদ সাহেব ভালো করে চিন্তা করে চাকরি ছাড়বেন। বস ক্যাপ্টেন মাযহার তো ছাড়তেই চাননি। বলেছিলেন দেখুন এসব ক্ষেত্রে যা হয়, আপনি কিন্তু পারিবারিক সমর্থন পাবেন না আর তখন কিন্তু আপনার দুই দিক সামাল দেয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আপনার কিন্তু অত টাকা নেই।

মেয়েরা ভুগছে ঠিকই কিন্তু তারা অনেক কষ্টে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে আর মনি! সে তো তার পক্ষে যা সম্ভব তা তো করেছেই যা সম্ভব নয় তাও করার চেষ্টা করেছে এই সব ভাবছিলেন। এলো মেলো ভাবে কত কি আসছিলো মনে। আজ স্ত্রী সন্তান ছাড়তে হলো, সংসার ছাড়তে হলো, দেশ ছাড়তে হলো।
কিছুক্ষণ পর কোচ লন্ডনের ভিক্টোরিয়া কোচ স্টেশনে এসে দাঁড়াল। সেখানে দশ বারো জন যাত্রী উঠে যার যার সীটে বসার মিনিট চার পাঁচের মধ্যেই কোচ আবার ছেড়ে দিলো।
লন্ডন শহর পেরিয়ে মটর ওয়েতে যখন বেরিয়ে এলো তখন গাড়ির গতি দেখেই বোঝা যায় নির্বিঘ্নে কোন রকম বাঁধা হীন ভাবে এক গতিতে চলছিলো। সমস্ত গড়িতে কোন সাড়া শব্দ নেই। চুপ চাপ, শুধু গাড়ি চলার শব্দ। দুই ঘণ্টা পরে কোচ এসে অক্সফোর্ড গ্লস্টার গ্রিন কোচ স্টেশনে দাঁড়াল। কোচ থেকে নেমে মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ এদিক ওদিক তাকিয়ে তার পথের সন্ধান পেতে চেষ্টা করলেন কিন্তু ডান বাম সামনে পিছনে সবই তো তার কাছে সমান। কোন দিকে যাবে কিছুই বুঝে উঠতে পারলেন না। এখানে বেশ লোক জন যাচ্ছে আসছে দাঁড়িয়ে গল্প করছে। পাশেই কফি শপ সেখানে চা কফির সাথে নানান কিছু খাচ্ছে। তাদেরই এক জনকে জিজ্ঞেস করলো আমি আবিংডন যাবার বাস কোথায় পাব? কিন্তু সে যা বললো তা রাশেদ সাহেব কিছুই বুঝতে পারল না। হা না বলে মাথা ঝেঁকে কোন রকম তার হাত থেকে রেহাই নিয়ে মোটামুটি ওই দিকে এগিয়ে যাবার ভান করে অন্য একজনকে আবার ওই একই প্রশ্ন। এবারের লোকটা বয়স্ক। সে রাশেদ সাহেবের পা থেকে মাথা পর্যন্ত আর সাথের মালামাল গুলি দেখে বললো আস আমার সাথে।
ভারি ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে সুটকেসটা হ্যান্ডেল ধরে টেনে তার সাথে হাঁটতে হাঁটতে পিছন দিকে টার্মিনালের বাইরে এসে দাঁড়াল। লোকটা হাত দিয়ে দেখিয়ে দিল এই রাস্তাটা পার হয়ে ওই যে রাস্তা দেখা যাচ্ছে ওই খানে বাম পাশে যে গাছটা দেখছ ওখানেই বাস স্ট্যান্ড। বেশি দূরে নয়, কাছেই ৩/৪ মিনিটের পথ মাত্র। ওখানে তুমি আবিংডনের বাস পাবে। এক হাত বারিয়ে দিয়ে হ্যান্ড সেক করে অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে আবার হেঁটে গাছের নিচে এসে দাঁড়াল।

খালি হাতে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরা শ্রমিকদের দিন কাটবে কিভাবে?

সৌদি আরব সরকারের ব্যাপক ধরপাকড় অভিযানের মুখে খালি হাতে বুধবার রাতে দেশে ফিরেছেন ২১৫ জন বাংলাদেশি শ্রমিক। স্বজনদের কাছে তারা ফিরে গেছেন এক বুক হতাশা নিয়ে। জমি জমা বিক্রি করে এবং ঋণ নিয়ে তারা সৌদি আরব গিয়েছিলেন পরিবারের মুখে এক টুকরো হাসি ফোটাতে৷ অথচ সেই স্বপ্ন এখন বিরাট দুঃস্বপ্ন। এই শ্রমিকদের সামনের দিনগুলো কিভাবে কাটবে তা নিয়ে তারা দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ।তাদের চোখেমুখে রাজ্যের হতাশা।

বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম জানাচ্ছে, নভেম্বর মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে ১৫৬১ জন কর্মী দেশে ফিরেছেন। আর এ বছর সৌদি আরব থেকে ২০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন । এই শ্রমিকদের বেশিরভাগেরই আকামা অর্থাৎ কাজের অনুমতিপত্র ছিল।

কাজের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও সৌদি পুলিশ এই শ্রমিকদের গ্রেফতার করে। এরপর জেল জুলুম শেষে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।অনেকের অভিযোগ তাদের ঠিকমতো খাবারও দেয়া হয়নি। উপরন্তু মানসিক নির্যাতন করা হয়৷

ফিরে আসাদের একজন বাহার উদ্দিন। তিনি সৌদি আরবে কন্সট্রাকশনের কাজ করতেন। দীর্ঘ ২৬ বছর সেখানে ছিলেন।

এয়ারপোর্টে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “অনেক বছর সৌদি আরবে ছিলাম। জীবনে এমন পরিস্থিতি কখনো সৌদি আরবে দেখিনি। সেখানকার পুলিশ বেপরোয়া হয়ে গেছে। বৈধ-অবৈধ দেখছে না। রাস্তা থেকে ধরে সোজা জেলে। এরপর পাঠিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশে।”

ফিরে আসা শ্রমিকদের আরেকজন সিলেটের ইলিয়াস আলী। তিনি জানান,সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে সৌদি আরব যান। দালাল তাকে সেখানে ভালো কাজ পাবার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, “যে কোম্পানিতে কাজ করার কথা ছিল তাদের দেখা মেলেনি। ফলে এখানে সেখানে কাজ করেছি। আকামা হয়নি। আকামার জন্য দুই দফায় টাকা দিয়েছি ২১ হাজার রিয়াল। এরই মধ্যে মাস ছয়েক আগে ডান পা অবশ হয়ে গেল। চলাফেরা করতে পারি না। যে জায়গায় কাজ করি সেই নিয়োগকর্তা বললেন আকামা করতে ২৭ হাজার রিয়াল লাগবে। এই পা নিয়ে আমি এখানে থেকে কি করব। পরে ধরা দেই। শেষমেষ খালি হাতেই আমাকে ফিরতে হলো দেশে।”

কিশোরগঞ্জের সোহরাব পরিবারের দুঃখ দুর্দশা ঘোচাতে বছর দুয়েক আগে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে সৌদি গিয়েছিলেন।কিন্তু সাম্প্রতিক ধরপাকড়ে তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়। আসার সময় মাথায় জড়ানো মাফলার আর পরিহিত জামাকাপড় ছাড়া কিছুই সঙ্গে আনতে পারেননি। যেখানে তিনি থাকতেন সেই রুম থেকে ধরে ফেরত পাঠানো হয়।

সৌদিতে বর্তমানে এক বড় প্রতারণার নাম ফ্রি ভিসা। এর মাধ্যমে শ্রমিক বিভিন্ন সমস্যায় পড়েন এবং একসময় কূল কিনারা না পেয়ে শূন্য হাতে দেশে ফেরেন।

বছর দুয়েক আগে ফ্রি ভিসায় সৌদি আরবে গিয়েছিলেন ভোলার ফুয়াদ হোসেন। ছয় লাখ টাকা খরচ হয় তার। কিন্তু সেখানে টিকতে পারেননি। টাকার বিনিময়ে আকামার ব্যবস্থা হলেও মেয়াদ শেষে সেই অর্থ ওঠেনি। ফলে পরবর্তী আকামা হয়নি। সেখানে তিনি অবৈধ হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় কাজ করতে থাকেন এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। ফলে খালি হাতে দেশে ফিরতে হয় তাকে।

সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বলছেন, ফ্রি ভিসা মূলত একটা প্রতারণা। তার ভাষ্য – “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ফ্রি ভিসা বলতে আসলে কিছু নেই। এখানে কাজ করতে হলে আকামা থাকতে হবে এবং নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করতে হবে। এর বাইরে গেলে অবৈধ হয়ে যেতে হয়। তখন মেয়াদ থাকলেও ফেরত পাঠানো হবে।”

তার মতে ফ্রি ভিসার বিষয়টি এভাবে কাজ করে – “সৌদি আরবের কোনো ছোট কোম্পানি, তাদের সক্ষমতা নেই লোক নিয়োগের, কিন্তু সে কয়েকজন লোকের চাকরির অনুমোদন নেয়। তখন তার নামে শ্রমিকদের জন্য ভিসা ইস্যু হয়। এরপর ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আকামা নিয়ে শ্রমিকরা অন্য জায়গায় কাজ করে।”

বাংলাদেশ থেকে নতুন করে কেউ সৌদি আরব যেতে চাইলে সঠিক তথ্য জেনে বুঝে যেতে হবে,এমনটাই পরামর্শ অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস এর মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরীর ভাষ্য – শ্রমিক পাঠানোর আগে তাদের সঠিক ওরিয়েন্টেশন দরকার। ওরিয়েন্টেশনের অভাবে অনেকে ফ্রি ভিসার নামে গিয়ে বিপদে পড়ছে।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান এর মতে, শ্রমিকদের কাউকে যেন শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সেজন্য যাবার পূর্বে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত।

বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনায় সৌদি আরব বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য এক অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হতভাগ্য শ্রমিকরা সৌদি আরব গিয়েছিলেন নিজ সংসারের অভাব দূর করে স্ত্রী সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য। অথচ তারা এখন হতাশার বৃত্তে বন্দি।

যারা হতে পারতেন আশাজাগানিয়া রেমিট্যান্স যোদ্ধা তারাই আজ জানেন না সামনের দিনগুলো কিভাবে কাটবে। তাদের চোখে আজ কোন স্বপ্ন নেই,আশা নেই। যারা দেশের অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ হতে পারতেন তারাই এখন অন্ধকারে। সমাজ এবং সরকার তাদের পাশে দাঁড়ালে এই অন্ধকার কেটে যাবে। মানবিক দিক বিবেচনা করে চলুন তাদের পাশে দাঁড়াই। চলুন তাদের বলি,ভয় পেওনা,পাশে আছি। নতুন সকাল আসবেই।

মামুন রণবীর
১৫/১১/১৯

আন্ডারগ্রাউন্ড সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা

আন্ডারগ্রাউন্ড শব্দের ১৭টি বাংলা অর্থ আছে গুগল অনুবাদে। কিন্তু ১৭টি বাংলা অর্থের কোনোটাই আন্ডারগ্রাউন্ড সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার চরিত্রকে যথাযথ প্রকাশে সক্ষম নয়। আন্ডারগ্রাউন্ড শব্দটি অক্ষত রেখেই এই গোত্রের সংবাদপত্র আর সাংবাদিকতা সম্পর্কে ধারণা দিয়ে যাচ্ছি-

১.
৯০ দশকের আন্ডারগ্রাউন্ড সংবাদপত্রের চরিত্র :

১৯৯১ হতে ৯৪ সাল পর্যন্ত দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার শ্রেণিভুক্ত বিজ্ঞাপনের ‘আবশ্যক’ শ্রেণিতে প্রায় প্রতিদিন সংবাদদাতা/সাংবাদিক চাই বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হত। এসব বিজ্ঞাপনের ভাষা ছিলো অনেকটা এমন- ‘জাতীয় পর্যায়ের একটি সাহসী সংবাদপত্রের জন্য ‘নির্ভীক সাংবাদিক আবশ্যক। শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি/এইচএসসি। অভিজ্ঞতা নিষ্প্রয়োজন। প্রশিক্ষণ, পরিচয়পত্র, টেপ রেকর্ডার ও ক্যামেরা প্রদান করা হবে। পোস্ট বক্স নং *****’

সাহসী সংবাদপত্রের নির্ভীক সাংবাদিক হতে যারা আবেদন করতেন তাদের কাছে ফিরতি চিঠিতে প্রশিক্ষণ ফি, পরিচয়পত্র ফি দাবি করা হত। এই ফি প্রেরণ করলে টেপরেকর্ডার আর ক্যামেরার মূল্য চাওয়া হত। এসব ফি প্রেরণের পরে আবেদনকারীরা বুঝতে পারতেন যে ‘সাহসী সাংবাদিক’ হতে গিয়ে তারা অসহায়ভাবে প্রতারিত হয়েছেন। কারণ, পত্রিকাটি মোটেও জাতীয় পর্যায়ের নয়, দ্বিতীয়ত পত্রিকাটি নিয়মিত প্রকাশিত হয়না, তৃতীয়ত পত্রিকাটির প্রধান বাণিজ্য হচ্ছে এসএসসি-এইচএসসি অর্থাৎ ১৬ থেকে ১৮বছর বয়সীদের কাছে ‘সাহসী সাংবাদিক’-এর নিয়োগ বাণিজ্য, চতুর্থতঃ পত্রিকাটির আয়ের অন্যতম খাত হচ্ছে চাঁদাবাজী।

২.
আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার রিপোর্টার :

জাফর মীরের নাম শুনেছেন? না শুনলেও কিছু যায় আসেনা। কারণ তিনি বিশাল মাপের ক্রাইম রিপোর্টার। ভাবছেন উনি কোন পত্রিকার রিপোর্টার? পত্রিকার নামও শোনার দরকার নেই। কারণ ঐ পত্রিকার নাম পত্রিকার মালিক কাম সম্পাদক আর তার কাছের ক’জন ছাড়া কেউই শোনেন নাই। পত্রিকাটি দৈনিক হলেও মাসে হয়তো তিন চার দিন প্রিন্ট হয়। কিন্তু তার জন্য তো জাফর মীরের ‘সাহসী সাংবাদিকতা’ বন্ধ হয়ে থাকতে পারেনা।

জাফর মীর যতক্ষণ বাড়ির বাইরে থাকেন ততক্ষণ গলায় মোটা ফিতে দিয়ে সাংবাদিকের আইডি কার্ড ঝুলিয়ে রাখেন, তার মোটর সাইকেলের সামনে সাধরণের চাইতে বড় করে লিখা থাকে ‘সাংবাদিক’, তিনি থানায় ওসির রুমে সালাম দিয়ে এসে কনস্টেবলের সাথ আড্ডা দেন আর সিগারেট ফুঁকেন। এরই মাঝে থানায় দুই একটা কেসে মধ্যস্ততা করে পকেটে কিছু ভরেন। তারপর সংবাদ অর্থাৎ পার্টি খুঁজে বেড়ান। পার্টিকে সাংবাদিক আর সংবাদপত্রের শক্তি দেখিয়ে ঘটনা চেপে যাওয়ার জন্য টাকা আদায় করেন।

জাফর মীর আয়কৃত টাকার একটা অংশ পত্রিকার সম্পাদক কাম মালিককে প্রদান করেন। আর যেখানে সে নিজে ধান্ধাটা সামাল দিতে পারবেনা সেখানে সম্পাদককে পার্টনার করেন।

জানলে অবাক হবেন যে, এই গোত্রের অনেক সম্পাদক ও সাংবাদিকের নিজের বিলাসবহুল গাড়ী আছে। অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট আছে। ব্যাংক ব্যালেন্স যে আছে তা অনুমান করা যায়। প্রকৃত সাংবাদিকরা যেসব ক্ষমতাবানের কাছে সহজে পৌছতে পারেন না, সেই ক্ষমতাবান আর প্রভাবশালীদের সাথে এই গোত্রের ক’জন সম্পাদক আর সাংবাদিকদের অহরহ উঠবোস।

৩.
আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার মালিক ও সম্পাদক :

বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী এবং সেনা প্রধানের পরে যদি ক্ষমতাবান কেউ থাকেন তিনি হলেন আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার মালিক ও সম্পাদক। অধিকাংশ আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকাগুলোর ক্ষেত্রে মালিক এবং সম্পাদক একজনই। অবশ্য ব্যতিক্রমও আছে- সম্পাদকের পরে নির্বাহী সম্পাদক বা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক দিয়েও কিছু কিছু আন্ডারগ্রাউন্ড সংবাদপত্রগুলো চলে। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, একুশে টিভির প্রধান নির্বাহী ও সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, এমন কি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ও সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরীও এত প্রতিপত্তি নিয়ে চলেন না, যে প্রতাপে অধিকাংশ আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার মালিক কাম সম্পাদকরা চলাফেরা করেন।

কর্পোরেট বা সফল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার বা নিয়োগপ্রাপ্ত না হলেও এই গোত্রের পত্রিকার পেশাজীবী সম্পাদকরা অধিকাংশই নিজের গাড়িতে চেপে অফিসে আসেন। গাড়ির পিছনের ড্যাশবোর্ডে এমনভাবে নিজ পত্রিকার কয়েকটি কপি রাখেন যেন বাইরে থেকে দেখা যায়, পত্রিকার পাশেই রাখেন ক্ষমতাসীন দলের প্রধান নেত্রীর ছবি সংবলিত স্যুভেনির। নিজের ক্ষমতা বোঝাতে এই সম্পাদকদের কারো কারো গাড়ির ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড সুন্দর করে কভার দিয়ে ঢাকা থাকে সবসময়, যা কখনই খোলা হয়না। ফ্ল্যাগস্ট্যান্ড সুন্দর করে কভার দিয়ে ঢাকা আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার সম্পাদকদের গাড়ি ফকিরাপুল-সচিবালয়-মতিঝিলের পাশাপাশি অভিজাত গুলশান, বারিধারা, বনানী আর উত্তরাতেও দাপিয়ে বেড়ায়।

এই সম্পাদকদের প্রধান পেশা হচ্ছে তদবীর করা। এছাড়া বিভিন্ন ‘টার্গেট’ নির্ধারণ করে তাদের কাছ থেকে তাদের ভাষায় মোটা অংকের ‘দাও’ মারা।

৪.
ফকিরাপুল ওয়ানস্টপ সার্ভিস :

ফকিরাপুল হচ্ছে বাংলাদেশের প্রধান আন্ডারগ্রাউন্ড সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা শিল্পাঞ্চল। ফকিরাপুলেই আন্ডারগ্রাউন্ড সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা শিল্প বিকশিত হয়েছে এবং অবারিতভাবে এখনও হচ্ছে। ১২ফুট বাই ১২ফুট অর্থাৎ ১৪৪স্কোয়ার ফিটের একটি রুমে ২০টি দৈনিক পত্রিকার অফিস একমাত্র বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ফকিরাপুলেই সম্ভব। এই অফিসগুলো সবই আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার। অবশ্য, ফকিরাপুলের আশেপাশের এলাকাতেও বেশকিছু আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার অফিস আছে।

৫. এখন প্রশ্ন হলো পত্রিকাগুলোর আয়ের খাত কি?

এই পত্রিকাগুলোর প্রধান আয়ের খাত নিম্নরুপ-

ক. ব্ল্যাক মেইল
খ. তদবির
গ. ডিএফপি করা থাকলে সরকারি বিজ্ঞাপন
ঘ. বেসরকারি বিজ্ঞাপন
ঙ. প্রচার সংখ্যা বেশী দেখিয়ে সরকারি কাগজ বিক্রয় (প্রকাশিত হয় ২০০ কপি, কিন্তু প্রচার সংখ্যা দেখানো হয় ৩০,০০০ হতে ১,০০,০০০ কপি)

চ. ধান্ধা

৬.
আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকাগুলো প্রকাশিত হয় কিভাবে?*

আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকাগুলো প্রকাশের জন্য আলাদা প্রতিষ্ঠান আছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে পত্রিকার নাম এবং কোন ধরনের সংবাদ যাবে বলে দিলেই তারা চাহিদা মাফিক সংবাদপত্র ছাপিয়ে দেয়। তারাই বিভিন্ন পত্রিকা হতে সংবাদ কপি পেস্ট করে নিজেদের মত সাজিয়ে রাখে। তবে ধান্ধা সংক্রান্ত রিপোর্টগুলো লিখার জন্য আলাদা পারিশ্রমিক প্রদান করতে হয়।

৭.
আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকাগুলোর প্রচার সংখ্যা কত?*

আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকাগুলোর প্রচার সংখ্যা নূন্যতম দুইশত। এই পত্রিকাগুলো সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে এবং পত্রিকার ধান্ধা আছে এমন জায়গায় প্রেরণ করা হয়। তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এই সংখ্যা বাড়তে পারে। সাধারণতঃ কোনো আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার প্রচার সংখ্যাই ১০০০-এর উপরে নয়।

৮.
আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকা কিভাবে বের করবেন?*

প্রথমেই পত্রিকার একটি ডিক্লারেশন বের করুন অথবা ডিক্লারেশন আছে এমন একটি পত্রিকা কিনে ফেলুন। নিয়মিত প্রকাশিত হয়না এমন ডিক্লারেশন পত্রিকার অভাব নেই। সরকারি বিজ্ঞাপন পেতে এবার ডিএফপি‘র মিডিয়া লিস্টে নাম তালিকাভুক্ত করতে তিন মাস পত্রিকাটি প্রকাশ করে পৌছে দিন ডিএফপি’সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে। পত্রিকা সম্পাদনা আর সাংবাদিকতা বিষয়ে আপনার ধারণা না থাকলেও সমস্যা নেই। আপনার জন্য আছে ফকিরাপুলের ওয়ানস্টপ সার্ভিস- সম্পাদনা থেকে যথাস্থানে পত্রিকা পৌছে দিবে তারাই আর সেটাও খুব কম খরচে। সব খরচ সহ দুইশত কপি পত্রিকা ছেপে দিবে ফর্মাভেদে ২০০০ থেকে ৩৫০০টাকায় মাত্র।

৯.
প্রকাশ করবেন না কি একটা আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকা!! করবেন না কি আন্ডারগ্রাউন্ড সাংবাদিকতা!! ভেবে দেখুন, পৃথিবীর আর কোথাও পত্রিকা প্রকাশে এমন ওয়ানস্টপ সার্ভিস নেই, পত্রিকার এমন মারমার কাটকাট বাণিজ্য নেই।

মৌখিক ভাষা বনাম প্রমিত ভাষা

ভাষা সবসময় সহজবোধ্যতা দাবী করেছে। ব্রাত্য রাইসুরা সরবে প্রমিত ভাষাকে অস্বীকার করে একদমই মুখের ভাষাকে সাহিত্যের ভাষা / বই এর ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন এবং চেষ্টা করে যাচ্ছেন। লিটল ম্যাগে অনেক প্রাবন্ধিকই এই মৌখিক ভাষার ব্যবহার করেছেন। ফেসবুকেও অনেকেই সেই আন্দোলনে শরিক হয়েছেন। অনলাইন সাহিত্য পত্রিকাগুলোও ধীরে একই পথের পথিক যেনোবা।

প্রথমে অভ্যস্ত হতে কষ্টই হয় পরে ধীরে ধীরে যেনবা সয়ে যায়।
পত্রিকা বিশেষ করে দৈনিক পত্রিকার ভাষাকে, টেক্সট বই এর ভাষাকে যদি সেই আন্দোলনের শামিল করতে পারা যায় তখন সম্ভবত তারা পুরোই সফল হবেন। ভাবতে পারছিনা ইতিহাস পড়তে গেলে তখন কেমন লাগবে কিংবা বিজ্ঞান এর বইগুলোই বা কেমন লাগবে !!
শিশুদের জন্য লিখিত কবিতাগুলোর রূপই বা কেমন হবে !!
“অজগর ওই আইতাছে তাইড়া
আমটা আমি খামু পাইড়া” – ভাবলেই কেমন যেনো লাগে !!

প্রমথ চৌধুরীকেও চলিত ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যথেষ্ঠ কাঠখর পোড়াতে হয়েছে। তবে চলিত ভাষার জন্য স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়েছিল ভাগীরথী তীরের মানুষের মুখের ভাষাকে।
এই যে মৌখিক ভাষা — এর স্ট্যান্ডার্ড কোনটা ধরা হয়েছে ?
সে কি শুধু ঢাকা বা তার আশেপাশে শহুরে লোকদের মুখের ভাষাকে ধরা হচ্ছে ?

অমীমাংসিত লেফাফা ১

ছবি নেট থেকে কপি পেষ্ট

সময়ের চড়াই-উতরাইর ভাঁজে ভাঁজে নিজেকে সাজাতে সাজাতে
সময়ের গা বেয়ে উঠে আসে সর্বনাশা সময়। যতটা হলে ঠিক মানায়,
সেই গোল টেবিলে ততটা খাদ্য ভরা পাত্র রেখেও হাতে লাঠি নিয়ে
চলে লোপাট জীবন, পায়ের উপরে এখন আর সবটুকু ভরসা
করা যায় না। যদৃচ্ছায় হেঁটে বেড়ানোর স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে
ফুট মেপে কিনে দেয়া বিচিত্র বিলাসী ইট। এখন বেশ বুঝতে পারি

বয়সি বিরহ ভালোবাসার নয় নির্ভরতার, আমার বিরচিত
রামায়ণে রাম আছে, সীতা আছে, লক্ষন আছে, রাবন ও আছে
তবে তা কিনা সময় ভেদে। একদা রাম, যিনি ছিলেন
তিনিই এখন রাবন, আর সীতা হয় সূর্পনাখা। কিছুটা
ছায়াছবিতে দেখা এক নায়কের দুইটি অভিনয়ের মতো।
তবু আমরা সংসার বিয়োজন করতে পারি না, বর্তমানের
গা বেয়ে উঠা সর্বনাশা শীতল, সময়ের সাপের জন্য।
স্মৃতির হৃদয়ে বিরাজ করা চিন্তার কোষগুলো ফাঁসুরে ডাকাত হয়ে
আমার সামনে হেঁটে বেড়ায়, আমি তাকে বলতে পারিনা
দেখ এই আমি একদিন তোকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন বুনছিলাম,
স্বপ্নের গাছে পানি দিয়েছি, সার দিয়েছি, নিজের সময় নষ্ট করে
তোকে স্বপ্ন দেখা শিখিয়েছি, তোর স্বপ্ন পূরণের জন্য
নিজের স্বপ্ন বিক্রি করেছি জলের দামে ।
আসলে আমি কিছুই বলতে পারি না।
কিছু বলার মত অবস্থান আমার আর নেই
কারন আমার সরকারী পেনশনে পাওয়া অর্থগুলোর সবটুকু
স্বপ্নের হাতে তুলে দিয়েছি তাকে স্বপ্ন দেখাবো বলে আর নিজে
কিছু বয়সি স্বপ্ন বুনবো বলে। আসলেই জীবনের সাথে কড়ির সম্পর্ক
নাড়ি ছেড়া মাতৃ সর্ম্পকের থেকেও বোধকরি বেশী ।
মাঝে মাঝে নিজেকে বেশ পরজীবি কোন গুল্ম বলে ভুল করি।
কিছু পরজীবি গাছও তো ফুল ফোটায় কিন্তু আমি তো তাও পারলাম না।

___________________________________________

* আমি আমার এক বন্ধুর বাবাকে সম্মান জানানোর জন্য এই লেখাটা লিখেছি যদিও সেই বন্ধুর সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই বা করিনা আর যার জন্য লেখা তিনিও কোন দিন ব্লগ পড়ে না তবুও লেখাটা লিখতে গিয়ে আমার বুকে একটা পাথরের চাপ অনুভব করেছি কারন আমিও এক জন পিতা।

**** এটি একটি কুবিতা
কেউ কবিতা ভেবে পরলে সেই দায় পাঠকের।

হায়রে গুজব

আজবপুর ইউনিয়ন নিবাসী মর্জিনার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে। মর্জিনার পিতা বজলু মেম্বারের সাথে শত্রুতার জেরে আইডিটি হ্যাক করা হয়েছে। ওই আইডি থেকে ইনবক্স রোমান্সের যেসকল স্ক্রীনশট প্রকাশ করা হয়েছে সেসব সত্য নয়, আরজু মেম্বারের ছেলের সাথে তোলা ছবিগুলো ফটোশপে এডিট করা।

মর্জিনার পর ফেসবুক আইডি হারালেন পিতা বজলু মেম্বার। ধারণা করা হচ্ছে আরজু মেম্বারের লোকজন আইডিটি হ্যাক করতে পারে। বজলু মেম্বারের আইডি থেকে চেয়ারম্যান আক্কাস আলীর সাথে মেসেঞ্জারে অর্থ আত্মসাৎ ও চাঁদাবাজী বিষয়ক আলাপের যে স্ক্রিনশট প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। চেয়ারম্যান আক্কাস আলী ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ফেসবুকের মালিক ও আইডিকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন।

আবারও আইডি হ্যাক। ভীষমগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান আক্কাস আলীর ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে। হ্যাক হওয়া আইডি থেকে টাকা পাচার, টেন্ডারবাজী, জমি দখল ও অস্ত্রব্যবসা নিয়ে স্থানীয় এমপি’র সাথে আক্কাস আলীর মেসেঞ্জার আলাপের স্ক্রিনশট প্রকাশ করা হচ্ছে। এছাড়া আইডিতে শেয়ার করা দু’টো কল রেকর্ডে চেয়ারম্যানের সাথে চাঁদা ও জুয়ার টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে এমপি’র উত্তপ্ত কথোপকথন শোনা গেছে। চেয়ারম্যান আক্কাস আলী দাবী করেছেন এমপি’র সাথে সম্পর্ক নষ্ট করার লক্ষ্যে আইডি হ্যাক করা হয়েছে। এদিকে আক্কাস আলী নামে কাউকে চেনেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এমপি সৈয়দ মোদাব্বের খান চৌধুরী।

উপজেলা চেয়ারম্যানের আইডির পর হ্যাক হলো ভীষমগঞ্জ-খাদকপুর আসনের সাংসদ সৈয়দ মোদাব্বের খানের ফেসবুক আইডি। হ্যাকের পর ওই আইডির টাইমলাইনে সাংসদের সাথে ক’জন নারীর আপত্তিকর ভিডিও শেয়ার করা হয়। পরবর্তীতে ভিডিওগুলো মুছে দিয়ে এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সাথে আড্ডা ও মদ্যপানের ছবি শেয়ার করা হয়। এছাড়া তিনজন মন্ত্রীর সাথে তদবির বাণিজ্য ও কাজের জন্য ঘুষের রেট নির্ধারণ নিয়ে আলাপের ফোনকল রেকর্ডটি ভাইরাল হয়ে পরে। সাংসদ জানিয়েছেন এসব গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। অবশ্য, তিনজন মন্ত্রীই হ্যাকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ফটোশপে বানানো ভয়েজকল রেকর্ড দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা যাবেনা। জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে এই হ্যাকিং সংকট মোকাবেলা করবে।

দুর্বিষহ হয়ে উঠছে হ্যাকিং পরিস্থিতি। একই দিনে তিন মন্ত্রীর ফেসবুক আইডি হ্যাক করেছে দুষ্কৃতকারীরা। হ্যাক হওয়া আইডিগুলোর টাইমলাইনে শেয়ার করা হচ্ছে মন্ত্রী ও সরকারি দলের শীর্ষ নেতাদের দুর্নীতির বিবরণ। হ্যাকের শিকার হওয়া তিন মন্ত্রীই দাবি করেছেন এসব পোস্ট, মেসেঞ্জার আলাপ, ফোনকল রেকর্ড সবই ফটোশপে তৈরী করা। মন্ত্রীদের সমর্থকরা ‘ফেসবুকের ফাঁসি চাই’ ও ‘ফটোশপের ফাঁসি চাই’ শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এদিকে ‘সাপ নয়, কেঁচো খুঁড়লে বেরিয়ে পরবে বিশাল বিশাল ডায়নোসার’ বলেছেন বিশ্লেষকরা।

হ্যাকিং বিষয়ে যথাযথ তদন্ত শেষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. বায়বীয় চৌধুরী। হ্যাক হওয়া আইডিগুলোর টাইমলাইনে শেয়ার হওয়া তথ্য সত্য প্রমাণিত হলে মন্ত্রীদেরও ছাড় দেওয়া হবেনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, হ্যাকিং প্রতিরোধে ফেসবুক নিষিদ্ধ করার চিন্তা ভাবনা চলছে। সেক্ষেত্রে বিটিভি দিয়ে ফেসবুক চালানোয় কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না।

মনটা ভালো নেই

ইদানীং আমি খুব খারাপ অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। চারদিকজুড়ে শুধু শূন্যতা আর শূন্যতা। এই শূন্যতার ভেতর কোন আনন্দ নেই। শূন্যতা কেবল যন্ত্রণার মাঝেই সীমাবদ্ধ। এক আকাশ যন্ত্রনায় কাতর হয়ে আছি। কি বলবো ভাই দুনিয়ায় জুলুমের পরিমান যেই হারে বেড়েছে আমি ভয় পাচ্ছি কখন আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুতা’লার গজব এসে পড়ে!

আপনি একবার ভাবুন, যখন একজন অন্যায়কারী একজন নিরীহের ওপর জুলুম করে তখন মানুষজন সেটা মুখ বুজে দেখে যায়। এতে অন্যায়কারী আর এই সকল মানুষের মাঝে পার্থক্যটা থাকলো কি? আবার আমাদের চোখের চারপাশে যে সকল ঘটনা ঘটছে আমরা সেগুলো প্রত্যক্ষ করি; তা থেকে শিক্ষা গ্রহন করি। অর্থাৎ আমরা যখন দেখছি অন্যায়টা ঘটছে তখন আমরা ভাবি এই কাজটা না করলেই আমরা পার পেয়ে যাবো। এই শিক্ষা কোন ভালো শিক্ষা নয়। এই শিক্ষার নাম কুশিক্ষা। আবার আপনার সামনে যখন একজনের ওপর জুলুম হচ্ছে তা এক পলক দেখে আপনি কেটে পড়েন এই ভেবে যে ব্যাটা খুন হয়ে যাক তাতে আমার কি? কিন্তু আমরা ভাবি আমাদের ওপর যখন অন্যায়কারী জুলুম করবে বাকীরা এসে আমাদের রক্ষা করবে ঠিকই। এটা সুচিন্তা নয়। আজ আপনি একজন মজলুমের পাশে দাঁড়ালেন না অথচ আপনি কি করে ভাবেন কাল আপনার বিপদে অন্য একজন লোক আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে?এটা প্রমাণ করে আপনি নিজেই একজন অপরাধী। কারণ অন্যায়ের প্রতি ব্যক্তির নিষ্ক্রিয়তাই প্রমাণ করে সেও অপরাধী।

মানুষ মানে কি? যিনি বিবেকবান অথবা জ্ঞানবুদ্ধি সম্পন্ন জীব। মনুষ্যনীতির মধ্যে সর্ব প্রথম যে বিষয়টা এসে দাঁড়ায় সেটা হলো মানবতা। মানবতা থেকে আসে আত্মসম্মান পরজনের প্রতি সম্মান। আর এভাবেই আমরা মনুষ্যত্বের স্তরে পৌঁছতে পারি। এখন কি আর সেসব আছে? মানুষ হিসেবে আমরা ঠিক থাকলেও সঠিক নীতির মধ্যে কয়জনইবা স্থির আছি? সেদিন একজন শিক্ষার্থী যার নাম আবরার ফাহাদ, তিনি দেশের স্বার্থের কথা ভেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন। ফলশ্রুতিতে সম্মান দেখানো তো দূরে থাকুক, তার স্বদেশী লোকজনই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। তার ভুল শুধু এটাই ছিলো যে, তিনি স্বদেশের পক্ষে লিখেছেন যেখানে তার ও বাকীদের স্বার্থ জড়িত। আমি বিস্মিত হলাম! এ কেমন মানুষ তারা? কি তাদের বিচারবুদ্ধি! আমি বেদনাসিক্ত। কতটা নির্বোধ কতটা হীনমন সম্পন্ন হলে তারা একাজ করতে পারে! তাদের পরিবারের মুখে থুঃ। পরিবারের কথা আসে। কারণ পরিবার তাদের প্রশ্রয় দিয়েছে। সেটা হোক প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে।

আবরার হত্যাকারীদের একজন হলেন মুন্না। মুন্নার মায়ের দাবী তার ছেলে একাজে জড়িত নন। তার দাবী মুন্নাকে ফাঁসানো হয়েছে। আসলে প্রতিটি মা’ই মনে করেন তাদের সন্তান কোন অপরাধ করতে পারেন না। প্রশ্ন থেকে যায় তাহলে দুনিয়ার কোন মানুষটা অপরাধী? আমি তো মনে করি কোন মানুষই অপরাধী না। কারণ প্রত্যেক অপরাধীর মায়েদের দাবী তাদের সন্তান অপরাধী নন। আসলে মায়েরা এ সকল কথা আবেগ থেকে বলেন। সন্তান যতই বড় হোক তাদের কাছে সন্তান মানে সদ্য জন্ম নেয়া সেই ছোট্ট শিশুটি। তারা এ কথা ভাবতেই চান না যে ছোট্ট সন্তান বড় হয়ে যায় এবং বড় হওয়ার সাথে সাথে সন্তান আগের মত নিষ্পাপ থাকে না। তখন ভালো-মন্দ বিচার করার মত গুনাবলী অর্জন করে সে। অতঃপর যে কোন এক পথে সে নিজেকে পরিচালিত করে।

এ সকল মাকে বোঝাতে হবে, সন্তানের পাশাপাশি তারা নিজেরাও একেকজন অপরাধী। এই জন্য নয় যে সন্তানকে জন্ম দিয়েছেন এই জন্যই যে অপরাধীর পক্ষে অবস্থান করছেন ইচ্ছে করেই। হ্যাঁ আমি কিন্তু অবাস্তব কিছু বলছি না। মনে আছে সেই ফাতেমা (রাঃ) এর কথা। যিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহ’ম্মদ (সঃ) এর কন্যা, কলিজার টুকরা। মহানবী (সঃ) তার মেয়ে সম্পর্কে বলেছেন যদি ফাতেমা (রাঃ) চুরি করেন তবে তিনি তার কন্যার হাত কেটে ফেলবেন। মনে আছে কি সেই ওমর ইবনে খত্তাব (রাঃ) এর কথা, যিনি মদ্যপানের অভিযোগে নিজেই সন্তানকে বেত্রাঘাত করেছেন কোন মায়া দয়া ছাড়াই? প্রতিটি মায়েরই উচিৎ এই সকল মহামানবদের অনুসরন করা। সন্তান যেমনই হোক অপরাধ করলে নিজেদের অবস্থান হকের পক্ষে শক্ত রাখা। আমাদের মনে রাখা উচিৎ,আমাদের নিজেদের সন্তানের প্রতি যেমন ভালোবাসা আছে তেমনি বাকীদেরও।

এখন কথা হলো, আবরার ফাহাদ যাদের দ্বারা নিহত হলেন তাদের তো অনুভূতি শূন্য। তারা যে কাজ করেছেন সেটা অত্যন্ত ঘৃণিত। এই জন্য তাদের শাস্তি দিতে হবে। তবে বরাবরের মতো প্রশ্ন রয়েই যায় কে তাদের শাস্তি দিবে? আদৌ কি আবরারের পরিবার সঠিক বিচার পাবেন? জাতিসংঘের একজন মহিলা কর্মী বলেছেন, আমি একজন মা হিসেবে সন্তান হত্যাকারীদের শাস্তি চাই, বাংলাদেশী কয়েকজন মহিলা বলেছেন তারা মা হিসেবে শাস্তি চান। আবার আরেকজন বললেন, মা হিসেবে আমি এই শাস্তি নিশ্চিত করবো। প্রশ্ন হলো বিচারের ক্ষেত্রে “মা হিসেবে” এই শব্দটা আসবে কেন? আপনি কি কারো প্রতি করুণা করতে চাচ্ছেন নাকি সংবিধান বাস্তবায়ন করতে চাইছেন? একটা দেশে সংবিধানিকভাবে বিচার নিশ্চিত করতে হয়। এই বিচারের ক্ষেত্রে মা-বাবার হিসেব আসবেই বা কেন? আমি মনে করি এটা বাড়াবাড়ি। বলা উচিৎ একজন নাগরিক হিসেবে উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রত্যেকের বাংলাদেশ সংবিধান অনুসারে সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। আমি একজন রাষ্ট্রনেতা হিসেবে, বিচারক হিসেবে সংবিধান অনুসারে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবো। আপনাকে মনে রাখতে হবে রাসূল (সঃ) এবং ওমর (রাঃ) তারা কিন্তু বাবা হিসেবে নয় বরং বিচারক হিসেবে আল্লাহর সংবিধান বাস্তবায়ন করেছেন। আপনার উচিৎ তাদের পূর্ণরূপে অনুসরন করা।

মনে রাখতে হবে আইন করুণার ওপর চালানো যায় না, আইনকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হয়। যদি এটা নিশ্চিত করা যায় তবেই একটা সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।

হে বারী

সুবেহ ঘনাবার আর কত দেরী, হে বারী?
আমার চারদিক জুড়ে নিকষ কালো আঁধার!
আমি আঁধারের বুকে মার্তন্ড দেখি ভুলে।

হে বারী, আমার আসমান ভরা কালোমেঘ।
যতদূর যায় দু’চোখ বুকফাটা হাহাকার দেখি,
আহ! আমার গাল বেয়ে ঝরে পড়ে অশ্রুরা।
আমি অতিশয় দুর্বল না কিছু করিবার পারি।
হে বারী, আমি না কিছু করিবার পারি।

যবে দেখি বীরবল বিনাদোষে পরাভূত হয়
শিশুর নিথর কায়া মলিন স্তূপে পড়ে রয়,
যবে নিরীহ শিশু-মা-বোনেরা হয় বখাটের বলী
আমি বুক চিরে কাঁদি, হে বারী?
না কিছু করিবার পারি।

যবে আমার যুবক ভাই লড়ে হীনতার প্রতিকূলে,
নৃশংসতা দূরীকরণে তুফান গড়ে তোলে,
তব এক দরিয়া কালোমেঘ এসে পড়ে,
আমি হতাশায় ভাসি, হে বারী।
না কিছু করিবার পারি।

আর কত কালোমেঘ, বীভৎস হুঙ্কার?
আর কত দেখবো নিরীহের চিৎকার?
এভাবে আর কত বল না, হে বারী?
আর কত খোয়াবো রঙ্গিন খা’ব?
আমি এক অকৃতজ্ঞ জাতি!

তুমি তো মেহেরবান-দয়ালু, হে বারী,
এবার দাও না গো রহমতের দ্বার খুলি।
আমি হৃদয় ছোঁয়া শ্বাস নেব মনুষ্যত্ব হেরি।

আর যদি না দাও তবে কেউ নেই,
যে এনে দিবে ক্ষণিক রশ্মি এই অসভ্যতা জুড়ি।
আমি এক অকৃতজ্ঞ নাফরমান শুধু একটাই দাবী
ওগো এবার একটু রহম করোনা, হে বারী!

ফেসবুকে সম্পর্ক সেটিং নেই কেন? থাকলে ভালো হতো!

ফেসবুকে Sing Up (সাইন আপ) করার সময় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অনেকগুলো অপশন রেখেছে। যেমন–প্রথম নাম (নামের প্রথম শব্দ) শেষ নাম (নামের শেষ শব্দ) সময়তে মাধ্যম নামও সংযোজন করতে হয়। দিতে হয় ফোন নাম্বার বা ই-মেইল এড্রেস। বয়স কত, তাও দিতে হয়। পাসওয়ার্ড কনফার্ম করতে হয়। সবকিছু ঠিকঠাক হলে, ছবি আপলোড নিজের ইচ্ছার উপর ফেসবুক ছেড়ে দেয়। হয়ে গেল ফেসবুকে রেজিস্ট্রেশন করা বা একাউন্ট খোলা বা আইডি খোলা। এরপর আসে প্রোফাইল সেটিং। প্রোফাইল সেটিঙে অনেকগুলো অপশন থাকে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, স্কুল-কলেজের নাম ও লোকেশন, বৈবাহিক সম্পর্কিত বর্ণনা সহ অনেক অনেক অপশন। তাও নিজের ইচ্ছার উপর থাকে। তাই কেউ সম্পাদন করে, কেউ করে না। শুরু হয় বন্ধু বেছে নেওয়ার পালা। যাকে রিকুয়েস্ট পাঠাচ্ছে, সে ইচ্ছে করলে একসেপ্ট করতে পারে, না-ও করতে পারে। কিন্তু দুঃখের বিষয় দুঃখের সাথে বলতে হয়, ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট প্রেরণ অথবা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোনও Relationship setting (সম্পর্ক সেটিং) অপশন রাখা হয়নি। যার কারণে অনেকসময় নিজের অজান্তে লজ্জা পেতে হয়। আফসোস এখানেই!

আমার ফ্রেন্ড লিস্টে আমার বংশগত অনেক আত্মীয়স্বজন আছে। মেয়ের বাড়ির সম্পর্কিত আছে। আরও আছে শ্বশুর বাড়ির সম্পর্কিত অনেকেই। কিন্তু আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনকে তো কেউ চেনে? এই বন্ধুটি আমার কী হয়, ওই বন্ধুটি আমার কী হয়? মনে হয় কেউ কারোর সম্পর্ক নিয়ে বেশি একটা ভাবেও না! তবে কে কার সম্পর্কে কী হয়, জানা থাকলে কি ভালো হয় না? মনে হয় ভালোই হতো। ভালো হতো এই কারণে যে, আমার সাথে কার কী সম্পর্ক, তা অন্যসব বন্ধুরা বলতে পারতো। আমিও অন্যসব বন্ধুদের ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা বন্ধুদের সঙ্গে কে কার কীরকম ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং আমার সাথে তাঁদের কী সম্পর্ক হতে পারে তা জানতে পারতাম। কিন্তু ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট বা একসেপ্টে Relationship setting (সম্পর্ক সেটিং) না থাকার কারণে তা আর জানা সম্ভব হচ্ছে না। যার কারণে অনেক সময় অনেকের পোস্টে মন্তব্য দিতে গিয়ে বেধে যায় খটকা।

সে-দিন এক বন্ধুর প্রেমময় এক পোস্টে মন্তব্য করে পড়েছি বিপাকে। বন্ধুটি শুধু ফেসবুক বন্ধুই নয়, বন্ধুটি ছিল ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মধ্যে একজন। সম্পর্কে ছিল ভাতিজা। প্রেমময় পোস্টে লেখা ছিল, “প্রথম দেখার পর থেকে তোমাকে শুধুই মনে পড়ে।” আমি লাইক ♥ দিয়ে মন্তব্যে লিখলাম, “দেখা হলে বুকে টেনে নিয়েন দাদা।” কিছুক্ষণ পরই মেসেজ। কাকা কেমন আছেন? অবাক হলাম! কিছুক্ষণ আগে তো উনার পোস্টে মন্তব্য করেছি দাদা সম্বোধন করে। এখন উনার মেসেজ বার্তায় আমাকে সম্বোধন করছে কাকা বলে। রাগ হলাম। আবার ভাবতেও লাগলাম! আচ্ছা, এতে ভাবার বিষয় নয় কি? অবশ্যই ভাবার বিষয় এবং লজ্জারও বিষয়। তারপরও কী আর করা! নিজের লজ্জার মাথা খেয়ে কিছুক্ষণ পর ভেবেচিন্তে রিপ্লাই করলাম, ‘ভালো আছি। তো আপনি কেমন আছেন?’ উত্তর পেলাম, আমিও ভালো আছি। কাকা, আমি আপনার ভাতিজা এমুক।”

এতক্ষণে চিনেছি আমার এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ভাতিজা। তবে ফেসবুক প্রোফাইল ছবিটা ছিল তাল গাছের। আর নামটা ছিল ছদ্মনাম, “আগাছা”। তাহলে চিনবো কেমন করে? চিনতে না পেরেই তো ওঁর পোস্টের মন্তব্যে বন্ধু-বান্ধবের পোস্টের মত মন্তব্য করেছিলাম। এখন নিজের কাছে খুবই লজ্জাবোধ হচ্ছে। ফের ওঁর ওই পোস্টে গিয়ে মন্তব্য সম্পাদন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তা আর করতে পারিনি। ভাতিজাও লজ্জায় পড়ে ওঁর করা পোস্ট মুছে ফেলেছে। এরপর একদিন ঐ ভাতিজার সাথে দেখা। ভাতিজাকে দেখেই আমি চিনতে পেরেছি। কিন্তু কিছুই বলছিলাম না। ভাতিজা আমাকে দেখে লজ্জায় মাথা নিচু করে অন্যদিকে কেটে গেল।

আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে শুধু ও-ই নয়, ওঁর মতো এমন ভাতিজা আমার ফ্রেন্ড লিস্টে আরও কয়েকজন আছে। ওঁরা আমাকে খুবই সম্মান করে। ফেসবুকে সময় সময় ওঁরা ওঁদের মনের কথা লিখে পোস্ট করে। কেউ ভালোবাসার কথা লিখে পোস্ট করে, “আজ তোমাকে খুবই মনে পড়ছে প্রিয়ে”। ওঁদের সেই মাখামাখি পোস্টগুলো আমার চোখে পড়লে আমি যেমন লজ্জা পেয়ে থাকি, ওঁরাও মনে হয় তেমনই লজ্জা পায়। সে-কারণে আমি নিজে থেকে আমার অনেক ঘনিষ্ঠ কনিষ্ঠ ভাই ভাতিজাকে ব্লক করে রেখেছি। যাতে ওঁরা আমার করা পোস্টগুলো না দেখে, ওঁদের মনের কথা ভালোবাসার কথার পোস্টও আমি যেন না দেখি। শরম লাগে। লজ্জা লাগে। ব্লক করে রেখেছি বলে খারাপও লাগে। তারপরও তা-ই করতে বাধ্য হয়েছি। আমার বক্তব্য হলো, ওঁদের প্রেম ভালোবাসার কথা আমি কেন জানবে? ওঁদের টেম্পোরারি প্রেমিকার ছবি আমি কেন দেখবো? তাই নিজে থেকেই ওঁদের ব্লক করে রেখেছি, যাতে ওঁরা আমার সামনা-সামনি হলে লজ্জা না পায়। ওঁদের দেখলে আমিও যাতে লজ্জায় না পরি। ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে ব্লক করার উদ্দেশ্য হলো এটাই।

ব্লক করার দরকারই ছিল না। যদি রিকুয়েস্ট একসেপ্টের বেলায় Relationship setting (সম্পর্ক সেটিং) অপশান থাকতো। তাহলে রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করার সময়ই দেখতে পেতাম, রিকুয়েস্ট প্রেরণকারী আমার সম্পর্কে কী হয়। তখন আমি ওঁদের রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করতাম, নাহয় করতাম না। ওঁরা ওঁদেরভাবে থাকতো, আমি আমার ভাব নিয়ে থাকতাম। কিন্তু তা আর আপোষে বুঝে শুনে হচ্ছে না। ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট একসেন্ট করার পর আবার ব্লক করে রাখতে হচ্ছে।

হয়তো অনেকেই বলতে পারে যে, তাহলে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট করার সময় কীভাবে করলেন? আর করার পর কীভাবে জানলেন যে, রিকুয়েস্ট প্রেরণকারী আপনার ছোটভাই কিম্বা ভাতিজা?’ তাহলে বলতে হয় কীভাবে রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করেছি। ফেসবুকে একাউন্ট খোলার পর অনেকেই নিজের আসল ছবিটা প্রোফাইলে আপলোড করে না। অনেকেরই প্রোফাইল ছবি থাকে ভুয়া ছবি। হয়তো কলা গাছের ছবি, নাহয় আম গাছের ছবি, নাহয় তাল গাছের ছবি। নামও থাকে ছদ্মনাম, পরগাছা নাহয় আগাছা অথবা বাগিচা। তাহলে কীভাবে বোঝা যায় রিকুয়েস্ট প্রেরণকারী আমার ঘনিষ্ঠ পরিচিত ভাই- ভাতিজা? বোঝা বড় মুশকিল! আবার ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট না করলেও, অনেকে অহংকারী মনে করে থাকে। তাই ভুল করেই অনেক পরিচিত ভাই ভাতিজাদের রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করে ফেলা হয়। পর মুহূর্তে মন্তব্যের ছোট বক্সে উপরোল্লিখিত মন্তব্যের মতো আহাম্মক সাজতে হয়। মন্তব্য করে লজ্জা পেতে হয়। এরপর মেসেঞ্জারের মেসেজের মাধ্যমে জানতে হয় বা জানানো হয়, কাকা আমি এমুকে বা ওমুকে। নাম তপন, নাহয় স্বপন। তখন আর কী করা যায়? নিরুপায় হয়ে বাধ্যতামূলক ফ্রেন্ড লিস্টে রাখা হয়। নাহয় ব্লকে ফেলা হয়।

তাই বলছিলাম কি, ফেসবুকে এই ঝামেলা এড়ানোর জন্য Relationship setting (সম্পর্ক সেটিং) থাকলে মনে হয় ভালো হতো। যেমন–যাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠানো হচ্ছে, তাঁর সাথে রিকুয়েস্ট পাঠানো ব্যক্তি সাথে সম্পর্ক কী? এরপর যিনি রিকুয়েস্ট গ্রহণ করবেন, তিনি রিকুয়েস্ট পাঠানো ব্যক্তির সম্পর্কিত তথ্যটি সঠিক কিনা তা বিবেচনায় নিতে পারবেন। যদি রিকুয়েস্ট প্রেরণকারী সম্পর্ক Mother চিহ্নিত করে, রিকুয়েস্ট গ্রহণকারীও চিহ্নিত করতে হবে Boy অথবা son-এ। তাই এখানে এই শব্দগুলো রাখা যেতে পারে যেমন–Mother, father, brother, wife, Husband, sister, Boy, son, uncle, aunt, grandfather, Grandma’ ইত্যাদি সহ আরও অনেক সম্পর্ক। আর নিজ প্রোফাইল ভাষা সেটিং তো আছেই। বাংলা হলে বাংলা, ইংরেজি হলে ইংরেজি।

এসব সম্পর্কিত অপশনগুলো যদি দেওয়া থাকতো, তবে আমার ছেলে যদি আমাকে রিকুয়েস্ট পাঠাতো, আমি ইচ্ছে করলে একসেপ্ট করতাম, নাহয় বাদ দিতাম। বাদ দিতাম শরম এড়ানোর জন্য। বাদ দিতাম এই কারণে, ছেলেকে ছেলেরটা নিয়ে থাকতে দেওয়া। আর আমি থাকি আমার ভাবেই। এ ছাড়াও আমার ছেলে যদি আমার এক বন্ধুকে রিকুয়েস্ট পাঠাতো, আমার বন্ধুটি অনায়াসে চিনে নিতে পারতো যে রিকুয়েস্ট প্রেরণকারী এক বন্ধুর ছেলে কিম্বা মেয়ে। তাহলে রিকুয়েস্ট গ্রহণকারীও বন্ধুর পরিচিতদের সেই সম্পর্কিত অপশনেই রেখে দিতে পারতো। কিন্তু দুঃখের বিষয় ওইসব অপশন ফেসবুকে নেই বা থাকবেও না। আছে শুধু Friend ফ্রেন্ড। মানে সবাই ফ্রেন্ড।

তাই এখন বাপও ছেলের বন্ধু, ছেলেও বাপের বন্ধু। মা ছেলের বন্ধু, ছেলেও মায়ের বন্ধু। চাচা ভাতিজার বন্ধু, ভাতিজাও চাচার বন্ধু। মোটকথা সবাই সবার বন্ধু। আর আমরা যাঁরা ফেসবুকে আছি, আমাদের উঠতি বয়সের ভাই ভাতিজারা প্রেমিকার গলা জাবড়ানো ছবি দেখে লাইক/কমেন্ট করতে থাকি। যেমন: আমি আমার এক আদরের ভাতিজাকে ব্লক করে দিয়েছি, শরম থেকে রক্ষা পাবার জন্য। তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অজস্র ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এ-কারণে যে, ফেসবুকে কেউ কারোর ছোট বড় নয়, সবাই সবার সমান। মানে ফেসবুকে সবার সমান অধিকার। সবাই সবার বন্ধু। ছেলেও তো বাপের বন্ধুর মতোই হয়ে থাকে। জিন্দাবাদ ফেসবুক বন্ধুগণ। জিন্দাবাদ ফেসবুক। জয়তু ফেসবুক।

পরিবেশ দূষণ

নিঃসীম নীল আকাশ রয়েছে মহাশূন্যে ভাসি।
তারই প্রতিবেশী গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র ভেলার মত চলছে ভাসি।
কি আকর্ষনে চলছে, য়ে যার পথে স্রষ্টার অপার দান।
সৃষ্টির তা বুঝাও দায়, দেবে থাক প্রতিদান।
প্রকৃতিকে নষ্ট করছে মানুষ নানা উপায়ে।
নিজের অজান্তেই মারছে কুঠার নিজেরই পায়ে।
আকাশ, বাতাস, মাটি, পানি বিষাক্ত করে তুলছে।
গ্রীন হাউস গ্যাস আজ পৃথিবীর বুকে এসে পড়ছে।
আধুনিকতা সুখ সাচ্ছন্দ ভালো, এতো নয় যে, মৃত্যুর কারন হবে।
গাছ পালা পশু পাখি সব বিলীন হয়ে যাবে।
সময় থাকতে সচেতন হওয়া সবার প্রয়োজন।
সুস্হ পৃথিবী যেনো পেতে পারে,পরবর্তী জেনারেশন।